অপ্রত্যাশিত মন্দার কবলে জাপান, বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ এখন জার্মানি
আন্তর্জাতিক
জাপানের অর্থনীতি টানা দুই চতুর্থাংশ সংকুচিত হওয়ার পরে অপ্রত্যাশিতভাবে মন্দার কবলে পড়েছে দেশটি।
দেশটির মোট জিডিপি বিগত বছের তুলনায় ২০২৩ সালের শেষ তিন মাসে প্রত্যাশার চেয়েও ০.৪ শতাংশ বেশী সংকুচিত হয়েছে।
পূর্ববর্তী প্রান্তিকে দেশটির অর্থনীতি ৩.৩ শতাংশ সংকুচিত হওয়ার পরে এই মন্দা দেখা দিয়েছে।
জাপানের মন্ত্রিপরিষদ অফিসের পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, দেশটি জার্মানির কাছে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে অবস্থান হারিয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা আশা করেছিলেন, নতুন তথ্য অনুযায়ী দেখা যাবে জাপানের জিডিপি গত বছরের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে ১ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
কোন দেশে টানা দুই চতুর্থাংশ অর্থনৈতিক সংকোচন ঘটলে সেটিকে সাধারণত মন্দা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
অক্টোবরে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) পূর্বাভাস দিয়েছিল, মার্কিন ডলারে হিসেব করা হলে জার্মানি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে জাপানকে ছাড়িয়ে যাবে।
উভয় দেশ তাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পরিসংখ্যানের চূড়ান্ত সংস্করণ প্রকাশ করার পরেই আইএমএফ র্যাংকিংয়ে পরিবর্তনের ঘোষণা দিবে। সংস্থাটি ১৯৮০ সাল থেকে অর্থনীতির তুলনামূলক তথ্য প্রকাশ করা শুরু করে।
অর্থনীতিবিদ নীল নিউম্যান বিবিসিকে জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানগুলোতে দেখা যায় ২০২৩ সালে জাপানের অর্থনৈতিক মূল্য ছিল প্রায় ৪.২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার যেখানে জার্মানির অর্থনৈতিক মূল্য ছিল ৪.৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।
নিউম্যান আরো বলেন, ডলারের বিপরীতে জাপানি ইয়েনের দুর্বলতার কারণে এমন ঘটলেও ইয়েনের দাম পুনরুদ্ধার করতে পারলে দেশটি তিন নম্বর স্থান ফিরে পেতে পারে।
এই মাসে টোকিওতে এক সংবাদ সম্মেলনে আইএমএফের উপ প্রধান গীতা গোপীনাথ বলেছিলেন, জাপানের র্যাংকিংয়ে পিছিয়ে যাওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল গত বছরে মার্কিন ডলারের বিপরীতে ইয়েনের দাম ৯ শতাংশ কমে যাওয়া।
ইয়েনের দুর্বলতা জাপানের কিছু বড় প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়াতে সাহায্য করেছে যেহেতু এটি বৈশ্বিক বাজারে গাড়ির মত পণ্য রপ্তানির খরচ কমিয়ে ফেলেছে।
১৯৯০ সালের পর এই সপ্তাহে টোকিওর প্রধান স্টক ইনডেক্স নিক্কেই ২২৫ প্রথমবারের মতো ৩৮ হাজার মার্ক অতিক্রম করেছে। সম্পত্তির দামের পতনে অর্থনৈতিক সংকট দেখা দেওয়ার কারণে এমনটি ঘটেছে। ১৯৮৯ সালের ডিসেম্বরে নিক্কেই ২২৫ এর রেকর্ড সর্বোচ্চ ৩৮,৯১৫.৮৭ নির্ধারণ করা হয়েছিল।
ব্যয় এবং বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্দেশ্যে ব্যাংক অব জাপান ২০১৬ সালে নেতিবাচক সুদের হার চালু করেছিল।
নেতিবাচক এই হার ইয়েনকে বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের কাছে কম আকর্ষণীয় করে তুলেছে এবং এর মূল্যের পতন ঘটেছে।
Comments
While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.