প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রাকৃতিক সমাধান ও করণীয়

মতামত

ড. রঞ্জন রায়
26 August, 2020, 01:40 pm
Last modified: 26 August, 2020, 01:47 pm
টেকসই দুর্যোগ মোকাবেলা অনেকটাই নির্ভর করছে আমরা কতটা জোর দিচ্ছি প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধানের উপর।

সারা পৃথিবী যখন করোনা জ্বরে মারাত্মকভাবে আক্রান্ত, তখনও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়াল থাবা পৃথিবীর অনেক মানুষকে বিপর্যস্ত করছে। বিজ্ঞানীদের সকল প্রজেকশন দেখাচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনে জলবায়ু-সম্পর্কযুক্ত দুর্যোগের সংখ্যা ও তীব্রতা বাড়ছে, যা মহামারির ক্রান্তি-লগ্নে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এবং জনস্বাস্থ্যের রেসপন্সকে ছেদ করছে। করোনা ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পারফেক্ট কম্বিনেশনে উদ্ভূত কমপাউন্ড রিস্ক অর্থনীতি, জীবনযাত্রা, ব্যবসা, এবং শিক্ষাকে নজিরবিহীনভাবে প্রভাবিত করছে।

একাধিক রিপোর্ট (যেমন, গ্লোবাল ওর্য়ামিং অফ ১.৫°সেলসিয়াস) অবশ্য আগে থেকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে একবিংশ শতাব্দীর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হবে বন ধংস, জীব বৈচিত্র্যের ক্ষয়, ক্লাইমেট কেওয়াস (বিশৃঙ্খলা), এবং গ্লোবাল মহামারি; কোভিড-১৯ হয়ত এসবের নব্য বহিঃপ্রকাশ, যা 'প্লানেটারি ইমারজেন্সির' ভয়াবহ অর্থ আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।

বাংলাদেশে করোনাকালে বন্যা, এ যেন মরার উপর দেশে খাঁড়ার ঘা! কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতির পর এখন দেশের দক্ষিণাঞ্চল বন্যার পানিতে ভাসছে। অথচ, আম্পানের প্রভাবে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ এখনো ভুগছে। তবে, এইসব পরিস্থিতি শুধু বাংলাদেশেই না, বরং করোনাকালে সারা বিশ্বেই দুর্যোগ লেগেই আছে।

পশ্চিমবঙ্গ আম্পানে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর, ইন্ডিয়ার বিভিন্ন প্রদেশ বন্যায় আক্রান্ত। এপ্রিলে, পুরো দক্ষিণ প্যাসিফিক আইল্যান্ড ক্যাটাগরি ৫ ট্রপিক্যাল সাইক্লোনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়। করোনাকালে জিম্বাবুয়েতে নজীরবিহীন খরা, সোমালিয়ায় বন্যা, এবং অস্ট্রেলিয়ায় ভয়ানক খরা ও দাবানল। একইভাবে আমেরিকার ফ্লোরিডায় গরম চরম-মাত্রা অতিক্রম করছে, আবার গালফ কোস্টে হ্যারিক্যান আঘাত করছে। অন্যদিকে, আমেরিকার আরকান্সাস, লুসিয়ানা, ও মিসিসিপি প্রদেশ বন্যার কবলে। একইভাবে, করোনাকালে পৃথিবীর  আরও অনেক দেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত।

মানুষ প্রকৃতির ছোট্ট একটি অংশ। অথচ মানুষ যে হারে প্রকৃতিকে করায়ত্ত করার (বৃথা) চেষ্টা করেছে তা অচিন্তনীয়। করোনা ভাইরাসকে অনেকে বলছেন "প্রকৃতির সমুচিত জবাব," যার জন্য মানুষই দায়ী। কারণ, মানুষ প্রকৃতি ও প্রাণীজগতকে শোষণ করছে। করোনা ভাইরাসের টিকা আজ না হয় কাল আসবেই, কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন রক্ষার্থে কোন টিকা নেই। তাই জলবায়ু নিয়ে আমাদেরকে ভাবতেই হবে, বিশেষকরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বাঁচার জন্য।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যেমন বন্যা, খরা, সাইক্লোন, এবং হিট-ওয়েভ, মোকাবেলায় প্রধানত স্ট্রাকচারাল এবং নন-স্ট্রাকচারাল (উদাহারনসরূপ বলা যায়, জমি ব্যবহারের পরিকল্পনা, বন্যা মনিটরিং ও জনগণকে সজাগকরণ) পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়। স্ট্রাকচারাল পদ্ধতি দুই প্রকার: সফট এবং হার্ড সল্যুশন। সফট সল্যুশন হচ্ছে প্রকৃতি-ভিত্তিক, গ্রিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার, বা নেচার-বেইসড। আর হার্ড সল্যুশন হচ্ছে গ্রে ইনফ্রাস্ট্রাকচার, যেমন ড্রেনেজ, ডেম (বাঁধ), এবং ক্যানেল (ইঞ্জিনিয়ারিং স্ট্রাকচারস)। আরও আছে হাইব্রিড সল্যুশন, যা মূলত  সফট এবং হার্ড সল্যুশনের কম্বিনেশন, যেমন ডাইকের সঙ্গে বাস্তুসংস্থান পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং ম্যানগ্রোভ সংরক্ষণের সঙ্গে লেভি (বন্যা প্রতিরোধ করার জন্য নদীতীরে নির্মিত মাটির বাঁধ)।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা বা কমানোর জন্য প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধানের প্রয়োগ বাড়াতে, যদিও এই সমাধানগুলোর ধারনা অপেক্ষাকৃত নতুন। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কন্সারভেশন অফ নেচার (আইইউসিএন) জোরেশোরে বলছেন "প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রাকৃতিক সমাধান খোঁজার দিকে মনোযোগ দেওয়া অত্যাবশ্যক"। একইভাবে, "বাংলাদেশ ডেলটা প্লান ২১০০" ও প্রকৃতি-ভিত্তিক সল্যুশনের কথা হালকাভাবে বলছে।

প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধান বলতে সাধারণত প্রকৃতি বা বাস্তুসংস্থান (ইকোসিষ্টেম) কে ব্যবহার করে দুর্যোগ মোকাবেলা করার প্রক্রিয়াকে বুঝায়। এই ধরুন, বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য নদী, খাল,ও বিল সচল রাখা এবং সাইক্লোন প্রতিরোধে বনাঞ্চল (যেমন, সুন্দরবন) রক্ষা ও বাড়ানো। বিজ্ঞানীরা এক গবেষণায় হিসাব করে দেখিয়েছেন যে, বার্বাডোজে এক ইউএস ডলার মেরিন পার্কে ইনভেস্ট করলে হ্যারিকেনের ক্ষয়ক্ষতি বিশ ডলার কমানো যায়। 

প্রকৃতি-ভিত্তিক, গ্রিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার, বা নেচার-বেইসড সল্যুশনের সামাজিক (জনস্বাস্থ্যের উন্নয়ন), অর্থনৈতিক (ট্যুরিজম ও এনার্জি সেভিংস) ও পরিবেশগত (কার্বন স্টোরেজ ও হিট রিডাকশন) উপকারিতা বিশাল। এছাড়া এইসব সল্যুশনের কো-বেনেফিট (সহ-উপকারিতা) বিরাট, যা ক্লাইমেট একশন এজেন্ডাকে (অভিযোজন ও প্রশমিতকরণ) অর্ন্তভুক্ত করে, প্রাকৃতিক দূর্যোগের ঝুঁকি কমায়, এবং জীব বৈচিত্র্যের সংরক্ষণ বাড়ায়।

আবার নেচার-বেইসড সমাধানগুলো বায়ু, পানি ও শব্দ দূষণ রোধ করে। বাংলাদেশের মত গরিব দেশে এইসব স্ট্রাটেজি বেশি দরকার, কারণ, আমাদের গ্রে ইনফ্রাস্ট্রাকচারে ইনভেস্ট করার সীমাবদ্ধতা। তাড়াছা, জলবায়ু পরিবর্তনের এই প্রাক্কালে গ্রে ইনফ্রাস্ট্রাকচার দিয়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ পুরোপুরি মোকাবেলা করা যাবে না, এটা একপ্রকার প্রমাণিত।

ওয়ার্ল্ড ব্যাংক দেখিয়েছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা বা কমানোর জন্য পৃথিবীব্যাপী প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধানের উপর ইনভেস্টমেন্ট বেড়েই চলছে।  ২০১২-২০১৮ অর্থ বছরে, বন্যা ও বন্যার প্রভাব কমানোর জন্য, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক নেচার-বেইসড সমাধানের উপর ১.২ ইউএস বিলিয়ন ইনভেস্ট করেছে (৩৪ প্রজেক্টে)। টাইফুন হাইয়ানের পর, ফিলিপিন্স সরকার, ম্যানগ্রোভ ও প্রাকৃতিক বীচ বন সংরক্ষণে ২২ মিলিয়ন ইউএস ডলার বিনিয়োগ করেছে। ২০১১ সালের ভয়াল ভূমিকম্প ও সুনামির পর, জাপান সরকার উপকূলবর্তী বন সম্প্রসারনে প্রায় ২.৫ বিলিয়ন জাপানিজ ইয়েন ব্যয় করেছে।

ওয়ার্ল্ড রিসোর্স ইন্সটিটিউটের হিসাব মতে ভিয়েতনাম উপকূলীয় বন্যা নিয়ন্ত্রণে ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের পুনঃ-প্রতিষ্ঠায় গুরুত্ব দিয়েছে, যা প্রায় ২১৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার রক্ষা করবে। সারফেস ফ্লাডিং নিয়ন্ত্রণে, আরবান ডিজাইনে গ্রিন ইনফ্রাস্ট্রাকচারকে প্রাধান্য দিয়ে, চায়না ৩০ টি স্পঞ্জ সিটি তৈরিতে বিশাল অংকের বিনিয়োগ করছে। শহরের বন্যা নিয়ন্ত্রণে, জার্মানিও চায়নার পথে হাঁটছে।  আমাদের দেশের সঙ্গে খাপ খায় এমন প্রকৃতি-ভিত্তিক সল্যুশনের দিকে আরও বেশী বেশী বিনিয়োগ করা উচিত।

প্রাকটিক্যালী কি কি পদক্ষেপ নেওয়া অত্যাবশ্যক? এমন প্রশ্নের জবাবে বড়দাগে বলতে হয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যেমন বন্যা, নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ ও সঠিক বাস্তবায়ন দরকার। উদাহারনসরূপ বলা যায়, নদীর নাব্যতা বাড়ানো। নদীর গতিপথ পরিষ্কারের জন্য উন্নত প্রযুক্তিতে ড্রেজিং করে নদীর গতিপথে জমে থাকা পলি অপসারণ করে নদীর নাব্যতা ও পানি ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি করে দরকার। নদীর নাব্যতা বাড়ানো কোথায় হবে ও কিভাবে হবে তা সঠিক মূল্যায়নের ভিত্তিতে করতে হবে। এক্ষেত্রে, বিষয়ভিত্তিক গবেষণা ও প্রযুক্তির মধ্যে সমন্বয় অত্যাবশ্যক। এক্সপার্টরা বলেছেন, গভীরতা বাড়ানোর জন্য নদীর "প্রাকৃতিক শক্তিকে" ব্যবহার করতে হবে।

বন্যা ও জলাবদ্ধতার যে কারণগুলো মানুষের সৃষ্টি, তার সমাধানে সরকারের ধারাবাহিক পদক্ষেপ দরকার। বন্যা নিয়ন্ত্রণে নদী, খাল, বিল, হাওড়, ও অন্যান্য জলাভূমি দখলমুক্ত করা ছাড়া গত্যন্তর নেই। শহরের আশেপাশে জলাভূমি ভরাট করে পানিপ্রবাহের স্বাভাবিক পথ রোধ করে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীসহ অনেক জেলা শহরে বন্যা  নিয়ন্ত্রণে অসম্ভব। শহরে জলাবদ্ধতা কমাতে হলে এলাকাভিত্তিক সমাধান না খুঁজে পুরো নগরী এবং আশপাশের এলাকার জন্য পরিকল্পনা, সঠিক নকশা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা দরকার। মোদ্দা কথা, হল বন্যা নিয়ন্ত্রণ নয়, সমাধান খুঁজতে হবে ব্যবস্থাপনায়।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৫০টির ওপরে অভিন্ন নদী আছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণে তিস্তা-গঙ্গাসহ যৌথ নদীগুলোর পানি বণ্টনের বিষয়কে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া অত্যাবশ্যক। ফারাক্কা বাঁধের কারণেই বাংলাদেশ শুষ্ক মৌসুমে খরা এবং বর্ষাকালে বন্যার কবলে পতিত হয়। ভারত সীমান্তে শুধু ফারাক্কা বাঁধই নয়, তিস্তাসহ প্রায় সবকটি নদীর অবকাঠামোগত উন্নয়ন মনিটরিং করা দরকার।এক্ষেত্রে ওয়াটার ডিপ্লোম্যাসি আরও জোরদার করা বাঞ্ছনীয়।

বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য পলিসি-প্রাকটিস গ্যাপটা কমানো জরুরি। পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিদ্যমান নীতিমালার প্রয়োগ ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো শক্তিশালী করা দরকার। যেমন, জাতীয় পানি নীতি, ১৯৯৯ তে বর্ণিত অংশীদার ভিত্তিক পানি ব্যবস্থাপনাসহ বেশিভাগ সুপারিশ বাস্তবায়িত হয়নি। ফ্লাড একশন প্লান বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় অর্থায়ন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ বিষয়ের উপর কম গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। প্রথাগত ব্যবস্থার বাইরে গিয়ে, এদেশে বন্যা ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তির সঙ্গে অর্থনীতি ও সমাজবিজ্ঞানেরও প্রয়োগ দরকার।

বন্যা নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে বড় পরিকল্পনা "ডেলটা প্লান ২১০০" প্রস্তুত করার প্রায় দুই বছর হচ্ছে, এখনও পুরোপুরি বাস্তবায়ন শুরু হয়নি। এই প্লান বাস্তবায়নে, সরকার ওয়ার্ল্ড ব্যাংক হতে ২ বিলিয়ন ইউএস ডলার পাওয়ার জোড় তৎপরতা চালাচ্ছে এবং গ্রিন সিগন্যালও পেয়েছে। এই অভিযোজন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রকৃতি-ভিত্তিক সল্যুশনের উপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত। অন্যান্য স্ট্রাটেজি ও পলিসির মত, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে জাতীয় পর্যায়ের অভীষ্ট লক্ষ্য, যেমন ২০৩০ সালের মধ্যে (ক) চরম দারিদ্র দূরীকরণ, (খ) উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জন, এবং (গ) একটি সমৃদ্ধ দেশের মর্যাদা অর্জন সম্ভব হবে না।

সারকথা হল, টেকসই দুর্যোগ মোকাবেলা অনেকটাই নির্ভর করছে আমরা কতটা জোর দিচ্ছি প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধানের উপর। আইপিসিসি'র পঞ্চম আসেসমেন্টের প্রতিবেদন অনুসারে জলবায়ুজনিত দুর্যোগের কারণে বাংলাদেশের সামনে অপেক্ষা করছে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। এই দুর্যোগ মোকাবেলায় সফল না হলে নিরাপদ, জলবায়ু পরিবর্তনে অভিঘাত-সহিষ্ণু সমৃদ্ধ বদ্বীপ গড়ে তোলা সম্ভব হবে না। 

  • লেখক: অধ্যাপক, কৃষি সম্প্রসারণ এবং ইনফরমেশন সিষ্টেম বিভাগ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা-১০২৭।
     

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.