‘প্রকল্পরাষ্ট্রে’ বেঘোরে মৃত্যুর মাথাপিছু ব্যয়

মতামত

31 July, 2022, 03:00 pm
Last modified: 18 August, 2022, 04:03 pm
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যথেচ্ছ বিদেশ ভ্রমণের মারাত্মক প্রভাব পড়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাজকর্মে। অনেকে বিদেশে প্রশিক্ষণ নিয়ে আসেন যে মন্ত্রণালয়ের জন্য, দেশে ফেরার পর তাদের সেখান থেকে অন্যত্র বদলি হয়ে যাওয়ারও নজির আছে। সেক্ষেত্রে প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান সরকারের কোনো কাজে লাগে না।

চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে লেভেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় একটি মাইক্রোবাস দুমড়েমুচড়ে ১১ জনের মর্মান্তিক মৃত্যুর পরে গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, লেভেলক্রসিংয়ের মান উন্নয়ন ও নিরাপদ করতে ২০১৫ সালে নেওয়া দুটি প্রকল্পের আওতায় রেলওয়ে ১৯৬ কোটি টাকা খরচ করলেও দুর্ঘটনায় প্রাণহানি থামছে না (ডেইলি স্টার, ৩০ জুলাই ২০২২)। প্রশ্ন হলো, যে ১৯৬ কোটি টাকা খরচ করা হলো, তার ফলাফল কী? এই যে প্রতিনিয়ত লেভেলক্রসিংয়ে এবং সড়ক-মহাসড়কে অসংখ্য মানুষ বেঘোরে প্রাণ হারাচ্ছেন, জিডিপিতে তার ক্ষতির পরিমাণ কত? যোগাযোগ নিরাপদ করার জন্য যে কোটি কোটি টাকা খরচ হয়, তা মাথাপিছু হিসাব করলে কত দাঁড়ায়?

আসলে মীরসরাইয়ের ঘটনাটি একটি কেসস্টাডি মাত্র। প্রকল্প বানিয়ে সরকারি অর্থ খরচ এবং তারপরও মূল সমস্যার সমাধান না হওয়ার ভুরি ভুরি উদাহরণ আছে। সবশেষ দেড় হাজার কোটি টাকা খরচ করে দেশে প্রথমবার যে ডিজিটাল জনশুমারি করা হয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে দেশে এখন মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬ জন। অথচ অনেক বছর ধরেই বলা হচ্ছে যে, দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটির বেশি। যে কারণে এই রিপোর্ট প্রকাশের পরপরই এ নিয়ে কঠোর সমালোচনা হচ্ছে। এমনকি খোদ সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন যে, 'সাত দিনব্যাপী চলা এই কর্মযজ্ঞে অনেকের মধ্যে দায়িত্বহীনতা পরিলক্ষিত হয়েছে। এ কারণে অনেকে গণনা থেকে বাদ পড়েছেন।' এবারের গণনায় অবহেলা হয়েছে বলেও তিনি স্বীকার করেন (প্রথম আলো, ২৯ জুন ২০২২)।

কথা হলো, দেড় হাজার কোটি টাকা খরচ করে যে শুমারি করা হলো, তা নিয়ে সারা দেশে কেন এত প্রশ্ন। মানুষ কেন এটা বিশ্বাস করছে না! শুধু কি পারসেপশন? অসংখ্য মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, তাদের কাছে গণনাকারী যাননি। তার মানে তাদের গণনা করা হয়নি। অথচ মাঝখান দিয়ে দেড় হাজার কোটি টাকা খরচ! এবার কি তাহলে যারা গণনায় বাদ পড়েছেন, তাদের গণনার জন্য আরেকটা প্রকল্প তৈরি করা হবে? 

অদ্ভুত বিষয় হলো, শুধু এই জনগণনা কিংবা লেভেলক্রসিংয়ের নিরাপত্তা নয়, পুকুর খনন, ঘাস চাষ, খিচুড়ি রান্না এমনকি চর ব্যবস্থাপনা দেখতেও সরকারি কর্মচারীদের বিদেশ সফরের জন্য প্রকল্প তৈরি করা হয়। অথচ নদীমাতৃক বাংলাদেশে চরের অভাব নেই। বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষ জানে কী করে খিচুড়ি রান্না করতে হয়। এই দেশের আনাচে-কানাচে ঘাসের অভাব নেই। তার মানে চারিদিকে প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পের বাহার।

সরকারের যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা একবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে একটি সরকারি ভবন দেখিয়ে জিজ্ঞেস করেছিলেন, 'বলেন তো আমীন এই ভবনে কতগুলো প্রকল্প আছে?' বললাম, জানি না। তিনি রসিকতা করে বললেন, 'এই ভবনে যত প্রকল্প আছে, এগুলোর ভারেই এটা একসময় ধসে পড়বে।'  তিনি একজন সৎ অফিসার। ফলে তিনি জানেন কত শত অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গৃহীত হয় এবং সেইসব প্রকল্পের নামে বিদেশি অর্থায়ন, ঋণ এবং দেশের মানুষের ট্যাক্সের পয়সার কী রকম শ্রাদ্ধ হয়। তার মতো অসংখ্য অফিসার আছেন যারা চোখের সামনে এইসব কর্মকাণ্ড দেখেন। কিন্তু কোনো প্রতিবাদ করার সাহস নেই। কারণ প্রতিবাদ করলে তাকে প্রকল্পবিরোধী, মানে উন্নয়নবিরোধী আখ্যা দিয়ে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করে রাখা হতে পারে। ফলে মান-সম্মানের ভয়ে চুপ থাকেন। চুপচাপ অবসরে চলে যান। 

কত ধরনের অদ্ভুত বিদেশ সফর থাকতে পারে, তার কয়েকটি নমুনা দেয়া যাক।

১. নেদারল্যান্ডসে গাছে পানি দিতে যাচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তা, বন্ধ চেয়ে রিট (ডেইলি স্টার, ৩১ জুলাই ২০২২)। খবরে বলা হয়, বিদেশে সফর বন্ধের প্রজ্ঞাপনের পরও ৩০টি জিও হয়েছে। এর মধ্যে ১১৪ জন কর্মকর্তা যাচ্ছেন বিদেশে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, নেদারল্যান্ডসে মেলায় যাবেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের লোক। তাদের মধ্যে কয়েকজন যাচ্ছেন গাছে পানি দেওয়ার জন্য। এটিকে 'মকারি' উল্লেখ করে এই ধরনের সফর বন্ধের জন্য হাইকোর্টে একটি রিট হয়েছে।

২. চর দেখতে কর্মকর্তাদের যুক্তরাষ্ট্র-অস্ট্রেলিয়া সফর (আজকের পত্রিকা, ২৯ জুন ২০২২)। খবরে বলা হয়, চরের মানুষের উন্নয়ন করতে ২০ জন সরকারি কর্মকর্তাকে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ায় পাঠিয়ে 'প্রশিক্ষিত' করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে ৯ জন ইতিমধ্যে অস্ট্রেলিয়া ঘুরে এসেছেন। বাকিরা শিগগির যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন। 'চর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট প্রজেক্ট ব্রিজিং (সিডিএসপি-বি)' নামে এই প্রকল্পে বরাদ্দ ১১ কোটি টাকা। প্রশ্ন হলো, যুক্তরাষ্ট্র বা অস্ট্রেলিয়ায় কি চর আছে, না ভূমিহীন মানুষ আছে? তাহলে প্রশিক্ষণের জন্য এসব দেশে কেন যেতে হবে? সাংবাদিকরা এ বিষয়ে প্রশ্ন করেও সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে সুস্পষ্ট জবাব পাননি। উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক সংকটজনিত কারণে সৃষ্ট রাজনৈতিক অস্থিরতায় সরকারের পতনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরে লাগাম টানার সরকারি ঘোষণার মাত্র তিন দিন আগে চর দেখতে যাওয়ার এই আদেশ হয়।

৩. পুকুর খনন শিখতে বিদেশ যাবেন ১০০ কর্মকর্তা (দৈনিক যুগান্তর, ০৪ মার্চ ২০২০)। খবরে বলা হয়, পুকুর ও খাল উন্নয়ন শিখতে বিদেশ সফরে যাবেন ১০০ কর্মকর্তা। প্রশিক্ষণের নামে এ সফর বাবদ সরকারের ব্যয় হবে ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তবে অনুমোদিত মূল প্রকল্পে বিদেশে প্রশিক্ষণের জন্য ২৪ জনের কথা বলা ছিল। সেখানে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। এখন নতুন করে ৭৬ জন কর্মকর্তা যোগ করার প্রস্তাব দেয়ায় বাড়তি ৬ কোটি ৬ লাখ টাকা ব্যয় হবে। এছাড়া বাড়ছে পরামর্শকের সংখ্যা ও এ খাতের ব্যয়ও। সেইসঙ্গে নানা কারণে বাড়ছে প্রকল্পের মোট ব্যয়।

৪. ঘাস চাষ শিখতে কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরে কাটছাঁট হচ্ছে (কালের কণ্ঠ, ২৪ নভেম্বর, ২০২০)। খবরে বলা হয়, ঘাস চাষাবাদের কৌশল শিখতে ৩২ কর্মকর্তার বিদেশ যাওয়ার প্রস্তাব নিয়ে ব্যাপক আলাপ-আলোচনার পর প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপাসন শেখ হাসিনা প্রশিক্ষণের নামে এই বিদেশ সফরে কর্মকর্তার সংখ্যা কমানো নির্দেশ দিয়েছেন। 'প্রাণীপুষ্টির উন্নয়নে উন্নত জাতের ঘাসের চাষ সম্প্রসারণ ও লাগসই প্রযুক্তি হস্তান্তর' শীর্ষক প্রকল্পে ৩ কোটি ২০ লাখ টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ টাকায় ঘাসের চাষ শিখতে বিদেশ যাবেন ৩২ কর্মকর্তা। তাদের প্রত্যেকের পেছনে ব্যয় হবে ১০ লাখ টাকা করে।

প্রসঙ্গত, এর আগে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রকল্পে খিচুড়ি রান্না শিখতে বিদেশ সফরের ব্যবস্থা থাকায় তা ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে মৎস্য চাষ প্রযুক্তি হস্তান্তর, কাজুবাদাম চাষ ইত্যাদি শিখতেও বিদেশ সফরের প্রস্তাব ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। অভিজ্ঞতা অর্জনের নামে অথবা অন্যান্য অজুহাতে সরকারি কর্মকর্তাদের এরকম বিদেশ সফর বছরব্যাপী চলতে থাকে। কালেভদ্রে দুয়েকটা আলোচনায় আসে। অতি সাধারণ কাজে দলবেঁধে বিদেশ ভ্রমণের ঘটনাও রয়েছে। প্রশ্ন হলো, কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরের কতটা সুফল পায় রাষ্ট্র?

গত ২৫ মে ডেইলি স্টারের সংবাদ শিরোনাম: সরকারি খরচে ইউরোপে শিক্ষা সফর থেকে ফিরেই অবসরে জ্যেষ্ঠ সচিব। বলা হয়, স্থানীয় সরকার বিভাগের (এলজিডি) জ্যেষ্ঠ সচিব হেলাল উদ্দিন আহমেদ সরকারি খরচে নেদারল্যান্ডস ও স্পেন সফর শেষে দেশে ফেরার পরদিনই এলপিআরে (অবসর গ্রহণের প্রস্তুতিমূলক ছুটি) চলে যান।

প্রশ্ন হলো, একজন আমলা হিসেবে কর্মজীবনের শেষে এই শিক্ষাসফর সরকারের কাজে আসবে কীভাবে? তার ১০ দিনের এই সফরের সম্পূর্ণ খরচ বহন করা হয়েছে দুটি সরকারি প্রকল্পের তহবিল থেকে। অবসরের দ্বারপ্রান্তে থাকা আমলাদের এই ধরনের তথাকথিত শিক্ষা সফর কি জনগণের অর্থের অপচয় নয়? তারও চেয়ে বড় কথা, এই ধরনের সফর নীতিগতভাবেও সমর্থনযোগ্য নয়। কিন্তু কে কাকে জবাবদিহি করবে?

অবশ্য এর একটি ব্যাখ্যা হেলাল উদ্দিন আহমেদ দিয়েছেন এভাবে যে, তার বয়স যেহেতু খুব বেশি নয়। ফলে অবসরে গেলেও তার এই অভিজ্ঞতা যেকোনো খাতে কাজে লাগানো যেতে পারে। যেমন ওয়াসা, এলজিইডিসহ কত সংস্থাই রয়েছে। তার মানে, সরকারি কর্মকর্তারা অবসরে গেলেও তারাই যেহেতু সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের পরিচালক বা কনসালট্যান্ট হন; বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেরও চেয়ারম্যান, প্রধান নির্বাহী কিংবা এরকম শীর্ষ পদে বসে যান—ফলে অবসরে যাওয়ার আগ মুহূর্তেও এইসব বিদেশ সফর জীবনের ওই বাকি অংশে কোনো না কোনো কাজে হয়তো লাগবে। আবার এদের অনেকেই নির্বাচন করে এমপি-মন্ত্রী হয়ে গেলে তখনও ওই 'জ্ঞান' কাজে লাগবে।

বাস্তবতা হলো, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যথেচ্ছ বিদেশ ভ্রমণের মারাত্মক প্রভাব পড়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাজকর্মে। অনেকে বিদেশে প্রশিক্ষণ নিয়ে আসেন যে মন্ত্রণালয়ের জন্য, দেশে ফেরার পর তাদের সেখান থেকে অন্যত্র বদলি হয়ে যাওয়ারও নজির আছে। সেক্ষেত্রে প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান সরকারের কোনো কাজে লাগে না।

তার অর্থ কি এই যে, সরকারি কর্মকর্তারা বিদেশ সফরে যাবেন না? নিশ্চয়ই যাবেন। কিন্তু সেটা হতে হবে যৌক্তিক এবং কী শেখার জন্য যাবেন, কারা যাবেন এবং ফিরে এসে তাদের সেই জ্ঞান সত্যিই কতটা কাজে লাগবে, সেটি স্পষ্ট থাকতে হবে। পুকুর কাটা কিংবা খিচুড়ি রান্না শিখতে যদি তাদের বিদেশ যেতে হয়, তাহলে এটা অন্যান্য প্রয়োজনীয় সফরকেও প্রশ্নবিদ্ধ করবে। করেছে।

পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, মানুষ এখন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বিদেশ সফর শুনলেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রল করে। যে জনগণের ট্যাক্সের পয়সায় ওনাদের বেতন হয়, তারাই যখন কোনো কিছু শিখতে বিদেশ সফরে যান বা প্রকল্প অনুমোদিত হয় এবং মানুষ যখন সেটি জেনে যায় তখন এটা নিয়ে তাদের রসিকতা করা ছাড়া কিছু করার থাকে না। কারণ অপ্রয়োজনীয় বিদেশ সফর ঠেকানোর সুযোগ জনগণের নেই।

বিষয়টা কি এরকম যে, যদি রেলক্রসিংয়ে লোকজন মারা না-ই যায়, তাহলে এইসব প্রকল্প গৃহীত হবে কী করে? বস্তুত সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বাংলাদেশ যেন একটি প্রকল্পরাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। এখানে একটার পর একটা দুর্ঘটনা ঘটবে, একটার পর একটা সমস্যা তৈরি হবে এবং একটার পর একটা প্রকল্প গৃহীত হবে। আবার ওই প্রকল্প বাস্তবায়িত হওয়ার পরেও সমস্যার কেন সমাধান হলো না, সেটা জানার জন্য আরেকটা নতুন প্রকল্প নেয়া হবে। এইভাবে চলবে জনগণের অর্থের শ্রাদ্ধ। অর্থাৎ প্রকল্পই যদি না থাকে, তাহলে রাজধানীসহ বড় শহরগুলোয় এই যে বিলাসবহুল সব ফ্ল্যাট গড়ে উঠছে, প্রতিটি শোরুমে যে কোটি টাকা দামের গাড়ি প্রতিনিয়ত ইশারা দিচ্ছে, সেগুলো কারা কিনবেন? কানাডার বেগমপাড়ার বাড়িগুলো কারা কিনবেন? মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম কারা বানাবেন? সুইস ব্যাংকে টাকা জমাবেন কে? অতএব প্রকল্প লাগবেই। এবং যত বেশি লোক বেঘোরে মরবে, প্রকল্পের সাইজ তত বড় হবে।

মূলত যারা বিদেশ সফরের নামে এ ধরনের অদ্ভুত প্রকল্প বানিয়ে রাষ্ট্রের তথা জনগণের পয়সার নয়ছয় করেন, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হয় না বলেই বছরের পর বছর ধরে এই ধরনের ঘটনা সংবাদ শিরোনাম হয় এবং তা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় রসিকতা হয়। এ পর্যন্তই। পরে আরেকটি নতুন ইস্যু এলে সোশ্যাল মিডিয়া সেই ইস্যু নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। ফলে জনগণের পয়সা নয়ছয়ের এইসব বড় ইস্যু মানুষ ভুলে যায়। প্রকল্প প্রস্তুতকারী এবং এইসব প্রকল্পের নামে বিদেশ সফর করা অফিসারগণও বহাল তবিয়তে থাকেন।


  • আমীন আল রশীদ: নেক্সাস টেলিভিশনের কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এডিটর।

এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.