রাশিয়া জ্বালানি সরবরাহ কমানোয় ইউরোপে আবারও বাড়ল গ্যাসের দাম

জার্মানিসহ ইউরোপের আরও কয়েকটি দেশে রাশিয়া জ্বালানি সরবরাহ আরেক দফা কমানোর পর বেড়েছে গ্যাসের দাম।
নর্ড স্ট্রিম ১ দিয়ে জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহের স্বাভাবিক সক্ষমতার পাঁচ ভাগের এক ভাগেরও কম গ্যাস সরবরাহ করছে রাশিয়া।
ইউরোপে গ্যাসের দাম প্রায় ২ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। সমালোচকরা বলছেন ইউক্রেন-রাশিয়া দ্বন্দ্বে গ্যাসকেই ইউরোপের বিরুদ্ধে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে রাশিয়া।
ইউক্রেন যুদ্ধের আগে জার্মানি ব্যবহৃত গ্যাসের অর্ধেক রাশিয়া থেকে আমদানি করত। আমদানিকৃত গ্যাসের অধিকাংশই নর্ড স্ট্রিম ১ পাইপলাইন দিয়ে আসত। এর বাইরে বাকি অংশ ভূমিনির্ভর পাইপলাইন দিয়ে আসত।
জুনের শেষ নাগাদ জার্মানিতে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ মাত্র এক-চতুর্থাংশে নেমে এসেছে।
রাশিয়ার জ্বালানি সরবরাহ প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রমের দাবি পাইপলাইনের একটি টারবাইনে সারাইকাজের জন্য তাদের জ্বালানি সরবরাহ কমাতে হয়েছে।
তবে জার্মান সরকার বলছে, সরবরাহ কমানোর পেছনে কোনো কারিগরি জটিলতা নেই, বরং জার্মানিকে বিপাকে ফেলতে পুরোটাই রাশিয়ার কারসাজি।
মস্কো গোটা ইউরোপের বিরুদ্ধে 'গ্যাস যুদ্ধে' নেমেছে বলে ইউক্রেনের অভিযোগ। জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টিই তাদের উদ্দেশ্য বলেও দাবি দেশটির।
এদিকে, পোল্যান্ড জানিয়েছে চলতি বছরের শেষ নাগাদ তারা রাশিয়ার গ্যাস ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করতে সক্ষম হবে।
প্রধানমন্ত্রী মাতেউস মোরাউইকি বলেন, 'রাশিয়া জার্মানিকে যেভাবে ব্ল্যাকমেইল করে আমাদের আর সেভাবে ব্ল্যাকমেইল করতে পারবে না'।
তবে রাশিয়া সরবরাহ কমানোয় যুক্তরাজ্যের সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। দেশটি রাশিয়া থেকে ৫ শতাংশেরও কম গ্যাস আমদানি করে। তবে সরাসরি না হলেও ইউরোপে গ্যাসের চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে দাম বাড়লে যুক্তরাজ্যেও এর প্রভাব পড়বে।
ইউরোপে প্রতি মেগাওয়াট ঘণ্টা গ্যাসের দাম বেড়ে ২০৪.৮৫ ইউরোতে এসে দাঁড়িয়েছে যা রেকর্ড হিসেবে তৃতীয় সর্বোচ্চ দাম। এর আগে গত ৮ মার্চ গ্যাসের দাম প্রতি মেগাওয়াট ঘণ্টায় সর্বকালের সর্বোচ্চ ২১০.৫০ ইউরোতে এসে ঠেকে।
গতবছরের এই সময়ে ইউরোপে প্রতি মেগাওয়াট ঘণ্টা গ্যাসের দাম ছিল মাত্র ৩৭ ইউরোর কিছু বেশি।
বুধবার যুক্তরাজ্যে গ্যাসের দাম ৭ শতাংশ বাড়ে, মাত্র এক বছর আগের তুলনায় যা ছয় গুণেরও বেশি।
এপ্রিলে যুক্তরাজ্যে জ্বালানি মূল্যের সীমা ৭০০ পাউন্ডে এসে দাঁড়ায়। জানুয়ারিতে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৩,৮৫০ পাউন্ড হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শীতকে সামনে রেখে রাশিয়া গ্যাস সরবরাহ কমানোয় নিশ্চিতভাবেই বিপাকে পড়তে চলেছে ইউরোপ।
রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকেই রাশিয়ার ওপর জ্বালানি নির্ভরতা কমাতে একাধিক বৈঠকে বসেছে ইউরোপীয় নেতারা। এবার অনেকটা চাপে পড়েই তাদের রাশিয়ার গ্যাসের বিকল্প ভাবতে হবে।
- সূত্র: বিবিসি