আমার কবিতার স্মৃতি: হাসান এত তাড়া কীসের?
শিরোনামের লাইনটি তার অপ্রকাশিত একটি কবিতা থেকে নেওয়া। হাসান হাফিজুর রহমানের সঙ্গে আমার প্রথম দেখা হয় ১৯৭৭ সালে। তখন আমি কেবল বিশ্ববিদ্যালয় পাশ করে চাকরি খুঁজছি। এমন সময় আমার বন্ধু মোর্শেদ শফিউল হাসান জানালো, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে লেখা হচ্ছে, আমি যেন ওখানে গিয়ে চেষ্টা করি। তারপর একদিন সাংবাদিক মাহফুজুল্লাহ রহমানের (মারা গেছেন) সাথে আমি হাসান ভাইয়ের অফিসে পৌঁছালাম।
মাহফুজ ভাইয়ের অনুরোধে হাসান ভাই আমাকে ইন্টারভিউ ছাড়াই নিয়ে নিলেন। আমি এই প্রথম চাকরিতে যোগ দিলাম। তখনো মাস্টার্সের ফল বের হয়নি।
আমার জীবনে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস প্রকল্পে কাজ করা ছিল মোড় ঘোরানো অভিজ্ঞতা।
আমার জীবনটা পুরো পালটে গেলো মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস প্রকল্প দিয়ে। বিশেষত হাসান ভাইয়ের মতো মানুষের জন্য। এরকম মানুষ আমি খুব কম দেখেছি। এত ভালো মানুষ যে কি-না ইতিহাসের একদম মধ্যেখানে অবস্থান করছেন। এমনটা এখন দেখা যায় না।
আমাদের ইতিহাসও তো অনেকভাবে পালটে গেছে। কিন্তু হাসান ভাইদের ইতিহাস ৪৭ থেকে ৭১ পর্যন্ত এক ধারাবাহিকতায় চলেছে। সেই ইতিহাসের প্রতিটি পর্যায়ে হাসান ভাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
আমি মূলত হাসান ভাইকে চিনতাম সাহিত্যিক এবং কবি হিসেবে। আমি ছিলাম পড়ুয়া মানুষ। ইতিহাস প্রকল্পে যোগ দেয়ার আগেই তাই হাসান ভাইয়ের সমস্ত লেখা আমার পড়া শেষ। এই বিষয়টা পরবর্তী সময়ে আমাদের সম্পর্ক গড়তে খুব সাহায্য করেছিল। কারণ এর দিন তিনেক পরই, কী কথায় কথায় আমি তার ছোট গল্প বোধহয় 'ঠেস' এর উদাহরণ দিয়েছিলাম। উনি খুব আশ্চর্য হয়ে বলেছিলেন, 'তুমি এই গল্পটা পড়েছ?'
আমি নিয়মিত হাসান ভাইয়ের সঙ্গে কবিতা নিয়ে আলাপ করতাম। একইসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে কাজ হচ্ছে এবং তার সাহিত্য নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
আজকে কি সুযোগ হবে বাংলাদেশের বড় কবিদের সঙ্গে সদ্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ হওয়া ছাত্রের সঙ্গে গল্প করার? তাদের সেই সুযোগ কই?
মানুষ হিসেবে তিনি যে কত সম্মানিত ছিলেন তা বলে বোঝান যাবে না।
আমি এই কাজের জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে সত্য মিথ্যা কথা বলে দলিল সংগ্রহ করতাম। কিন্তু প্রথমেই যে দরজা খুলে প্রবেশ করা, এটা হাসান ভাইয়ের নাম বাদে কোনো নামেই খুলতো না। হাসান ভাইয়ের নাম বললেই, লোকজন কথা বলতে রাজি হতো।
সদ্য প্রয়াত মুহিত ( আবুল মাল আব্দুল মুহিত) সাহেব থেকে শুরু করে, মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকে সাহায্য করেছে। এই বিশাল ঘটনাটা ঘটেছিল হাসান ভাইয়ের কারণে। কারণ মানুষ হিসেবে সবার কাছে অসাধারণ একজন মানুষ ছিলেন হাসান ভাই। ১৯৩২ সালে জন্মেছিলেন হাসান ভাই। মাত্র ৫১ বছর বয়সে তিনি মারা যান। খুব ডায়েবেটিস ছিল, কিন্তু তিনি নিয়ম মেনে চলতেন না। আলুর সিংগারা পর্যন্ত খেতেন। খাদ্যরসিক মানুষ ছিলেন।
সবসময় খাওয়া নিয়ে গল্প করতে পছন্দ করতেন। পাশে একটা রেস্টুরেন্ট ছিল, নাম চিটাগাং রেস্টুরেন্ট। ওখান থেকে খাবার আনিয়ে সবাইকে খাওয়াতেন। আমি লোকজনের কাছে শুনেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র থাকাকালীন মধুর ক্যান্টিনে হাসান ভাইয়ের নামে একটি আলাদা অ্যাকাউন্ট ছিল। মধুদা জানতো, সব খাবারের বিলটা হাসান ভাই-ই দেবেন। আলতাফ মাহমুদের একটা স্মৃতি রচনাতেও হাসান ভাইয়ের এই দিকটি সম্পর্কে লেখা ছিল। সবাইকে খাওয়াতে তিনি পছন্দ করতেন।
হাসান ভাইয়ের কাছে ভাষা আন্দোলন মৌলিক একটা বিষয় ছিল। তখনকার মধ্যবিত্ত আন্দোলনগুলোর একজন অন্যতম শ্রেষ্ট ব্যক্তিত্ব ছিলেন হাসান হাফিজুর রহমান।
সুশীল, সাহিত্যিক, ইতিহাসবিদ, কবি, সম্পাদক অর্থাৎ একজন সুশীল মধ্যবিত্ত বলতে যা বোঝানো হয় হাসান ভাই ঠিক তেমনি ছিলেন। শুধু নোংরামিটাই ছিল না তারমধ্যে। সে সময় বাংলা একাডেমী থেকে যে বই বের হয়েছিলো, ভাষা আন্দোলনে মানুষের সরাসরি অভিজ্ঞতা নিয়ে সেখানে হাসান ভাইয়ের স্মৃতিচারণ ছিল। ভাষা আন্দোলনে ২১ তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে মারামারি হয়েছিলো সেখানে হাসান ভাই সরাসরি অংশগ্রহণ করেছেন। দূর থেকে তিনি কবিতা লিখেননি, সরাসরি সংগ্রাম করেছেন। এটা কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
হাসান ভাইয়ের আগে পিছে না ভেবে কাজ করার প্রবণতা ছিল অনেক।
হাসান ভাই খুব অধিকার সচেতন মানুষ ছিলেন। প্রয়োজনে সহকর্মীদের জন্য মারপিটও করতে পারতেন। তিনি যখন দৈনিক পাকিস্তানে কাজ করছিলেন, তার একটা ঘটনা আমাকে বলেছিলেন, একদিন অফিসের এক অবাঙ্গালী কর্মকর্তা হাসান ভাইয়ের জুনিয়র কলিগের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছিল। হাসান ভাই গিয়ে এক গ্লাস পানি নিয়ে তার মুখের ওপরে ছুড়ে মারে। ঐ লোকটি বোধ হয় জেনারেল ম্যানেজার পদে ছিলেন। এরপর হাসান ভাই তার সামনে বসে জুতো খোলা শুরু করলো। মানে, জুতো দিয়েই পেটাবে! এরকম কাজ কেবল হাসান ভাই-ই করতে পারে।
তাকে সবাই শুধু ভরসাই করতেন না, শ্রদ্ধাও করতেন
৬০-৭০ দশক ছিল সম্ভবত আমাদের সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ সময়। আর সে সময় অন্যতম ভালো মানুষ, অন্যতম ভালো নেতা, ভালো সাংবাদিক, ভাল সাহিত্যিক ছিলেন হাসান ভাই। এখনকার দিনের সুবিধাবাদী সাহিত্যিকদের সঙ্গে হাসান ভাইয়ের তুলনা করা যায় না।
রাশিয়া থেকে যখন ফেরার পর হাসান ভাইয়ের একেবারেই বেকার অবস্থা। হাসান ভাই তখন সিকান্দার আবু জাফর প্রতিষ্ঠিত 'সমকাল' সাহিত্য পত্রিকার অফিসে বসে দাবা খেলতেন। এই সময় কিছু মানুষ জেনারেল জিয়ার সঙ্গে দেখা করে হাসান ভাইয়ের জন্য তদবির করে।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস প্রকল্প জিয়ার আমলে শুরু হয়ে এই কাজ এরশাদের আমলেও হয়েছে, কখনো কেউ কোনোদিন বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। এমনকি মন্ত্রনালয় থেকেও কোনো সমস্যা আসেনি। কারণ হাসান ভাই ছিলেন প্রকল্পের কাজে। তাকে সবাই শুধু ভরসাই করতেন না, শ্রদ্ধাও করতেন।
কিন্তু হাসান ভাইয়ের এ নিয়ে কোনো দেমাগও ছিলনা। তিনি এতবড় মানুষ হয়েও, কাজের সময় আমাদের কথাকে গুরুত্ব দিতেন। আমাদের ধারণাগুলো শুনতেন। হাসান ভাই না থাকলে আমাদের ইতিহাস চর্চার প্রধান ভিত্তি, এই ১৫ খন্ডের দলিলপত্র হতো না, কেউ দলিল দিতো না, কেউ দলিল সাজাত না।
অধ্যাপক হওয়ার চেয়ে তিনি ঐ বার্ষিকী চুক্তির কাজ করতেই পছন্দ করলেন
আমাদের একটা প্রামাণ্যকরণ কমিটি ছিল, দেশের প্রধান ইতিহাসবিদ নিয়ে। এর প্রধান ছিলেন প্রফেসর মফিজুল্লাহ কবির। প্রফেসর আনিসুজ্জামান, প্রফেসর সালাউদ্দিন আহমেদ এরা সদস্য ছিলেন। হাসান ভাই চাইতেন, প্রফেসর আহমেদ শরীফ এর সদস্য হোন। তার কথা আমি গিয়ে শরীফ সাহেবকে বললাম। স্যার সরাসরি না করে দিলেন।
তারপর বললেন, 'হাসান ইউনিভার্সিটিতে যোগ দেয় না কেন? ওকে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর হিসেবে জয়েন করতো বলো। আমি এক বছরের মধ্যে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর করে দেবো।'
কিন্তু হাসান ভাই রাজি হলেন না। 'আমাকে দিয়ে এই কাজ (দলিলপত্রের) শেষ করতে হবে। দেশের সেরা বিদ্যাপীঠের প্রফেসর হওয়ার চেয়ে তিনি ঐ বার্ষিকী চুক্তির কাজ করতেই পছন্দ করলেন। কারণ তিনি এটাকেই গুরুতবপূর্ণ কাজ ভাবতেন, দায়িত্ব ভাবতেন। তিনি সবসময়েই এই প্রকল্পের কাজ নিয়ে ভাবতেন।
যতদিন ভাই বেঁচে ছিলেন, কাজগুলো সব ঠিকভাবেই হয়েছে। ওনার মৃত্যুর পর বিভিন্ন পর্যায়ে থেকে কাজে বাম হাত ঢুকতে শুরু করলো। আশেপাশের মাতবরি শুরু হয়ে গেল।
হাসান ভাইয়ের মানুষের মন ভালো করে দেওয়ার অসম্ভব ভালো ক্ষমতা ছিল। কত মানুষ যে আসতো তার কাছে!
আমার আর ভাইয়ের ঘনিষ্ঠতা শুরু হয়েছিল কবিতার মাধ্যমে। অফিসে একদিন গম্ভীরভাব এসে বল্লেন, 'আফসান এদিকে এসো, তোমার সঙ্গে কথা আছে।' আমি খুব চিন্তিত হয়ে গেলাম তার রুমে। বললেন, 'দরজাটা বন্ধ করে দাও, আমি দুটো কবিতা লিখেছি শোনো'। এইরকম ব্যবহার কি আজকাল আশা করা যায়????
হাসান ভাই কখনোই নিজের শরীর নিয়ে সচেতন ছিলেন না। হার্ট অ্যাটাকের পর আমরা তো ভাবিইনি তিনি বাঁচবেন। আমি পিজি হাসপাতালে দেখা করতে গেলাম। দুজনের কেবিন, আমি গিয়ে তার সামনে চেয়ারে বসলাম। তিনি বিছানায় শুয়ে আছেন। আমার হাতটা ধরে তিনি বলেন, ' জানো আমি ভেবেছিলাম আমি মারাই যাচ্ছি। বাইরে বৃষ্টি হচ্ছিল। তখন আমি মনে মনে লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক( হে আল্লাহ আমি প্রস্তুত, আমি প্রস্তুত) বলতে শুরু করলাম।
এরপর হাসান ভাইয়ের শরীর আর ভালো হয়নি। দু'তিন বছর বেঁচে ছিলেন, তবে অফিসে আর আগের মতো যেতে পারতেন না। কাজ করতে পারতেন না। টাকা পয়সার অভাবে বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা যাচ্ছিল না। একদিন জিজ্ঞেস করলাম, 'আমি কি টাকা তুলতে অনুষ্ঠান করবো আপনার জন্য'? রেগে গিয়ে বললেন, 'আমি কোনো ভিক্ষার পয়সা দিয়ে চিকিৎসা করাবো না'।
এরমধ্যে রাশিয়ানরা রাজি হলো চিকিৎসা করাতে। হাসান ভাইয়ের ফাইলটা পাস করাতে কত জায়গায় যে ঘুরতে হয়েছে সে-বার আমাকে! শেষে দেখলাম, ফাইলটা গিয়ে তার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর কাছে দীর্ঘদিন ধরে আটকে আছে। নামটা আর লিখলাম না।
যাক শেষ পর্যন্ত বেগম সুফিয়া কামালকে দিয়ে চিঠি লিখিয়ে রাশিয়ান অ্যাম্বাসিতে গেলাম, তারা অর্ডারটা দিয়ে দিল। বাংলাদেশ সরকার আর আপত্তি করলেন না। যেদিন তিনি চলে যাচ্ছেন, সেদিন দেখা করতে গেলাম। তার চারপাশে মুক্তিযুদ্ধের দলিপত্রের ছবি, কাগজপত্র সবকিছু ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা।
আমাকে বললেন, 'আফসান আমি জানিনা আমি কাজটা শেষ করতে পারবো কি-না, কিন্তু তুমি শেষ করে যেও'।
আমি কথা দিয়েছিলাম করবো। রাশিয়া যাবার পর যে কয়দিন বেঁচে ছিলেন, আমাকে বেশ কয়েকটা চিঠিও লিখেছিলেন এই দলিলপত্র নিয়ে। সেখানে গিয়েও তিনি এ-সব নিয়েই ভাবছিলেন।
তার 'রাত প্রহরী' কবিতাটি আমার খুব প্রিয় ছিল
আমার কাছে মনে হয় কবি হিসেবে হাসান ভাই যেভাবে অনালোচিত, সেটা খুব আশ্চর্যজনক। হাসান ভাইয়ের কবিতা অন্যদের থেকে আলাদা ছিল। তার মৃত্যু বিষয়ক কবিতাগুলো এক অন্যবদ্য সৃজন। আমাদের সব কবিই মিলিয়ে যাচ্ছে, দু চারজন যারা ফ্যাশনের মধ্যে থাকে, তাদের কথাই বারবার উঠে আসে।
বাবা-মায়ের মৃত্যুও আমাকে এতটা কষ্ট দেয়নি
বাবা-মা মারা যাবার পরও আমি এত কষ্ট পানি, কোনো মানুষের মৃত্যুতেও আমি এতটা কষ্ট পাইনি, হাসান ভাইয়ের মৃত্যুতে আমি যতটা পেয়েছি। হাসান ভাইয়ের লাশটা নিয়ে আমরা যখন বাংলা একাডেমি পৌছালাম। আমি মাটিতে আছড়ে পড়ে কাঁদছিলাম। হক (সৈয়দ শামসুল হক) ভাই এসে বলেছিলেন, 'আফসান তুমি থামো। তুমি যদি এরকম করে কাঁদো, পরিবারের মানুষ কী করবে?' আমি আর কোনো মানুষের এতটা কাছে যেতে পেরেছি বলে মনে হয়না। কী দিয়ে যে হাসান ভাই আমাকে টেনে রেখেছে আমি জানিনা। আমার কাছে এখনো মনে হয়, এরকম ভালো মানুষ, এরকম যাকে ভালোবাসা যায়, এমন মানুষ জীবনে কম দেখেছি।
এই মানুষ মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্র করেছে, ভাষা আন্দোলন করেছে, মুক্তিযুদ্ধ করেছে, ভাষা আন্দোলনের স্মরণিকা করেছে, সেই মানুষ দৈনিক বাংলা তৈরি করেছে, বাকি জীবনের প্রতিটা আন্দোলনে ছিল। এরকম সম্পূর্ণ মানুষ আমাদের সাহিত্যজগতে নেই। কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত, আমরা তাকেই ভুলতে বসেছি। আমি তাকে মনে করি সবসময়। আমি মনে করি, আমার কৃতজ্ঞতা এই জায়গাতেও। আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ কারণ, হাসান ভাই যদি আমাকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস দলিলে ধরে না রাখতেন, আমি আর মুক্তিযুদ্ধ ইতিহাসবিদও হতাম না।
লেখক: গবেষক ও সাংবাদিক