পশ্চিমা হাওয়া কি দেশের রাজনীতিতে নতুন মোড় আনবে?

মতামত

01 August, 2023, 06:05 pm
Last modified: 01 August, 2023, 06:16 pm

রাজনৈতিক কর্মসূচির মধ্য থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর, বিরোধী দলের নেতাকে ফাইভ স্টার হোটেলের খাবার খাইয়ে বিদায় দেওয়ার ঘটনায়– এক নতুন সম্পর্ক রচনার দিকে চললো দেশ। অন্যদলের নেতার হাসপাতালে খাবার (ফল) পাঠানো যা খুব স্বাভাবিক হলেও বহুবছর তা দেখা যায়নি।

এমন ধারা হঠাৎ শুরু হাওয়ার পিছনে কি পশ্চিমা হাওয়ার  চাপ আছে বলব? সেক্ষেত্রে পশ্চিমা হাওয়ার চাপ কতটা তীব্র হয়– সেই প্রশ্নও চলে আসে সামনে। তবে হঠাৎ এই পরিবর্তন প্রমাণ করে, প্রকাশ্যে যতই পশ্চিমা হাওয়াকে অপ্রাসঙ্গিক বলি না কেন; তার শক্তি যে অনেক তীব্র, তা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই বলেই মনে হচ্ছে। ইউক্রেন যুদ্ধই কি সবকিছু পাল্টে দিল আমাদের দেশের?

২০১৪ বা ২০১৮'র নির্বাচন ঘিরে বহু বিতর্কিত বিষয় সামনে আসলেও পশ্চিমা হাওয়া বইতে দেখা যায়নি। তাহলে পশ্চিমা হাওয়া কি রাজনৈতিক সমঝোতার রাস্তা খুলে দেবে?

অতীতেও কখনোসখনো পশ্চিমা হাওয়া বওয়ার চেষ্টা হয়েছে রাজনৈতিক সমঝোতা সৃষ্টির লক্ষ্যে। তবে মুক্তিযুদ্ধের পরে সবচেয়ে তীব্র বিতর্কিত রাজনৈতিক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল– হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের সামরিক শাসনের অবসানের পর, ১৯৯৬ আর ২০০৬। দেশের মানুষ শুনেছে পর্দার অন্তরালের আলোচনায় নাকি সেই সংকটের সমাধানের রাস্তা পাওয়া গিয়েছিল। পশ্চিমা হাওয়া কি আবারও সেই গণতান্ত্রিক চর্চা তুলে আনছে?

পশ্চিমা হওয়ার এই আগমনের সাথে সাথে সেই ইরাক যুদ্ধের কুশীলব টনি ব্লেয়ারের আগমন, দেশের খবরাখবর রাখা মানুষকে উদ্বিগ্ন করছে। মাটির তলের সম্পদ নিয়ে কি কোন কিছু ঘটনোর সুযোগ খুঁজছেন টনি ব্লেয়ার? দেশের সামগ্রিক আর্থিক অবস্থা খুব বেশি সুখের নয়, তা বোঝা যাচ্ছে বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে নানান ব্যর্থতায়। কিংবা বৈদেশিক মুদ্রা খরচের ব্যাপারে দারুণ সংবেদনশীল সিদ্ধান্তে।

দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী সরাসরি রাজনৈতিক দলের ছাতার নিচের মানুষ নয়, দৈনন্দিন জীবন সংগ্ৰামে তারা জড়িত। এর মধ্যে ব্যবসায়ী, পেশাজীবী, দিনমজুর– সব পেশার মানুষের আছেন। তাদের উদ্বেগের প্রধান কারণ- আসন্ন দিনগুলোতে দেশে কি ঘটতে যাচ্ছে তাই নিয়ে।

আবার কি সেই ২০০৬ সালের লগিবৈঠা কিংবা ২০১৪'- এর লাগাতার হরতাল? প্রাণহানির সঙ্গে যখন আগুনে পুড়েছে বহু সম্পদ। কিন্তু, সেই সময়কার ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত মূল্য কখনো হিসাব করা যায়নি। সরকারিপক্ষ বিরোধী দলকে দায়ী করেছে, বিরোধীদল সরকারি দলের চক্রান্ত বলে নিজেদের দায়ভার এড়িয়েছে। কিন্তু, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্বাভাবিক উন্নয়ন ও গণতন্ত্র। আর এ দুটি আলাদা বিষয় নয়। এই দুটির সমন্বয়ে যে উন্নয়ন ঘটে, তাই-ই স্থায়িত্ব লাভ করে। আর শুধুমাত্র উন্নয়নের কথা বললে, যে উন্নয়ন বোঝানো হয়- তা পাকিস্তানের অর্থনীতির রূপ নিতে পারে, যা এখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভিক্ষার ঝুলিতে রূপান্তরিত হয়েছে।

 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.