৯৪ বছরের ইতিহাসে অস্কার একাডেমী বোর্ডে সর্বাধিক নারী  

বিনোদন

টিবিএস ডেস্ক
23 June, 2021, 03:45 pm
Last modified: 23 June, 2021, 03:46 pm
একাডেমী অফ মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস এর বোর্ড অফ গভর্নরস এই মুহূর্তে ৩১ জন নারী ও ২৩ জন পুরুষ সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত।

শেষ রাউন্ড নির্বাচনের ফলাফলের পর অস্কারের কৌশলগত দিকগুলো পরিচালনা করে যে বোর্ড, সেই একাডেমী অফ মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস (এএমপিএএস) এর বোর্ড অফ গভর্নরস এই মুহূর্তে ৩১ জন নারী ও ২৩ জন পুরুষ সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত। সোমবার একাডেমী এই ঘোষণা দেয়। একাডেমীর ৯৪ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথমবারের মতো বোর্ডে নারী সদস্যের সংখ্যা বেশি।

বোর্ড অফ গভর্নরস এর নবনির্বাচিত সদস্যদের মধ্যে আছেন অভিনেত্রী রিটা উইলসন, প্রামাণ্যচিত্র সম্পাদক ও প্রযোজক জ্যঁ সিয়েন এবং কম্পোজার লেসলি বার্বার।

একাডেমীর ২০২১-২০২২ এর নির্বাচনগুলোর মধ্য দিয়ে সদস্য হিসেবে কৃষ্ণাঙ্গদের সংখ্যা ১২ জন থেকে ১৫ জনে গিয়ে ঠেকেছে এবং তৈরি করেছে নতুন এক রেকর্ড।
বোর্ডের সর্বশেষ নির্বাচনে কিছু নিয়মের পরিবর্তন করায় ফলাফলে বেশ পরিবর্তন দেখা গেছে। সংগঠন থেকে বিরতি নেয়ার আগে গভর্নররা এবার তিনবারের বদলে টানা দুইবার থাকতে পারবেন।

একাডেমীর বোর্ড অফ গভর্নর এবং এর সদস্যরা

একাডেমীর ১৭ টি শাখার প্রতিটির প্রতিনিধিত্ব করেন তিনজন করে গভর্নর। এই গভর্নরদের এমন ব্যক্তিত্ব হতে হবে যাদের চলচ্চিত্র জগতে নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে বিশেষ পান্ডিত্য ও দক্ষতা থাকতে হবে।

বছরে একাধিকবার মিটিং করা থেকে ধরে এএমপিএএস এর লক্ষ্য পূরণে সম্পর্কিত কৌশল পরিচালনা করা, নতুন সদস্য অনুমোদন দেয়া এবং অস্কার পাওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কিত নিয়মগুলো ঠিক করা হলো গভর্নরদের দায়িত্ব।

বর্তমানে একাডেমীর নিজস্ব সদস্যের সংখ্যা নয় হাজারেরও বেশি। এসব সদস্যদের এখানে যুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে অন্য দুজন একাডেমী সদস্যের স্পন্সর থাকতে হয়। শুধুমাত্র অস্কার মনোনয়নপ্রাপ্ত ও অস্কারজয়ীরা কোনো রকম স্পন্সরশীপ ছাড়াই সরাসরি সদস্য হতে পারেন।  

অস্কারের সার্বিক পরিস্থিতি

একাডেমীর সদস্যরাই অস্কারের মনোনয়ন ও বিজয়ী নির্ধারণ করেন।

২০১৫ সালে #অস্কারসোহোয়াইট বিতর্কের সময় একাডেমীর সদস্যের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বেড়ে যায়। সে সময় এএমপিএএস জানায় যে তাদের ৬০০০ সদস্যের মধ্যে ৯৩ শতাংশই শ্বেতাঙ্গ, ৭৬% পুরুষ এবং তাদের গড় বয়স ৬৩ বছর।

এরপর ২০১৬ সালে একাডেমী ২০২০ সালের মধ্যে নারী ও কৃষ্ণাঙ্গ সদস্যদের সংখ্যা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেয়। তাদের সেই লক্ষ্যমাত্রা গতবছরই পার হয়ে গেছে। এই মুহূর্তে তাদের এক-তৃতীয়াংশ সদস্য নারী এবং ১৯ শতাংশ 'আন্ডার-রিপ্রেজেন্টেড মাইনোরিটি'- যাদেরকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হয় না।     

বেস্ট পিকচার এওয়ার্ড পাওয়ার যোগ্যতা নির্ধারণের মাত্রাগুলো সংশোধন করার ঐতিহাসিক ঘোষণাও দিয়েছিল একাডেমী। ২০২৪ সাল থেকে শুরু হতে যাওয়া এ নিয়ম অনুসারে, কৃষ্ণাঙ্গ, হিস্পানিক ও নেটিভ আমেরিকান জনগোষ্ঠীসহ অপেক্ষাকৃত কম উপস্থাপিত সকল গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে নতুন বৈচিত্র্যপূর্ণ নিয়মগুলো অবশ্যই পূরণ করতে হবে। সেই সাথে এলজিবিটি গোষ্ঠী ও অক্ষম মানুষদেরকেও একাডেমী এওয়ার্ডে সঠিকভাবে তুলে ধরা হবে।

চলচ্চিত্রে একাডেমী সদস্যদের ভূমিকা

একাডেমীর সদস্যরা অস্কারের প্রার্থীদের মনোনয়ন করতে ভোট দিতে পারবেন। তবে প্রতি পুরস্কার শাখায় এই মনোনীত প্রার্থীদের নির্বাচন করবেন ১৭টি শাখার প্রতিনিধি সদস্যরা। অর্থাৎ অভিনেতারা সেরা অভিনেতা মনোনয়ন করবেন, পরিচালকেরা সেরা পরিচালক মনোনয়ন করবেন। সেরা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র ও অ্যানিমেশন চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে বিশেষ কমিটি দ্বারা নির্বাচিত হবে।

তবে চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে একাডেমীর সকল সদস্যরা সেরা চলচ্চিত্র ও অন্যান্য শাখার জন্য প্রার্থী নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন।

শুধুমাত্র 'সেরা চলচ্চিত্র পুরস্কার' বাদে বাকি সব শাখার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত নমিনিই বিজয়ী হিসেবে বিবেচিত হবেন। সেরা চলচ্চিত্র নির্বাচনের ক্ষেত্রে ব্যালট সিস্টেমে ভোটাররা সবচেয়ে জনপ্রিয় থেকে ধরে সবচেয়ে কম জনপ্রিয় চলচ্চিত্র নির্বাচন করে থাকেন।

একসময় একাডেমীর একজন সদস্য হওয়া মানে বুঝাতো সরাসরি সারা জীবনের জন্য এখানে ভোট প্রদানের অধিকার পাওয়া। কিন্তু এই ক্ষেত্রের নিয়মসমূহও ২০১৬ সালে পরিবর্তন করা হয়। তখন থেকে ভোট দানের সময়সীমা ১০ বছর মেয়াদী করা হয়। চলচ্চিত্র শিল্পে সক্রিয় থাকলে এই সময় নবায়ন করা যাবে। তিনবার ১০ বছর মেয়াদী ভোট প্রদান অধিকার পেলে তাকে সারা জীবনের জন্য এই অধিকার দেয়া হবে। চলচ্চিত্রে যুক্ত নয়,  এমন ব্যক্তিদের ভোট প্রদান থেকে দূরে রাখার জন্যই এই নিয়ম।
উল্লেখ্য, পরবর্তী অস্কারের পর্দা উঠবে ২০২২ সালের ২৭ মার্চ, রবিবার।

  • সূত্র- ডয়েচে ভেলে 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.