বাজারদরের চেয়ে দ্বিগুণ দামে কয়লা কিনে গ্রাহকদের কাছ থেকে বেশি দাম নিয়েছে আদানি গ্রুপ: ফিনান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন
ভারতের বৃহত্তম বেসরকারি কয়লা আমদানিকারক আদানি গ্রুপ বাজারদরের চেয়ে অনেক বেশি দামে কয়লা আমদানি করেছে বলে দাবি করা হয়েছে লন্ডনের ফিনান্সিয়াল টাইমস পত্রিকার এক প্রতিবেদনে।
এর ফলে গ্রুপটি জ্বালানি ব্যয় বাড়িয়ে দিয়ে ভোক্তাদেরকে বিদ্যুতের জন্য বাড়তি দাম দিতে বাধ্য করেছে বলে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।
২০২১ সালের জুলাই থেকে পাওয়া কাস্টমস নথির ওপর ভিত্তি করে করা পত্রিকাটির অনুসন্ধানে দাবি করা হয়েছে, আদানি গ্রুপ কয়লার দাম হিসেবে মোট ৪.৮ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে, যা বাজারদরের চেয়ে অনেক বেশি।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, তাইওয়ান, দুবাই ও সিঙ্গাপুরের তিনটি অফশোর মধ্যস্থতাকারী বাজারদরের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি প্রিমিয়াম পেয়েছে। এর ফলে ভারতের সাধারণ নাগরিক ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনতে হয়েছে।
২০১৯ থেকে ২০২১ সালে ইন্দোনেশিয়া থেকে আদানির আমদানি করা ৩০ জাহাজ কয়লার নথিপত্র খতিয়ে দেখেছে বলে জানিয়েছে ফিনান্সিয়াল টাইমস। সব ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, রপ্তানি ঘোষণায় কয়লার যে দাম দেখানো হয়েছে, আমদানি রেকর্ডে দাম তার চেয়ে অনেক বেশি। এই সময় সব মিলিয়ে এসব জাহাজের আমদানি মূল্য ৭০ মিলিয়ন ডলার বেড়ে গেছে। এ মূল্যবৃদ্ধির কোনো ব্যাখ্যা নেই বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
তবে আদানি গ্রুপ কোনো নিয়ম লঙ্ঘনের কথা অস্বীকার করেছে। গ্রুপটি বলেছে, ফিনান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনটি 'পুরনো, ভিত্তিহীন অভিযোগের' ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। পত্রিকাটি তথ্য ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে বলেও অভিযোগ করেছে গ্রুপটি।
আদানির বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম কয়লা দাম বাড়ানোর অভিযোগ ওঠে ৭ বছর আগে। ওই সময় আদানির আদানির পাঁচ কোম্পানিসহ আরও পাঁচটি কয়লা সরবরাহকারীকে 'কৃত্রিমভাবে দাম বাড়ানোর' জন্য নোটিশ পাঠিয়েছিল ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়ের রাজস্ব গোয়েন্দা ইউনিট ডিরেক্টরেট অভ রেভেনিউ ইনটেলিজেন্স (ডিআরআই)।
এছাড়া আদানির রাজ্য গুজরাটের বিরোধীদলীয় রাজনীতিবিদরা অভিযোগ করেছেন, গ্রুপটি ২০১৮ সাল থেকে ২০১৮ সাল থেকে বিদ্যুতের বেশি দাম নিচ্ছে।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ উঠছে। এসব অভিযোগের সূত্রপাত হয় হিনডেনবার্গ প্রতিবেদনের মধ্য দিয়ে। আদানির বিরুদ্ধে শেয়ার জালিয়াতির অভিযোগ তুলেছিল হিনডেনবার্গ।