‘সিনহার জন্য শোকগাঁথা’

মতামত

মোঃ জাহিদুর রহমান
06 August, 2020, 12:10 pm
Last modified: 06 August, 2020, 12:27 pm
কি নির্মম, কি অবিশ্বাস্য!! দীর্ঘদিন নিজের জীবন বাজি রেখে এসএসএফ-এর সদস্য হিসেবে দেশের প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা রক্ষার মতো চূড়ান্ত ঝুঁকিপূর্ণ দায়িত্ব পালন করা, দুর্ধর্ষ কমান্ডো ট্রেনিংপ্রাপ্ত, যে কিনা খালি হাতেও দুচারজন অস্ত্রধারীকে কুপোকাত করার কৌশল জানতো তেমনি এক বীরের জীবন প্রদীপ এভাবে নিভে গেল!!

দুনিয়ার সবচেয়ে ভারি বোঝা হচ্ছে পিতার কাঁধে সন্তানের লাশ। অবশ্যই এর চেয়ে ভারি আর যন্ত্রণাদায়ক বোঝা জগতে আর কিছু হতে পারে না। কিন্তু কখনও কখনও কোন কোন লাশের বোঝা এত ভারি হয়ে যায় যে, তা পিতা-মাতার শোককম্পিত কাঁধ ছাপিয়ে সমগ্র জাতির কাঁধে বিস্তৃত হয়ে পড়ে। সেই ভার বহন করতে গিয়ে পুরো জাতিকে ক্লান্ত হতে হয়।

এমনই এক অতিকায় ভারি লাশের বোঝা আমরা দুইদিন আগে অর্থাৎ ০২ জুলাই, ২০২০ তারিখ রোববার বাদযোহর বনানীর সামরিক কবরস্থানে বহন করে নিয়ে গিয়ে চিরনিদ্রায় শায়িত করালাম। কেন আমি এই লাশকে এত ভারি আর সমগ্র জাতির কাঁধের বোঝা হিসেবে আখ্যায়িত করলাম তার অবশ্যই যৌক্তিক কারণ আছে। কেননা যে মৃত্যু চরম অপ্রত্যাশিত, যে মৃত্যু ভয়ংকর কোন ভুল বা অন্যায়ভাবে সংঘটিত হয়, যে মৃত্যু একটি প্রবল প্রাণশক্তিতে ভরা তরুণ তাজা প্রাণের হৃদস্পনন্দন অকালে থামিয়ে দেয়, যে মৃত্যু একটি রুচিশীল-ভদ্র পরিবারের সাজানো-গোছানো স্বপ্নের বাগানকে তছনছ করে দেয়, যে মৃত্যু সমগ্র জাতির অন্তরকে প্রচণ্ডভাবে আলোড়িত করে সেই মৃত্যুর শোক এবং লাশের ভার বহনের দায়ও পুরো জাতির ঘাড়েই বর্তায়।

এই কথাগুলো আপনাদের কারো কাছে হয়তো বা অতি আবেগি মনের অনিয়ন্ত্রিত শব্দচয়ন বলে মনে হতে পারে! আমিও ভাবছি এসব কথা অতি আবেগের বানে ভেসে মনের গভীর থেকে বেরিয়ে আসছে কিনা! হতে পারে তাও সত্যি। তারপরেও সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান এর মতো আমাদের এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের কথা বলতে গিয়ে আমি শিক্ষক হিসেবে হৃদয়ের সবগুলো দুয়ার খুলে দিয়েই কিছু কথা বলতে চাই। কারণ আমার প্রিয় ছাত্র, আমাদের সবার অসম্ভব প্রিয় সিনহার এই মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা আমাকে এতটাই স্তম্ভিত ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করেছে যে, ওর জন্য কিছু লিখতে গিয়ে শুধু আবেগ নয়, বুকের গহীনে থরে থরে জমা হওয়া কান্নাগুলোকেও ঢেকে রাখতে বেগ পেতে হচ্ছে।

আমি নিশ্চিত জানি শুধু আমি নই, রাজউক কলেজের আমার যেসব সহকর্মী সিনহাকে পড়িয়েছে, ওকে চেনে, ওর বন্ধু, সহপাঠী, জুনিয়র, তাদের প্রত্যেকের অনুভূতি আজ ঠিক আমারই মতো। জন্ম-মৃত্যুর বন্ধনে আবদ্ধ এই জীবনে মৃত্যুর স্বাদ একদিন আমাদের সকলকেই পেতে হবে। এ নিয়ে কোনরূপ বিতর্ক বা প্রশ্নের অবকাশ নেই। যে মুহূর্তে পৃথিবীতে একটি শিশু ভূমিষ্ঠ হয়, ঠিক সেই মুহূর্তেই পৃথিবীতে আর একটি মৃত্যু নিশ্চিত হয়। আমরা হয়তো পরিবারে নতুন অতিথির আগমনের আনন্দের আতিশয্যে এতটাই আপ্লুত থাকি যে, তখন আর এত গভীর জীবন দর্শন আমাদের ভাবনায় আসে না, কিংবা বলা যায় নেতিবাচক কোন চিন্তা আমরা করি না। তবুও আমরা ভাবি কিংবা না ভাবি এটাই মানব জীবনের একমাত্র অনিবার্য সত্য। জীবনের আর যা কিছু আছে সব অনিত্য। কিন্তু তারপরেও জীবনের একটা স্বাভাবিক পরিণতির প্রত্যাশা কে না করে?

একটি সন্তান জন্মের পর থেকে বাবা-মা কত কষ্ট, কত ত্যাগ, কত স্বপ্ন আর কত শ্রম-ঘাম ব্যয় করে তার সন্তানকে যোগ্য মানুষ করে তোলে। পরিবারের জন্য, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য সুযোগ্য হয়ে ওঠা এমন কোন সন্তান যদি মর্মান্তিক কোন মৃত্যু কিংবা হত্যার শিকার হয় তাহলে সেটা পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের চরম বেদনার বিষয় হয়ে যায়।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর (অবঃ) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান এর মর্মান্তিক মৃত্যুর খবরটি এখন দেশ-বিদেশের অনেকেরই জানা হয়ে গিয়েছে। কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক দিয়ে কক্সবাজার আসার পথে টেকনাফ থানার বাহেরছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় আমাদের প্রিয় সিনহা। সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী রাত নয়টার দিকে পুলিশের নির্দেশ মেনে দুই হাত উঁচু করে গাড়ি থেকে নামার সাথে সাথে পর পর তিনটি গুলি করা হয় তাকে। এরপর রক্তাক্ত অবস্থায় প্রায় ৪৫ মিনিট রাস্তায় পড়ে কাতরাতে থাকে এবং দশটার দিকে একটি মিনি পিকআপে করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। আর তখন সব শেষ!!

কি নির্মম, কি অবিশ্বাস্য!! দীর্ঘদিন নিজের জীবন বাজি রেখে এসএসএফ-এর সদস্য হিসেবে দেশের প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা রক্ষার মতো চূড়ান্ত ঝুঁকিপূর্ণ দায়িত্ব পালন করা, দুর্ধর্ষ কমান্ডো ট্রেনিংপ্রাপ্ত, যে কিনা খালি হাতেও দুচারজন অস্ত্রধারীকে কুপোকাত করার কৌশল জানতো তেমনি এক বীরের জীবন প্রদীপ এভাবে নিভে গেল!!

আজ থেকে একুশ বছর আগে অর্থাৎ ১৯৯৯ সালে কুর্মিটোলা শাহীন স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এসএসসি পাশ করে একাদশ শ্রেণিতে রাজউক কলেজে ভর্তি হয়। একজন শিক্ষক হিসেবে শ্রেণিকক্ষে এবং কলেজ ক্যাম্পাসে ওকে যেমন দেখেছি তা শুধু বিশেষণবাচক শব্দ দিয়ে পুরোটা প্রকাশ করা সম্ভব নয়। ওদের সেকশনের এবং সমসাময়িক আরও অনেক ছাত্র-ছাত্রীকেইতো চিনতাম। তারা এক এক জন এক এক ধাঁচের। কেউ শান্ত, কেউ দুরন্ত, কেউ দুষ্টামির গুরু, কেউবা আবার অল্প বয়সেই বুদ্ধিজীবীর ভাব, তরুণ বয়সের ছেলে-মেয়েরা যেমন হয় আর কি। ভিন্ন ভিন্ন স্বভাব ও আচরণ নিয়ে সবাই আমাদের আদরে-শাসনে লালিত। কিন্তু শিক্ষকতার দীর্ঘ জীবনে দেখলাম যে ছাত্র বা ছাত্রীরা বেশি জ্বালিয়েছে তাদেরকেই বেশি চিনি এবং ওদের কথাই বেশি মনে হয়। আর যে ছাত্র বা ছাত্রী লেখাপড়ায়, আচার-আচরণে,শৃংখলায় এবং ব্যক্তিত্বে ছিল সাধারণের চেয়ে উচ্চ স্তরের, অবশ্যই তারা আমাদের অন্তরে বিশেষ স্থান দখল করে আছে। সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান আমাদের রাজউক কলেজের তেমনি এক উজ্জ্বল নক্ষত্র।

আমার মোটামুটি তরুণ বয়সের ছাত্র ছিল সিনহা। এখনও স্পষ্ট মনে পড়ছে ওকে দেখতে দেখতে আমার মনের মধ্যে জাগ্রত হওয়া একটি ভাবনা। ক্লাশে এবং কলেজ ক্যাম্পাসে ওর অতটুকুন বয়সেই অসামান্য ব্যক্তিত্বের বিচ্ছুরণ দেখে আমি প্রায়ই প্রত্যাশা করতাম আল্লাহ যদি আমাকে এমন একটি সন্তান দিত। লেখাপড়ার মূল কর্তব্য যথার্থভাবেই ঠিক রেখে কলেজের শৃংখলা রক্ষায় দুই বছর নিরবিচ্ছিন্নভাবে গুরুদায়িত্ব পালন করেছে। কলেজ বিএনসিসি কন্টিনজেন্টের কমান্ডার, এ্যাসিসটেন্ট কলেজ ক্যাপ্টেন, কলেজের কালচারাল প্রোগ্রামগুলো অর্গানাইজ করা, খেলার মাঠে দুরন্ত গতির ছোটাছুটি কোথায় ছিল না সিনহা!!

আমাদের বাস্কেটবল গ্রাউন্ডে ছিপছিপে গড়ন আর প্রাণশক্তিতে ভরপুর সিনহাকে আটকানো প্রতিপক্ষের জন্য ছিল প্রায় অসম্ভব। টেবিল টেনিস খেলতো কোন ম্যাজিশিয়ানের ম্যাজিক দেখানের মতো। অসাধারণ এক নেতৃত্বগুণ নিয়ে জন্মেছিল আমাদের সিনহা। কলেজের শৃক্সক্ষলা রক্ষার কাজে ও কখনোই কোন জুনিয়য়রের প্রতি কোন নিষ্ঠুর আচরণ করেছে এমনটা শুনিনি। অথচ জুনিয়ররা তাদের সিনহা ভাইকে খুব ভয় পেতো, কিন্তু সে ভয় ছিল নিশ্চিতভাবেই শ্রদ্ধা ও সম্মান থেকে। কারণ যে কারো সমস্যা সে বুদ্ধিদীপ্ত কৌশল দিয়েই সমাধানে ছিল অসামান্য পারদর্শী।

সিনহার প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখা মূলত রাজউক কলেজেই শেষ হয়। এরপর সে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে তার পেশাগত জীবনে অনেক কোর্স করেছে বা ডিগ্রি নিয়েছে। শিক্ষক হিসেবে আমার অভিজ্ঞতা থেকে তার কলেজ জীবনের যে বৈশিষ্টগুলোর কথা বললাম এগুলো আসলে অনেক কম বলেছি। ছেলেটি যে আসলে কী ধরনের বিরল স্বভাবের ও গুণের অধিকারি ছিল তা কোন ভাবেই বলে শেষ করা যাবে না। এটা কেবল ওর পরিবার, আমরা যারা ওকে চিনতাম, ওর বন্ধুমহল আর সহকর্মীরাই জানে ওর অসাধারণ মানবীয় গুণাবলী সম্পর্কে।

সিনহাকে চিরদিনের জন্য কবরে শায়িত করার পূর্বে ওর শোকজর্জরিত মা নাসিমা আক্তার তার ছেলের সম্পর্কে কতগুলো তথ্য দিয়েছে যা এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। মায়ের প্রতি নিখুঁতভাবে দায়িত্বপালন করা, দেশভ্রমণ করা, বই পড়ার প্রচণ্ড নেশা, সাগর সৈকতে বসে বই পড়তে পছন্দ করা, ঘরের সবকিছু গুছিয়ে রাখা ইত্যাদি অসংখ্য ইতিবাচক ও মানবিক গুণের পরিচয় আমরা জানতে পেরেছি। সিনহার বাবা মোঃ রাশেদ খান ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলায় সিনহাদের আদিনিবাস। অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব হিসেবে কর্মরত সিনহার বাবা ২০০৭ সালে মারা যান।

বাবা মারা যাবার পর মাত্র ২৩ বছর বয়স থেকেই মা মিসেস নাসিমা আক্তার আর দুই বোনকে নিয়ে পরিবারের যাবতীয় দায়িত্ব একজন দক্ষ নাবিকের মতো পালন করেছে। অর্থাৎ ঘরে এবং বাইরে সর্বত্র মেজর (অবঃ) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান রেখে গেছে শৃংখলা এবং কর্তব্যপরায়ণতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস উত্তরার টার্কিস হোপ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের একজন সিনিয়র ফ্যাকাল্টি আর ছোটবোন এক্স রাজুকিয়ান ফারাহ ফেরদৌস অমেরিকায় সপরিবারে স্থায়ী হয়েছেন। ওর বড় বোন শারমিন ফেরদৌসকে আমি গতকাল টেলিফোনে কথা বলতে বলতে এক পর্যায়ে বলেছিলাম আপনি সিনহা সম্পর্কে একবাক্যে মূল্যায়ণ করুন। উনার উত্তর ছিল, 'সিনহা ছিল আমাদের সবার শক্তির উৎস, মোটিভেশনের উৎস।' শোকাহত ও বিপর্যস্ত মা আর দুইবোনের এখন একটাই চাওয়া এই নিষ্ঠুর হত্যার উপযুক্ত বিচার। একথা সবাই জেনেছে যে পুলিশের গুলিতে মেজর(অবঃ) সিনহার নির্মম মৃত্যু হয়েছে।

এই অনাকাংখিত মৃত্যুর প্রেক্ষিতে চট্টগ্রামের একজন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারকে প্রধান করে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। দশ পদাতিক ডিভিশনের জিওসির একজন প্রতিনিধি কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন। সাত কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত সম্পন্ন করে রিপোর্ট প্রদান করতে বলা হয়েছে। শামলাপুর ফাঁড়ির বিশ জন পুলিশকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমারকেও প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ ০৫ জুলাই দুপুরে সেনা প্রধান এবং পুলিশের আইজি টেকনাফের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সেখানে সেনাপ্রধান এবং আইজি অত্যন্ত দায়িত্বশীল এবং পেশাদারি ভাষায় কথা বলেছেন যা এই মুহূর্তে খুব প্রয়োজন ছিল। গতকাল সকালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিহত সিনহার মাকে ফোন করে সান্তনা দিয়েছেন এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিতের আশ্বাস দিয়েছেন।

সেনাবাহিনীর এমন মর্যাদাসমম্পন্ন চাকরি থেকে স্বেচ্ছা অবসর নিয়ে মুক্ত জীবনের প্রত্যাশায় বিভোর হয়েছিল আমাদের সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। উদ্দেশ্য বিশ্বভ্রমণ করা এবং চলতে চলতে ইউটিউবের জন্য ট্রাভেলিং-এর উপর ভিডিও তৈরি করা। কী অসাধারণ উদ্ভাবনী চিন্তা, কী অতুলনীয় স্বপ্নবাজ এক দুরন্ত যুবক!! সিনহা তার লক্ষ্য সফল করতে পারলে হয়তো বাংলাদেশ একজন বেয়র গ্রিলস পেয়ে গর্বিত হতো। এই ধরণের একটি ডকুমেন্টারির কাজ করতে গিয়েই টেকনাফে পুলিশের হাতে নিহত হলো। বিশ্বভ্রমণের বিশাল এক স্বপ্ন চোখে নিয়ে জৌলুস আর প্রতিপত্তির জীবন ত্যাগ করে বিশ্বনাগরিকের কাতারে এসে সামিল হয়েছিল যে, সেই সদা হাস্যোজ্জ্বল প্রাণবন্ত তরুণ এক অতি সাধারণ নির্বোধের হাতে পড়ে এই অনন্তলোকে চলে গেল।

সিনহার মা মিসেস নাসিমা আক্তার তার প্রিয় সন্তানকে শহিদ হিসেবে আখ্যায়িত করে সন্তানের হত্যার বিচার দাবী করেছেন। তার এই দাবীর সাথে আমরাও একমত হয়ে জোর দাবী করছি যেন তদন্তের মাধ্যমে পুঙ্ক্ষানুপুঙ্খভাবে সত্য বেরিয়ে আসে। অপরাধী যেই হোক তাকে যেন আইনানুগভাবে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হয়।

রাষ্ট্রের সব অঙ্গ এবং বাহিনীগুলোর নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব ও মর্যাদা রয়েছে আর সেভাবেই যে যার পেশাগত কর্তব্য পালন করবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা। গুটিকতক লোকের অপকর্মের জন্য একটি বাহিনী কলঙ্কিত হবে এটা কারো কাম্য নয়। আর বন্দুকযুদ্ধ এবং পকেটে মাদক পাওয়া গিয়েছে এই পাণ্ডুলিপি এখন বস্তাপঁচা গল্পে পরিণত হয়েছে। সুতরাং সংশ্লিষ্টরা সমাজের নিরাপত্তা, শান্তি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে সবকিছু গভীর চিন্তার মাধ্যমে বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিন। তাহলে সমাজ, রাষ্ট্র ও জনগণের মঙ্গল নিশ্চিত হবে।

শহিদ মেজর(অবঃ) সিনহার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। পরপারে শান্তিতে ঘুমাও প্রিয় সিনহা।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ উত্তরা, ঢাকা

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.