ভারতের ‘রকেট উইমেন’: চন্দ্রযান-২ মিশনের নেপথ্যে ছিলেন যে নারী
গতকাল (২৩ আগস্ট) চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফলভাবে অবতরণ করে ভারতীয় স্পেসক্রাফট চন্দ্রযান-৩। এর আগে ২০১৯ সালে ইসরো'র চন্দ্রযান-২ সফলভাবে কক্ষপথে পাঠানো গেলেও এটির ল্যান্ডার চাঁদে নামার সময় বিধ্বস্ত হয়েছিল। আর চন্দ্রযান-২ এর ঐ ঐতিহাসিক মিশনের ডিরেক্টর ছিলেন 'রকেট উইমেন অফ ইন্ডিয়া' খ্যাত ঋতু করিধাল।
দ্য ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশনের (ইসরো) এ বিজ্ঞানীর জন্ম ও বেড়ে ওঠা ভারতের লক্ষ্ণৌতে।
লক্ষ্ণৌ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় এমএসসি ডিগ্রী অর্জন করেন তিনি। এরপর গ্র্যাজুয়েট অ্যাপটিটিউড টেস্ট ইন ইঞ্জিনিয়ারিং বা 'গেট'-এ ভালো ফলাফল করে অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির জন্য বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সে সুযোগ পান তিনি। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম টেক করেন তিনি।
এম টেকের পর পিএইচডি শুরু করেন ঋতু। একইসময়ে ইসরো-তে চাকরির আবেদন করেন; পেয়ে যান কাজ করার সুযোগ। কিন্তু চাকরিরত অবস্থায় পিএইচডি করার নিয়ম ছিলনা। শেষমেশ পিএইচডি ছেড়ে বেছে নিলেন ইসরো-কেই।
১৯৯৭ সাল থেকে ঋতু করিধাল ইসরো-তে দায়িত্ব পালন করছেন। নব্বইয়ের দশকে যে সময়টায় তিনি বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ শুরু করেন, সেসময় নারীদের জন্য বাইরে গিয়ে চাকরি করাটাই ছিল দুষ্কর।
চন্দ্রাভিযানের আগে ভারতের 'মার্স অরবিটার মিশন' এর ডেপুটি অপারেশন্স ডিরেক্টর ছিলেন ঋতু করিধাল। 'মঙ্গলযান' এর গতিপথ, এর উৎক্ষেপণ সময় এবং কোন কক্ষপথে তা যাবে- এসব দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ঋতুসহ অন্যান্য বিজ্ঞানীকে।
২০০৭ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি, প্রয়াত এ পি জে আব্দুল কালামের হাত থেকে পেয়েছিলেন 'ইয়ং সায়েন্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড'। এছাড়া ইসরো টিম অ্যাওয়ার্ড, এএসআই টিম অ্যাওয়ার্ড ইত্যাদি সহ বেশ কয়েকটি পুরষ্কার পেয়েছেন এই গুণী নারী।
'চন্দ্রযান-৩' মিশনটি ছিল ভারতের চাঁদে মহাকাশযান নামানোর দ্বিতীয় চেষ্টা।
ভারত সরকার বর্তমানে বেসরকারি পর্যায়ে মহাকাশযান উৎক্ষেপণ এবং এ সংশ্লিষ্ট স্যাটেলাইট নির্ভর ব্যবসা বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিচ্ছে।
বুধবার অবতরণের আগে ইসরো জানিয়েছিল, সংস্থাটি অবতরণের স্বয়ংক্রিয় সিকোয়েন্স চালু করার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত।
আগামী দুই সপ্তাহ চন্দ্রযান-৩ কার্যকর থাকবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এ সময়ে একাধিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবে এটি। চন্দ্রপৃষ্ঠের খনিজ উপাদানে বর্ণালী বিশ্লেষণ পরিচালনা করা হবে এ মিশনে।
