মুকেশ আম্বানি কীভাবে এত ধনী হলেন?

আন্তর্জাতিক

দ্য নিউজ
06 March, 2024, 10:10 am
Last modified: 06 March, 2024, 11:56 am
১৯৯০-এর দশকে মুকেশ রিলায়েন্স কোম্পানিকে পেট্রোকেমিক্যাল এবং পরিশোধন ব্যবসার দিকে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপক অবদান রেখেছেন। ২০০০ সালের দিকে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ খুচরা বাজার ও টেলিকম বাণিজ্যে প্রবেশ করে।

১৯৫৭ সালের ১৯ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করা ভারতীয় ধনকুবের মুকেশ ধীরুভাই আম্বানি বর্তমানে প্রায় ১১৬ বিলিয়ন ডলার সম্পদের মালিক। ফোর্বসের ধনীদের তালিকায় আম্বানি বিশ্বের ১১তম এবং ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি।

কিছুদিন যাবত আম্বানি পরিবার তাদের কনিষ্ঠ পুত্র অনন্ত আম্বানি এবং রাধিকা মার্চেন্টের প্রাক-বিবাহ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বেশ আলোচিত হচ্ছেন। সংবাদপত্রের শিরোনামে উঠে আসছে এই অনুষ্ঠানের একের পর এক চমকপ্রদ তথ্য। 

বর্তমানে মুকেশ আম্বানি বিশ্বের এক গুরুত্বপূর্ণ নাম। ফিন ক্যাশের প্রতিবেদনে আম্বানি পরিবারের নামি দামি গাড়ি, ২৭ তলা আকাশচুম্বী বাড়ি সর্বোপরি বিলাসবহুল জীবনযাত্রার চিত্র ফুটে উঠেছে।

মুকেশ আম্বানি কীভাবে ধনী হয়ে উঠলেন?

ধীরুভাইয়ের বড় ছেলে মুকেশ ২০ বছর বয়সে তার ছোট ভাই অনিলের সাথে তার বাবার সুতা ও মশলার ব্যবসায় যোগ দেন। পরবর্তীতে তিনি টেক্সটাইল এবং কাপড় তৈরির কৌশল রপ্ত  করে ফেলেন। একইসাথে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ নামে একটি নতুন কোম্পানিরও খোঁজ পান তিনি।

মুকেশ আম্বানির পরিবার; ছবি: আজটাক টিভি

১৯৯০-এর দশকে মুকেশ রিলায়েন্স কোম্পানিকে পেট্রোকেমিক্যাল এবং পরিশোধন ব্যবসার দিকে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপক অবদান রেখেছেন। ২০০০ সালের দিকে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ খুচরা বাজার ও টেলিকম বাণিজ্যে প্রবেশ করে। পটলগঙ্গায় রিলায়েন্সের প্রথম উল্লেখযোগ্য উৎপাদন প্রকল্প এবং জামনগরে বিশ্বের বৃহত্তম পরিশোধন কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠায় এই ধনকুবেরের অবদান উল্লেখযোগ্য। 

২০০২ সালে মারা যান ধীরুভাই। এর পরেই মুকেশ ও অনিল দুইভাই সম্পত্তি নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। ধীরুভাই কোন উইল না করে যাওয়ায় সম্পত্তি নিয়ে দুই ভাইয়ের এই ঝামেলা চলেছিল প্রায় ১০ বছর। অবশেষে তাদের মা কোকিলা এই বিবাদ মেটাতে এগিয়ে আসে।

মা অনিলকে বিদ্যুৎ, আর্থিক পরিষেবা এবং টেলিকম বাণিজ্য দেন, যার মূল্য সেই সময়ে প্রায় ২৫,০০০ কোটি টাকারও বেশি ছিল। এদিকে টেক্সটাইল, তেল ও গ্যাস, পেট্রোকেমিক্যালস এবং পরিশোধনের নিয়ন্ত্রণ দেওয়া হয় মুকেশকে।

মুকেশ আম্বানির অধীনে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো 'রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ' এবং অনিল আম্বানির অধীনে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো 'রিলায়েন্স অনিল ধীরুভাই আম্বানি গ্রুপ' বা 'রিলায়েন্স গ্রুপ' নামে পরিচিত।

সম্পদের এই বিভাজনে যুক্ত করা হয় আরো একটি শর্ত। মুকেশ ও অনিল, দুই ভাইকে ১০ বছরের জন্য একে অপরের ব্যবসায় প্রবেশ করতে নিষেধ করা হয় এই শর্তে। এক্ষেত্রে সময়ের সাথে সাথে মুকেশের তত্ত্বাবধানে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ ধীরে তবে অবিচলভাবে পৌঁছে গিয়েছে নতুন উচ্চতায়। 

অনন্ত আম্বানির ছেলের বিয়ে যেন হয়ে উঠেছিল তারকাদের মিলনমেলা; ছবি: টাইমস নাউ নিউজ

যখন বাজার মূলধনের হিসেব আসে, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ ১০০ বিলিয়ন ডলারের থ্রেশহোল্ড বা সীমা অতিক্রম করা প্রথম ভারতীয় কর্পোরেশন হয়ে ওঠে ২০০৭ সালের মধ্যে। রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ পরবর্তীতে অন্যান্য শিল্পের পাশাপাশি পোশাক, সৌর শক্তি, খুচরা বাণিজ্য, বিনোদন (রিলায়েন্স ইরোস) এবং লজিস্টিকসহ অন্যান্য শিল্প ক্ষেত্রেও প্রসারিত করে নিজেদের।

মুকেশ আম্বানির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ ছিল টেলিকম সেক্টরে প্রবেশ। একইসাথে 'জিও ইনফোটেল' বা 'জিও' প্রতিষ্ঠা ছিল এই বাণিজ্যে তার সবচেয়ে যুগান্তকারী ধাপ। 

এই বাণিজ্যে প্রবেশ করার সাথে সাথে মুকেশ টেলিকম শিল্পের প্রতিষ্ঠিত প্রতিযোগীদের একে অপরের সাথে যোগ দিতে বাধ্য করেছিল। একইসাথে তাদের ব্যাপক ক্ষতির দিকেও ঠেলে দিয়েছিল মুকেশ।


অনুবাদ: জেনিফার এহসান 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.