হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হারলেন প্রিন্স হ্যারি

আন্তর্জাতিক

টিবিএস রিপোর্ট
28 February, 2024, 09:00 pm
Last modified: 07 March, 2024, 08:21 pm
ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হ্যারি অর্থের বিনিময়ে যে ধরনের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা চেয়েছেন তা অনেকটা দেহরক্ষীর মতো, যা রাষ্ট্রীয় বিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

যুক্তরাজ্যে থাকাকালীন নিরাপত্তা সুরক্ষা নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের রায় চ্যালেঞ্জে হেরেছেন প্রিন্স হ্যারি। খবর বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান

প্রিন্স হ্যারি ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক্সিকিউটিভ কমিটি ফর দ্য প্রোটেকশন অব রয়্যালটি অ্যান্ড পাবলিক ফিগারস (র্যাভেক) সিদ্ধান্তের পরে হোম অফিসের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছিলেন।

ডিউক অব সাসেক্স তার অভিযোগে বলেছিলেন, রাজপরিবার থেকে অনেকটা আলাদা হয়ে যাওয়ার কারণে' তার নিরাপত্তা শিথিল হয়ে পড়েছে।

গত ডিসেম্বরে হ্যারির আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, হ্যারির সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে তা 'বেআইনি ও অন্যায্য' এবং তারা ডিউকের বিরুদ্ধে 'যুক্তরাজ্যে তার সুনামের ওপর এর প্রভাব' সম্পর্কে সতর্ক করেছিলেন।

মামলায় যুক্তরাজ্য সফরের সময় তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কিত সুনির্দিষ্ট চ্যালেঞ্জের কথা বলা হয়।

সেসময় হোম অফিস বলেছিল, হ্যারির অভিযোগটি খারিজ করা উচিত।

তাদের যুক্তি ছিল, ডিউকের সুরক্ষা 'বেসপোক' হওয়া উচিত এবং তার নিরাপত্তার সিদ্ধান্ত কেস-বাই-কেস ভিত্তিতে নেওয়া হয়েছে।

রায়ে উচ্চ আদালতের বিচারক স্যার পিটার লেন বলেন র্যাভেকের পদ্ধতিটি অযৌক্তিক বা পদ্ধতিগতভাবে ন্যায়সঙ্গত ছিল।

হোম অফিস আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়েছে।

অন্যদিকে হ্যারির আইনজীবীরা বলেছেন, তারা আপিল করবেন।

৫২ পৃষ্ঠার আংশিক রায়ে লেন বলেন, হ্যারির আইনজীবীরা 'র ্যাভেক প্রক্রিয়ার একটি অনুপযুক্ত, আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা' দিয়েছেন।

তিনি বলেন, তার জন্য যে 'বেসপোক' প্রক্রিয়া তৈরি করা হয়েছিল, তা আইনতভাবে সঠিক ছিল ও আছে।

খবরে জানানো হয়, গত বছর নিজের অর্থ ব্যয়ে পুলিশি নিরাপত্তা নিতে চান হ্যারি। তবে দেশটির স্বরাষ্ট্র দপ্তর হ্যারির এ আবেদন নাকচ করে দেয়। এরপরই আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন তিনি। পরে তার সেই আপিল খারিজ করে দেন আদালত।

সেসময় সরকার পক্ষের আইনজীবীরা যুক্তি দেন, ধনী ব্যক্তিরা চাইলেই পুলিশ কিনে নিতে পারেন না। 

আপিল প্রত্যাখ্যানের পর হ্যারির আইনজীবীরা জানান, ব্রিটেনে হাই প্রোফাইল ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত অর্থের বিনিময়ে পুলিশি নিরাপত্তা নেওয়ার বিধান থাকলেও এক্ষেত্রে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।

ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হ্যারি অর্থের বিনিময়ে যে ধরনের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা চেয়েছেন তা অনেকটা দেহরক্ষীর মতো, যা রাষ্ট্রীয় বিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

তবে তার আইনজীবীদের যুক্তি, অন্যায়ভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ডিসেম্বরে যখন চ্যালেঞ্জটি করা হয় তখন হোম অফিসের আইনজীবীরা হাইকোর্টকে বলেছিলেন, 'প্রিন্স হ্যারি এখনও সর্বজনীন তহবিলভুক্ত পুলিশ সুরক্ষায় থাকবেন। তবে এই নিরাপত্তা রাজপরিবারের ফুল টাইম কর্মরতদের যেভাবে দেওয়া হয় সেভাবে দেওয়া হবে না। তাকে আলাদাভাবে নিরাপত্তা দেওয়া হবে।'

রায়ে ডিউকের মামলা প্রত্যাখ্যান করে স্যার পিটার বলেন, প্রিন্স হ্যারির সুরক্ষা মর্যাদা হ্রাস করার সিদ্ধান্ত ন্যায়সঙ্গত ছিল।

র ্যাভেক রাজপরিবারের সদস্য ও অন্যান্য ভিআইপিদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে। হোম অফিসের পক্ষ থেকে তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। মেট্রোপলিটন পুলিশ, মন্ত্রিপরিষদ অফিস এবং রাজপরিবারের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে।

শুধু এই আইনি লড়াই নয়, ব্রিটেনে আরও কয়েকটি মামলা লড়ছেন হ্যারি। এরমধ্যে আছে মিরর নিউজপেপার গ্রুপের বিরুদ্ধে ফোন-হ্যাকিং দাবি সংক্রান্ত একটি মামলা। 

যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লসের কনিষ্ঠ পুত্র প্রিন্স চার্লস। মার্কিন অভিনেত্রী মেগান মার্কেলকে বিয়ে করার পর রাজপরিবারের দায়িত্ব থেকে সরে যান। রাজপরিবার থেকে অব্যাহতি নেওয়ায় প্রত্যাহার করা হয় তার রাজকীয় নিরাপত্তারক্ষী। ২০২০ সালে সস্ত্রীক যুক্তরাষ্ট্রে থিতু হন তিনি।

 

 

সংক্ষেপিত ভাবানুবাদ: তাবাসসুম সুইটি

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.