চন্দ্রপৃষ্ঠে ‘মুন স্নাইপার’-এর সাথে জাপানের যোগাযোগ স্থাপন; কিন্তু ফুরিয়ে যাচ্ছে ব্যাটারি
জাপানের অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি (জাক্সা) প্রেরিত 'মুন স্নাইপার' (চন্দ্রযান) যার নাম দেওয়া হয়েছে 'স্লিম' সেটি চাঁদে ঐতিহাসিক অবতরণ করেছে। কিন্তু এই সাফল্যের পাশাপাশি মহাকাশযানের মূল অংশটিতে কিছু ত্রুটি দেখা দিয়েছে।
স্লিম চন্দ্রযানটি সফলভাবে চাঁদে স্পর্শ করলেও জাক্সার প্রকৌশলীরা দ্রুত বুঝতে পেরেছেন, অভিযানের সাথে সম্পর্কযুক্ত সবকিছু ঠিক ছিল না। চন্দ্রযানটির সৌর কোষগুলো ঠিকমতো কাজ করছিল না।
ইনস্টিটিউট অফ স্পেস অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোনটিক্যাল সায়েন্সের মহাপরিচালক এবং জাক্সার ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিতোশি কুনিনাকাকে সৌর প্যানেলগুলি ঠিক করার চেষ্টা করার জন্য কী করা যেতে পারে সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল।
কুনিনাকা বলেন, তারা চন্দ্রযানটির 'স্থিতিশীলতা' বজায় রাখার চেষ্টা করছেন। তারা এমন কিছু করতে চান না যা 'অত্যধিক'। কিন্তু সৌর কোণের পরিবর্তন হলে সৌর কোষগুলো ব্যবহার করে স্লিমের জন্য আবার বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব।
তিনি বলেন, "সৌর কোণ প্রতি মাসে পরিবর্তিত হবে এবং চাঁদের উপর সূর্যের আলোর প্রতিফলনেরও পরিবর্তন ঘটবে। যখন সূর্যের আলো অন্য দিক থেকে আসবে তখন সেটি সৌর কোষে আঘাত করতে পারে। আমরা এই সম্ভাবনা বিবেচনা করছি এবং আমরা আশা করছি স্লিম আবার শক্তি ফিরে পাবে।"
চন্দ্রপৃষ্ঠের অভিযানটি বর্তমানে স্লিমের ব্যাটারি থেকে চালানো হচ্ছে। এর ফলে চন্দ্রযানটি কয়েক ঘণ্টা পরে বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কুনিনাকা বলেন, "ব্যাটারি আরও কয়েক ঘণ্টা স্থায়ী হবে, সেই ঘন্টাগুলি স্লিমের অবশিষ্ট জীবন হবে।"
জাক্সার কর্মকর্তারা বর্তমানে তথ্য সন্ধানের মাধ্যমে এই যান্ত্রিক ত্রুটি সমাধানকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। তারা চন্দ্রযানের হিটারগুলো বন্ধ করে দিয়েছেন।
কুনিনাকা বলেছেন, মহাকাশযানের কিছু সিস্টেম শক্তি বাঁচানোর জন্য বন্ধ করা হয়েছে, কারণ এটি এই মুহূর্তে সম্পূর্ণরূপে ব্যাটারির শক্তির উপর নির্ভরশীল।
জাক্সার কর্মকর্তারা এই অভিযান থেকে অনেক কিছু শেখার আশা করছেন। তারা বলেছেন, ব্যাটারি ফুরিয়ে যাওয়া মানেই স্লিম মিশনের শেষ নয় এবং তারা যতটা সম্ভব তথ্য পেতে সময় ব্যয় করতে চান।
কুনিনাকা বলেন, "আমরা আমাদের প্রযুক্তির যথার্থতা বাড়াতে চাই যাতে শুধু চাঁদ নয়, মঙ্গল গ্রহেও অবতরণ সম্ভব হবে।"
তিনি যোগ করেন, চন্দ্রযানটি থেকে যথেষ্ট তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত তারা আনন্দিত হতে পারছেন না।
এই চন্দ্রযানটি চাঁদে অবতরণের অর্থ হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন, চীন এবং ভারতের পরে চাঁদে অবতরণকারী মাত্র পঞ্চম দেশ হল জাপান।