৩৩ বছর পর জাপানে সর্ববৃহৎ মজুরি বৃদ্ধির ঘোষণা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিতে আসতে পারে পরিবর্তন

আন্তর্জাতিক

রয়টার্স
15 March, 2024, 09:05 pm
Last modified: 15 March, 2024, 10:28 pm
ইউনিয়ন ও কোম্পানিগুলোর মধ্যে দীর্ঘ আলোচনার পর গত বুধবার (১৩ মার্চ) বিশ্বের সর্ববৃহৎ গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টয়োটা মোটর এর কারখানার কর্মীদের বিগত ২৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মজুরি বাড়াতে রাজি হয়। এছাড়া প্যানাসনিক, নিপ্পন স্টিল, নিসান-এর মতো বৃহৎ জাপানি কোম্পানিগুলোও ইউনিয়নগুলোর মজুরি বৃদ্ধির দাবি মেনে নিতে রাজি হয়েছে।
জাপানের একটি কারখানার সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন একজন কর্মী। ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬। প্রতীকী ছবি: রয়টার্স/তোরু হানাই/ফাইল ছবি

জাপানের সর্ববৃহৎ ইউনিয়ন গ্রুপ শুক্রবার (১৫ মার্চ) জানিয়েছে, দেশটির বড় কোম্পানিগুলো এ বছর তাদের কর্মীদের জন্য গত ৩৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ৫ দশমিক ২৮ শতাংশ মজুরি বাড়াতে রাজি হয়েছে।

বড় কোম্পানিগুলোর এমন সিদ্ধান্তের ফলে জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক দীর্ঘ এক দশক ধরে দেওয়া প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে বেরিয়ে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছে এটি।

এ মজুরি বৃদ্ধি প্রত্যাশার চেয়ে বেশি বলে বিবেচিত হচ্ছে। ব্যাংক অব জাপান বর্তমানে এর আট বছর ধরে চলা নেতিবাচক নীতি সুদহার বন্ধ করবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। আগামী ১৮–১৯ মার্চ এটির নীতিনির্ধারণী বৈঠক হবে।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদাও চাচ্ছেন, দীর্ঘ কয়েক বছরের মুদ্রা সংকোচন ঝেড়ে ফেলতে এবং যৎসামান্য মজুরি বাড়ানোর প্রবণতায় ইতি টানতে জাপানের কোম্পানিগুলো তাদের কর্মীদের মজুরি বাড়াক।

ইউনিয়ন ও কোম্পানিগুলোর মধ্যে দীর্ঘ আলোচনার পর গত বুধবার (১৩ মার্চ) বিশ্বের সর্ববৃহৎ গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টয়োটা মোটর এর কারখানার কর্মীদের বিগত ২৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মজুরি বাড়াতে রাজি হয়। এছাড়া প্যানাসনিক, নিপ্পন স্টিল, নিসান-এর মতো বৃহৎ জাপানি কোম্পানিগুলোও ইউনিয়নগুলোর মজুরি বৃদ্ধির দাবি মেনে নিতে রাজি হয়েছে।

নীতিনির্ধারকেরা আশা করছেন, এ মজুরি বৃদ্ধির ফলে জাপানে পারিবারিক পর্যায়ে ব্যয়ের হার বাড়বে এবং ফলে সামষ্টিক অর্থনীতিতেও প্রবৃদ্ধি দেখা যাবে। গত বছর দেশটির অর্থনীতি প্রায় মন্দার মুখে পড়েছিল।

ইটোচু ইকোনমিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এর অর্থনীতিবিদ মো নাকাহামা বলেন, 'আমার ধারণা করছি, এ বছর মজুরিবৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ৩ শতাংশে পৌঁছাবে। এ হার বাস্তবায়িত হলে প্রকৃত মজুরি এ বছরের এপ্রিল–জুনে ইতিবাচক ধারায় ফিরবে।'

দ্য জাপানিজ ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশন ওরফে রেংগো'র প্রধান তোমোকো ইওশিনো এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মজুরির এ বড় বৃদ্ধির পেছনে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে দেশটির অব্যাহত আয় বৈষম্য, মূল্যস্ফীতি ও শ্রমশক্তির ঘাটতি ইত্যাদি।

চলমান অর্থবছরে জাপানের খণ্ডকালীন কর্মীদের মজুরি ৬ শতাংশ বাড়বে বলেও জানান ইওশিনো। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ার এক গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে আছে জাপান।

বড় কোম্পানিগুলোর এ মজুরিবৃদ্ধির সিদ্ধান্তের প্রভাব জাপানের ছোট ও মাঝারি আকৃতির প্রতিষ্ঠানগুলোতেও পড়বে বলে আশা করছে সরকার।

তবে বেশিরভাগ ছোট কোম্পানি তাদের কর্মীদের মজুরি কত বাড়াবে তা নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে। এর সিদ্ধান্ত মার্চের শেষ নাগাদ জানা যেতে পারে। ছোট কোম্পানিগুলো মজুরি বৃদ্ধি করলেও তা বড় কোম্পানিগুলোর প্রতিশ্রুত বৃদ্ধির চেয়ে কমই হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অবশ্য জাপানি কোম্পানিগুলো নিয়মিত তাদের কর্মীদের মজুরি বৃদ্ধি করলেও তা দেশটির চলমান মূল্যস্ফীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারছে না। ফলে গত ২২ মাস ধরে মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয়ের পর দেশটির মানুষের প্রকৃত আয় পতনমুখী রয়েছে।

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.