হোটেল-রেস্তোরাঁয় 'সার্ভিস চার্জ' নিষিদ্ধ করলো ভারত

হোটেল-রেস্তোরাঁয় ক্রেতাদের কাছ থেকে আর সার্ভিস চার্জ নেওয়া যাবে না। সম্প্রতি এমন ঘোষণা দিয়েছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের ভোক্তা সুরক্ষা কর্তৃপক্ষ। খবর বিবিসির।
ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (৪ জুলাই) নতুন একটি গাইডলাইন জারি করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। সেখানেই এই ঘোষণা করা হয়েছে। হোটেল-রেস্তোরাঁয় সার্ভিস চার্জ বিষয়ক অনৈতিক লেনদেন এবং ক্রেতাদের অধিকার লঙ্ঘন রুখতে এই গাইডলাইন চালু করা হয়েছে।
যদি কোনও হোটেল বা রেস্তোরাঁ কেন্দ্রের নির্দেশিকা অগ্রাহ্য করে সার্ভিস চার্জ নেয়, তাহলে জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে ক্রেতারা অভিযোগ জানাতে পারবেন।
সেখানে রেস্তোরাঁগুলো প্রায়ই 'সার্ভিস চার্জ' এর অধীনে গ্রাহকের বিলে ৫%-১৫% টিপ (বকশিশ) যোগ করে থাকে। নতুন এ নিয়ম অনুযায়ী, রেস্তোরাঁগুলো আর বিলের সাথে 'স্বয়ংক্রিয়ভাবে' সার্ভিস চার্জ যোগ করতে পারবে না।
এতোদিন বাড়তি সার্ভিস চার্জ ঘিরে গ্রাহকেরা যারপরনাই বিরক্ত ছিলেন। একের পর এক অভিযোগ জানিয়ে আসছিলেন তারা।
এর আগে ২০১৭ সালে, ভারত সরকারের ভোক্তা বিষয়ক বিভাগ একটি নির্দেশিকা জারি করে জানায়, গ্রাহকদের শুধুমাত্র সরকারী করের সাথে মেনু কার্ডে প্রদর্শিত মূল্য দিতে হবে। বরং সেসময় রেস্তোরাঁ মালিকদের তাদের কর্মীদের ন্যায্য মজুরি দিতে এবং খরচ মেটাতে পণ্যের দাম বাড়াতে বলে।
তবে কোনও রেস্তোরাঁ বা হোটেলে গিয়ে যদি কেউ সেখানকার কর্মীদের বকশিশ দিতে চান, সেটি একান্তই ক্রেতার ব্যক্তিগত ব্যাপার হিসেবে বিবেচিত হবে।
গত মাসেই সরকার ন্যাশনাল রেস্টুরেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার (এনআরএআই) সাথে আলোচনায় বসে। জানায়, তারা ভোক্তাদের কাছ থেকে অনেক বেশি মাত্রায় অভিযোগ পাচ্ছে। ক্রেতাদের অভিযোগ ছিল, তারা উচ্চ হারে সার্ভিস চার্জ দিতে বাধ্য হচ্ছে; এমনকি বিল থেকে এই চার্জ সরানোর অনুরোধ করলে তাদের হয়রানির শিকার হতে হয়।
ভারতের অর্ধ মিলিয়নেরও বেশি রেস্তোরাঁর প্রতিনিধিত্বকারী সংস্থা এনআরএআই যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে বলে, এটি একেবারেই ব্যক্তিগত নীতির বিষয় এবং এই ধরনের চার্জ গ্রহণ 'অবৈধ' নয়।
উপরন্তু তারা আরও যুক্তি দেয়, এভাবে সার্ভিস চার্জ নেওয়ায় সরকারের জন্যও অতিরিক্ত রাজস্ব এসেছে কারণ রেস্তোরাঁগুলো গ্রাহকদের কাছ থেকে যা আদায় করে, তার ওপর ট্যাক্স দেয়।
নতুন নির্দেশিকার ফলে এখন থেকে গ্রাহকেরা তাদের অভিযোগ অনলাইনে বা জাতীয় ভোক্তা হেল্পলাইনের মাধ্যমে জানাতে পারবেন।