ইউক্রেনকে দেবার মতো আমেরিকার অস্ত্র ভাণ্ডারের মজুত ফুরিয়ে এসেছে প্রায়
যুদ্ধের শুরু থেকেই ইউক্রেনকে অত্যাধুনিক সব অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু, কিয়েভকে দেওয়া এ ধরনের সহায়তার ফলে খোদ মার্কিন সেনাবাহিনীরই কিছু আধুনিক অস্ত্র ও গোলাবারুদের মজুতে টান পড়েছে। খবর সিএনএনের
এবিষয়ে অবহিত তিনজন মার্কিন কর্মকর্তা বিষয়টি বার্তাসংস্থা সিএনএনকে জানান।
তারা বলেছেন, কিয়েভকে দেওয়া যাবে বর্তমানে এমন মজুদ প্রায় ফুরিয়ে আসছে।
সিএনএন এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অস্ত্র মজুদে টান এবং চাহিদার তুলনায় যোগান দিতে মার্কিন সমর শিল্পের ব্যর্থতা– এখন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের সামনে অন্যতম চ্যালেঞ্জ। কারণ যুক্তরাষ্ট্র শত শত কোটি ডলার মূল্যের সমরাস্ত্র ইউক্রেনে পাঠানো অব্যাহত রেখেছে।
ওই কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন সিএনএন'কে বলেন, তীব্র নয় মাসের এই যুদ্ধে ইউক্রেনকে টানা সরবরাহ করতে করতে বেশকিছু অস্ত্র ও গোলাবারুদের মজুত প্রায় ফুরিয়ে আসার পথে। যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য তার উদ্বৃত্ত মজুত থেকেই এ সরবরাহ করছে, কিন্তু তারও একটি নির্দিষ্ট সীমা থাকায় এই ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
সূত্রগুলি মার্কিন গণমাধ্যমটিকে জানিয়েছে, ইউক্রেনের চাহিদা মেটাতে পারে এমন গোলাবারুদের মধ্যে ১৫৫ মিলিমিটার কামানের গোলা ও স্ট্রিংগার বিমান-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের মজুত বিশেষভাবে পড়তির দিকে।
অন্য কয়েকটি সূত্রও যুক্তরাষ্ট্রের অতিরিক্ত অস্ত্র উৎপাদনের সক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশেষত ওই কর্মকর্তারা- হার্ম অ্যান্টি-রেডিয়েশন (রাডার বিধ্বংসী) মিসাইল, এবং সহজে বহনযোগ্য জ্যাভলিন ট্যাংক বিধ্বংসী মিসাইল উৎপাদন- এই সরবরাহ চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে করা যাবে কিনা- তা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেন। যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র এগুলোসহ অন্যান্য অস্ত্র ও গোলাবারুদের উৎপাদন জোরদার করেছে।
আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর– গত দুই দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো– বর্তমানে কোনো সংঘাতে আনুষ্ঠানিকভাবে জড়িত নয় যুক্তরাষ্ট্র। ইরাকে মোতায়েন করা মার্কিন সেনারাও পালন করছে পরামর্শকের ভূমিকা। যুক্তরাষ্ট্র নিজে কোনো যুদ্ধে লিপ্ত না থাকায়– ইউক্রেনের মতো একটি দীর্ঘস্থায়ী, তীব্র সংঘাতে সরবরাহ করার মতো বিপুল পরিমাণে সমরাস্ত্র ও গোলাবারুদ উৎপাদনে ভাটা পড়েছে।
তবে ইউক্রেনকে সাহায্য করতে গিয়ে- যুক্তরাষ্ট্র নিজের যুদ্ধপ্রস্তুতি সক্ষমতায় কোনো ঘাটতি আসতে দেয়নি বলে বিভিন্ন সময় জানিয়েছেন পেন্টাগনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। ইউক্রেনে প্রতিটি চালান পাঠানোর আগে সে তুলনায় কৌশলগত মার্কিন মজুত ও যুদ্ধ পরিকল্পনা বিবেচনায় রাখা হয়েছে বলেও জানান তারা।