যুদ্ধবিরতির আলোচনায় প্রতিনিধি দল পাঠাল না ইসরায়েল, চুক্তি ছাড়াই কায়রো ত্যাগ হামাসের

আন্তর্জাতিক

বিবিসি
07 March, 2024, 11:00 pm
Last modified: 07 March, 2024, 11:02 pm
মিশরের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন টিভি চ্যানেল আল-কাহেরা একটি ঊর্ধ্বতন সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহে আবার আলোচনা শুরু হবে।

বহু জল্পনা-কল্পনার পরে অবশেষে গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি ছাড়াই কায়রো ছেড়েছেন হামাসের একটি প্রতিনিধি দল।

তবে হামাস জানিয়েছে, ইসরায়েলের সঙ্গে তাদের পরোক্ষ আলোচনা শেষ হয়নি।

কায়রোতে হামাস, মিশর ও কাতারের কর্মকর্তাদের মধ্যে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা হলেও কোনো অগ্রগতির ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।

তবে ইসরায়েল কায়রোতে কোনো প্রতিনিধি দল পাঠায়নি।

ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা প্রথমে বেঁচে থাকা জিম্মিদের তালিকা চায়, যাদের এই চুক্তির অধীনে মুক্তি দেওয়া যেতে পারে।

অন্যদিকে, হামাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ওসামা হামদান বলেছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতির পরই কেবল ফিলিস্তিনি বন্দি ও ইসরায়েলি জিম্মি বিনিময় ঘটতে পারে।

হামাস জানিয়েছে, বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের তাদের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার দাবি এবং গাজার শহরগুলো থেকে ইসরায়েলি বাহিনী পুরোপুরি প্রত্যাহারের দাবি ইসরায়েল মেনে নেয়নি।

ইসরায়েলি হিসাব অনুযায়ী, গত ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে প্রায় ১২০০ জনকে হত্যা ও ২৫৩ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়।

জবাবে গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল।

এরপর থেকে গাজায় ৩০ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

হামাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'হামাসের প্রতিনিধি দল আন্দোলনকারী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পরামর্শের জন্য বৃহস্পতিবার সকালে কায়রো ত্যাগ করেছে। আগ্রাসন বন্ধ, বাস্তুচ্যুতদের ফিরিয়ে আনা এবং আমাদের জনগণের জন্য ত্রাণ সহায়তা আনার জন্য আলোচনা ও প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।'

মিশরের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন টিভি চ্যানেল আল-কাহেরা একটি ঊর্ধ্বতন সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহে আবার আলোচনা শুরু হবে।

এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ইসরায়েল সরকারের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা বিশ্বাস করে যে বাধা সৃষ্টি হয়েছে তা 'অনতিক্রম্য নয় এবং একটি চুক্তিতে পৌঁছানো যেতে পারে'।

প্রস্তাবিত চুক্তিতে ইসরায়েলের কারাগার থেকে প্রায় ১০ গুণ বেশি ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তির বিনিময়ে ৪০ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

এখনও ১৩০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি জিম্মি হামাসের হাতে বন্দি রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।  তাদের মধ্যে অন্তত ৩০ জন মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা।

অন্যদিকে, দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা জোরদার হওয়ার ফলে আন্তর্জাতিক চাপ আরও বেড়েছে।

প্রস্তাবিত ৪০ দিনের যুদ্ধবিরতির সময় গাজায় প্রয়োজনীয় ত্রাণ প্রবেশের পরিমাণ বাড়বে।

নভেম্বরের শেষের দিকে সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতির সময়, ২৪০ ফিলিস্তিনি বন্দির বিনিময়ে ১০৫ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেয় হামাস। 

আশা করা হচ্ছিল, রমজান মাস শুরু হলে ৪০ দিনের যুদ্ধবিরতি হতে পারে। নতুন চুক্তি ছাড়া, রমজান মাসে উত্তেজনা আরও ছড়িয়ে পড়ার মারাত্মক হুমকি রয়েছে।

চন্দ্রমাস অনুযায়ী আগামী রবিবার বা সোমবার থেকে রমজান মাস শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

এদিকে, গাজায় অনাহারে আরও মৃত্যুর খবরের মধ্যে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র ত্রাণের প্রবাহ বাড়ানোর জন্য ইসরায়েলকে চাপ দিচ্ছে। 

অন্যদিকে, ইসরায়েল ত্রাণ বিতরণ সমস্যার জন্য জাতিসংঘকে দায়ী করছে।
 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.