৭৩ বছর বয়সে মারা গেলেন ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক মার্টিন এমিস

বিনোদন

টিবিএস ডেস্ক
21 May, 2023, 10:20 am
Last modified: 21 May, 2023, 10:37 am
লেখালেখির ক্যারিয়ারে পাঠকদের অসংখ্য কালজয়ী উপন্যাস ও নন-ফিকশন বই উপহার দিয়েছেন এমিস। ১৯৭৮ সালে প্রকাশিত ‘সাকসেস’ এবং ১৯৮৯ সালে প্রকাশিত ‘লন্ডন ফিল্ডস’ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।

জনপ্রিয় ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক মার্টিন লুইস এমিস ৭৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন। লেখকের স্ত্রী লেখিকা ইসাবেল ফনসেকার বরাত দিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমসকে জানিয়েছে, খাদ্যনালীর ক্যান্সারে ভুগে এমিসের মৃত্যু হয়েছে।

সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার (১৯ মে) ফ্লোরিডায় নিজ বাড়িতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। 

লেখালেখির ক্যারিয়ারে পাঠকদের অসংখ্য কালজয়ী উপন্যাস ও নন-ফিকশন বই উপহার দিয়েছেন এমিস। ১৯৭৮ সালে প্রকাশিত 'সাকসেস' এবং ১৯৮৯ সালে প্রকাশিত 'লন্ডন ফিল্ডস' তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য। এমিসকে তার সময়ের অন্যতম প্রভাবশালী লেখক হিসেবেও বিবেচনা করা হয়।

১৯৪৯ সালে অক্সফোর্ডে জন্মগ্রহণ করেন এমিস। তিনি বিখ্যাত ঔপন্যাসিক ও কবি কিংসলে এমিসের ছেলে। তরুণ বয়সেই বাবাকে অনুসরণ করে ১৯৭৩ সালে তিনি প্রকাশ করেন প্রথম উপন্যাস 'দ্য র‍্যাচেল পেপারস'।

এমিসের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্বের স্বনামধন্য কবি-সাহিত্যিক ও প্রকাশকরা। খ্যাতিমান লেখক সালমান রুশদি বলেন, "এমিস সবসময়ই বলতেন যে, 'আমি বইভর্তি একটি শেলফ রেখে যেতে চাই, যাতে করে আমি বলতে পারি, এগুলো আমার কাজ।' এমিস এখন আর আমাদের মাঝে নেই। তার প্রিয়জনেরা তার অভাব খুব বোধ করবেন। কিন্তু এমিসের রেখে যাওয়া কাজ আমাদের মাঝে আছে।"

আরেক বিখ্যাত ঔপন্যাসিক স্যার কাজুও ইশিগুরো বিবিসিকে বলেন, "এমিস আমাদের প্রজন্মের ঔপন্যাসিকদের আদর্শ-বাহক ছিলেন। ব্যক্তিগতভাবে তিনি ছিলেন আমার অনুপ্রেরণা। সাহিত্য জগতের বহু পরিবর্তনের মাঝেও তিনি তার কাজের মাধ্যমে বেঁচে থাকবেন।"

এমিসের লেখালেখিতে ডার্ক কমিক ও স্যাটায়ারের ছাপ রয়েছে। উপন্যাস ছাড়াও তিনি দুটি গল্পগুচ্ছ, ছয়টি নন-ফিকশন বই ও একটি স্মৃতিকথা লিখেছেন। সমসাময়িক বিষয় ও রাজনীতি নিয়ে মন্তব্য করে নানা সময় তিনি বেশ আলোচিত-সমালোচিতও হয়েছেন।

এমিসের লেখা উপন্যাসগুলোর মধ্যে ১৯৮০ এর দশকে লেখা 'মানি' বেশ জনপ্রিয়। তিনি তার উপন্যাসে বহুবার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম কলঙ্কিত ঘটনা 'হলোকাস্ট' এর প্রসঙ্গ তুলে এনেছেন।

২০১২ সালে এমিস যুক্তরাজ্য ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। ২০২০ সালে তার সর্বশেষ উপন্যাস 'ইনসাইড স্টোরি' প্রকাশিত হয়।

ভিনটেজ বুকস ইউকের মাইকেল শ্যাভিট বলেন, "এমিসকে ছাড়া পৃথিবী কল্পনা করা বেশ কষ্টকর। তিনি ছিলেন ঠিক রাজার মতো; যে কি-না একজন নির্ভীক লেখক এবং সত্যিকারের বিস্ময়কর মানুষ।"

পেঙ্গুইন বুকসের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, "আমাদের বন্ধু ও লেখক মার্টিন এমিসের মৃত্যুর সংবাদে আমরা বিধ্বস্ত। লেখকের পরিবার-প্রিয়জন বিশেষ করে তার সন্তান ও স্ত্রী ইসাবেলের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। ব্রিটেনের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তিনি অসামান্য প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন। আমরা এমিসের অভাব ভীষণভাবে বোধ করবো।"

এমিসের রচিত উপন্যাস 'টাইমস অ্যারো' বুকার পুরস্কারের মনোনয়নের সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিল। একইসাথে তার ২০০৩ সালে প্রকাশিত 'ইয়োলো ডগ' উপন্যাসটিও বুকার প্রাইজের মনোনয়নের দীর্ঘ তালিকায় জায়গা করে নিয়েছিল।

বুকার প্রাইজ এর পক্ষ থেকে টুইটে বলা হয়, "এমিসের মৃত্যুর সংবাদে আমরা শোকাহত। তিনি গত ৫০ বছরের অন্যতম প্রশংসিত ও আলোচিত ঔপন্যাসিক ছিলেন। তার পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি আমাদের সমবেদনা রইলো।"

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.