প্রেমের খবর ফাঁস হবার পর ভক্তকুলের চাপে সম্পর্কের ইতি টানলেন কে-পপ তারকা

বিনোদন

বিবিসি
03 April, 2024, 12:45 pm
Last modified: 04 April, 2024, 04:04 am
গত ফেব্রুয়ারি মাসে অভিনেতা লি-জে-উকের সাথে প্রেমের সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসায় ভক্তদের তোপের মুখে পড়েছিলেন কে-পপ তারকা কারিনা। পরবর্তীতে অনুরাগীদের কাছে ক্ষমাও চেয়েছিলেন তিনি। 

গত ফেব্রুয়ারি মাসে অভিনেতা লি-জে-উকের সাথে প্রেমের সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসায় ভক্তদের তোপের মুখে পড়েছিলেন কে-পপ তারকা কারিনা। পরবর্তীতে অনুরাগীদের কাছে ক্ষমাও চেয়েছিলেন তিনি। 

এবার লি-জে-উকের সাথে প্রেমের সম্পর্কের ইতি টানলেন কারিনা। তারকার এজেন্সি সি-জেস স্টুডিও এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। 

এজেন্সি জানায়, কারিনা ও লি দুইজনেরই তাদের কাজে ফোকাস করতে চায়। তবে তারা সহকর্মী হিসেবে একে অপরকে সাহায্য করবে। 

এর আগে প্রেমের সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসায় কিছু ভক্ত কারিনাকে 'বিশ্বাসঘাতক' বলেও অভিহিত করেছেন। এমতাবস্থায় এই তারকা ভক্তদের উদ্দেশ্য ইনস্টাগ্রামে একটি চিঠি পোস্ট করে ক্ষমা চেয়েছিলেন। 

তখন চিঠিতে কারিনা বলেন, "আপনাদের কাছে আচমকা বিষয়টি উপস্থাপন হওয়ায় আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।" একইসাথে ২৩ বছর বয়সী এই তারকা ভবিষ্যতে আরও পরিপক্ব আচরণ করার প্রতিশ্রুতি দেন। 

তবে ভক্তদের ক্ষোভ যেন থামছিলই না। বিষয়টি এমন অবস্থায় পৌঁছায় যে, কারিনার এজেন্সি বরাবর একটি ট্রাক নিয়ে ঢুকে পড়েছিল ক্ষুব্ধ ভক্তকুল।

সেই ট্রাকে আবার বড় ডিজিটাল সাইনবোর্ডে লেখা ছিল—'ভক্তদের দেওয়া ভালোবাসা আপনার জন্য কি যথেষ্ট নয়?' যদিও এই পপ তারকা ভক্তদের মনের এই ক্ষত দ্রুত সারিয়ে তুলবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। 

অভিনেতা লি-জে-উকের সঙ্গে কারিনার সম্পর্কের খবর প্রথম প্রকাশ্যে আনে কোরীয় সংবাদমাধ্যম ডিসপ্যাচ। পরে দুজনের এজেন্সিই স্বীকার করেছিলেন যে, তারা প্রেম করছেন। 

ডিসপ্যাচ জানিয়েছিল, সিউল ও মিলানে দুজনকে একসঙ্গে দেখা গেছে। গত ১৪ জানুয়ারি ইতালির একটি ফ্যাশন শোতে একসঙ্গে হাজির ছিলেন তারা। প্রথম দেখাতেই তারা একে অপরের প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন বলেও ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাতে জানিয়েছিল সংবাদমাধ্যমটি।

ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ কোরিয়ার জনপ্রিয় পপ ব্যান্ড অ্যাসপার এর অন্যতম সদস্য গায়িকা কারিনা। ২০২০ সালের অক্টোবরে ব্যান্ডটিতে যোগ দিয়ে প্রথমবারের মতো মূলধারার কে-পপে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। 

এক মাসের মধ্যেই চার নারীর ওই ব্যান্ডের নেতৃত্ব পান কারিনা। গত বছর তাদের অ্যালবাম 'মাই ওয়ার্ল্ড' শুধু দক্ষিণ কোরিয়ায় ২১ লাখ কপি বিক্রি হয়েছে। 

তবে শুধু কারিনা-লি নয়; বরং কয়েক দিন আগে দক্ষিণ কোরিয়ার অভিনেতা হান সো-হি এবং রিউ জুন-ইওলও নিজেদের প্রেমের সম্পর্কে ইতি টানার ঘোষণা দিয়েছেন। যদিও তার মাত্র দুই সপ্তাহ আগে তারা প্রকাশ্যে নিজেদের সম্পর্কের কথা স্বীকার করেছিলেন। এক্ষেত্রে তারাও ভক্তদের তীব্র তোপের মুখে পড়েছিলেন।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়া কিংবা জাপানে পপ তারকাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে ভক্তদের এমন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া অহরহই দেখা যায়। ভক্তদের চাপ সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় অনেক তারকাকেই।

বিশ্বের অন্য জায়গায় তারকাদের ব্যক্তিগত রোমান্টিক জীবন প্রকাশ্যে উদ্‌যাপিত হলেও কে-পপ তারকাদের ক্ষেত্রে তা হয় উলটো। টেইলর সুইফট যেখানে তার প্রেমিক ট্র্যাভিস কেলসের সাথে সুপার বোলে অংশ নিচ্ছেন, সেখানে কারিনার মতো কে-পপ আইডলদের তাদের প্রেমের সম্পর্কের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্যই কঠোর সমালোচনার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

কোরিয়ান মিডিয়া কলামিস্ট জিয়ং দেওক-হিয়ন বলেন, 'ভক্তরা বিরক্ত বোধ করে'। কারণ কে-পপ ভক্তরা প্রায়শই তাদের তারকা বা আদর্শের সাথে প্যারাসোশ্যাল সম্পর্ক কল্পনা করেন। এই এক তরফা সম্পর্কে ভক্তরা তাদের পছন্দের তারকাদের ওপর সময়, অর্থ এবং আবেগ ব্যয় করেন, অথচ সেই তারকা হয়ত তাকে চেনেনই না। 

মি. জিয়ং বিবিসিকে বলেন, কে-পপ ইন্ডাস্ট্রিতে ভক্তরা তাদের তারকাদের সমর্থন জানাতে তাদের মার্চেন্ডাইজ বা পণ্য কেনেন। অর্থ ও সময় বিনিয়োগ করে ভক্তদের সমর্থন জানালেও বিনিময়ে ভক্তদেরও কিছু আশা প্রত্যাশা থাকে, কিন্তু যখন এই প্রত্যাশাগুলো পূরণ হয় না তখনই ভক্তরা বিরক্ত হয়ে পড়েন, তাদের মধ্যে তৈরি হয় হতাশা ও ক্ষোভ। কেউ কেউ মনে করেন যে শিল্পী এবং তাদের ম্যানেজমেন্ট এজেন্সিগুলো তারকা এবং ভক্তদের মধ্যে একটি 'মিথ্যা ঘনিষ্ঠতা' তৈরি করেছে। ১০ বছর আগেও, কে-পপ এজেন্সিগুলো  তারকাদের প্রেম করতে বা ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন রাখতে নিষেধ করত।


অনুবাদ: মোঃ রাফিজ খান 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.