প্রতারণা থেকে ব্ল্যাক ম্যাজিক! বিচ্ছেদের পর যেভাবে প্রাক্তনের প্রতি ক্ষোভ উগড়ে দেন এই তারকারা

বিনোদন

টিবিএস ডেস্ক
12 May, 2022, 03:25 pm
Last modified: 12 May, 2022, 03:51 pm
‘‘আমি আবার ওর (কারিনা) সঙ্গে কাজ করতে চাই। আমি মনে করি আমার প্রযোজক যদি আমাকে গরু বা মহিষের সঙ্গেও প্রেম করতে বলেন, তা হলে তাও আমাকে করতে হবে। কারণ অভিনেতা হিসেবে সেটাই আমার কাজ।"

সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার পর বেশিরভাগ তারকাই তাদের প্রাক্তন সম্পর্কে জনসমক্ষে বিশেষ কিছু বলেন না। মুখোমুখি দেখা হয়ে গেলেও অনেকক্ষেত্রেই একে অপরকে এড়িয়ে যাওয়াতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। 

তবু বলিউডে জনাকয়েক এমন তারকা আছেন যারা সম্পর্কের বিচ্ছেদের পর প্রাক্তনের উপর সমস্ত রাগ এবং ক্ষোভ জনসমক্ষেই প্রকাশ করেছেন। জেনে নিন তেমনই কয়েকজন তারকার কথা-  

অক্ষয় কুমার- শিল্পা শেঠি

এই তালিকায় প্রথমেই যার নাম রয়েছে তিনি অভিনেতা অক্ষয় কুমারের প্রাক্তন প্রেমিকা শিল্পা শেঠি। বলিউডের 'খিলাড়ি' টুইঙ্কল খান্নার সঙ্গে বিয়ে করার আগে চুটিয়ে প্রেম করতেন শিল্পার সঙ্গে। তারা বিয়ে করবেন বলেও কানাঘুষা শোনা যেত। কিন্তু হঠাৎই শিল্পাকে ছেড়ে টুইঙ্কলের সঙ্গে প্রেম শুরু করেন অক্ষয়। অক্ষয়-টুইঙ্কলের প্রেমের রসায়ন প্রকাশ্যে আসতেই রেগে আগুন হন শিল্পা। তিনি দাবি করেন, অক্ষয় তাকে ঠকিয়েছেন। জনসমক্ষেই দুষতে শুরু করেন অক্ষয়কে।

সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ''অক্ষয় আমাকে ব্যবহার করেছে এবং অন্য একজনকে পাওয়ার পর নিজের সুবিধামতো আমাকে জীবন থেকে বাদ দিয়েছে। আমার রাগ একমাত্র অক্ষয়ের উপরেই। আমি নিশ্চিত সে ভবিষ্যতে কর্মফল পাবে। এত তাড়াতাড়ি অতীত ভুলে যাওয়া সহজ নয়। কিন্তু আমি এগিয়ে যাওয়ার শক্তি পেয়েছি। তবে আমি আর কখনও অক্ষয়ের বিপরীতে কোনও সিনেমায় কাজ করব না।''

শিল্পা আরও জানান, 'ধাড়কান' সিনেমায় জুটি বেঁধে অভিনয় করার সময় টুইঙ্কলের সঙ্গে অক্ষয়ের সম্পর্কের বিষয়ে জানতে পারেন তিনি। কিন্তু সিনেমার শ্যুটিং চলাকালীন টুঁ শব্দ করেননি শিল্পা। তাদের সম্পর্কের কারণে যাতে প্রযোজকদের হয়রানির শিকার না হতে হয় তাই শ্যুটিং শেষ হওয়া অবধি কষ্ট চেপে রাখার সিদ্ধান্ত নেন বলেও জানান শিল্পা।

জ্যাকলিন ফার্নান্দেজ- সাজিদ খান

বলিউডে পা দেওয়ার পরই অভিনেত্রী জ্যাকলিন ফার্নান্দেজের নাম জড়িয়ে পরে পরিচালক সাজিদ খানের সঙ্গে, কিন্তু শীঘ্রই তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এরপরই সাজিদ জানান, জ্যাকলিন তাকে খুব বিরক্ত করতেন। আর সেটাই তাদের বিচ্ছেদ হওয়ার প্রধান কারণ।

সাজিদ জানান, ২০১৩ সালে ইতি হলেও তাদের সম্পর্কে তিক্ততা শুরু হয়েছিল ২০১২ সালের শেষ থেকেই। জ্যাকলিনের কাজে বাগড়া দেওয়া স্বভাবের জন্য তিনি মন দিয়ে কাজ করতে পারছিলেন না বলেও সাজিদ জানান। সাজিদের পরিচালনায় তৈরি 'হিম্মতওয়ালা'-র খারাপ ব্যবসার জন্যও তিনি জ্যাকলিনকে দায়ী করেন।

প্রীতি জিনতা- নেস ওয়াদিয়া

শুধুই কি ক্ষোভ প্রকাশ, প্রীতি জিনতা এগিয়ে আরও এক ধাপ। তিতিবিরক্ত হয়ে প্রাক্তন প্রেমিক তথা ব্যবসায়ী নেস ওয়াদিয়ার বিরুদ্ধে থানা-পুলিশও করেছিলেন অভিনেত্রী। পুলিশের কাছে অভিযোগ করে তিনি জানান, নেস নাকি তাকে হুমকি দিতে শুরু করেছিলেন।

তিনি বলেন, ''নেস আমাকে দুনিয়া থেকে গায়েব করে দেওয়ার ভয় দেখাত। নেস নিজেকে খুব শক্তিশালী ব্যক্তি বলে প্রমাণ করার চেষ্টা করতেন। আমি আমার জীবনে শান্তি চেয়েছিলাম বলে অনেক দিন মুখ বুজে সব সহ্য করেছি। খুব স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করেছি। কিন্তু মুম্বাইয়ে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে নেস আমাকে মারধর করার পর আমি আর চুপ থাকতে পারিনি। মৃত্যুভয় আমাকে গ্রাস করেছিল।''

এর পরপরই নেসের সঙ্গে সম্পর্কে ইতি টেনেছিলেন প্রীতি।

কারিনা কাপুর- শাহিদ কাপুর

কারিনা কাপুরের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তাকে ছেড়ে কথা বলেননি শাহিদ কাপুর। জনসমক্ষে কারিনাকে 'পশু'র সঙ্গেও তুলনা করেন শাহিদ।

তিনি বলেন, ''আমি আবার ওর (কারিনা) সঙ্গে কাজ করতে চাই। আমি মনে করি আমার প্রযোজক যদি আমাকে গরু বা মহিষের সঙ্গেও প্রেম করতে বলেন, তা হলে তাও আমাকে করতে হবে। কারণ অভিনেতা হিসেবে সেটাই আমার কাজ।"

তবে শাহিদের এই মন্তব্য খুবই অসম্মানজনক বলে মনে করেছিলেন অনেকে। 

অমৃতা সিংহ- সাইফ আলি খান

প্রকাশ্যে প্রাক্তন স্ত্রী অমৃতা সিংহের উপরে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন সাইফ আলি খানও। ঠিক কী কারণে অমৃতার সঙ্গে তার ছাড়াছাড়ি হয়েছিল? জবাবে সাইফ বলেন, ''অভিনেতা হিসেবে আমি মূল্যহীন বলে আমাকে সবসময় খোঁটা দেওয়া হত।''

অমৃতা তার মা এবং বোনকেও কটুক্তি করতেন বলে সাইফ দাবি করেছিলেন। বিষয়টি তার কাছে অসহ্য হয়ে দাঁড়ালে এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেন বলে জানান তিনি। 

কঙ্গনা রানাওয়াত- হৃতিক রোশন 

কঙ্গনা রানাওয়াত এবং হৃতিক রোশনের সম্পর্ক নিয়ে বলিউডের অলিগলিতে নানা বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। তবে বিতর্ক ব্যক্তিগত আক্রমণে রূপ নেয় তাদের বিচ্ছেদের পর। তিক্ততা এতটাই মাত্রা ছাড়িয়েছিল যে হৃতিক একবার মন্তব্য করেছিলেন, কঙ্গনার সঙ্গে প্রেম করার চেয়ে নাকি পোপের সঙ্গে প্রেম করা অনেক ভাল।

তাদের বিচ্ছেদ-বিতর্ক নিয়ে কথা বলার সময় হৃত্বিক মন্তব্য করেন, ''অনেক গুজব ছড়াচ্ছে। একজন বোকা মানুষও বলতে পারবে যে এই গুজবগুলো কোথা থেকে আসছে। আমি জানি না কেন প্রাক্তনরা দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য এ রকম নির্বোধের মতো কাজ করে।'' 

'কুইন' কঙ্গনার সঙ্গে নাম জড়িয়েছিল শেখর সুমন-পুত্র অধ্যয়নেরও। বিচ্ছেদ হওয়ার পর অধ্যয়ন দাবি করেন, কঙ্গনা তার উপর 'ব্ল্যাক ম্যাজিক' করেছিলেন।

তিনি বলেন, ''বিদেশে পড়াশোনা করায় এবং শহরে মানুষ হওয়ার সুবাদে আমি জ্যোতিষশাস্ত্র এবং কালোজাদুতে বিশ্বাস করতাম না। আমাকে এক ভবিষ্যদ্বক্তা বলেন যে একজন পাহাড়ি নারী আমার উপর কালোজাদু করছে। আমি তখন শুধু একজন পাহাড়ি নারীকেই চিনতাম। আমার প্রেমিকা কঙ্গনা। কঙ্গনা নির্দিষ্ট পূজার জন্য মাঝেমধ্যেই হিমাচল যেত। আমাকে ওই ভবিষ্যৎবক্তা সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতেও বলেন।''

  • সূত্র- আনন্দবাজার পত্রিকা 

 
 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.