'রাস্তা আমার রানওয়ে, আর আমিই রানী'

বিনোদন

রুদ্র আরিফ
08 August, 2020, 06:05 pm
Last modified: 08 August, 2020, 07:13 pm
ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির সুপরিচিত মুখ জয়নব আলম জুঁই। প্রতিশ্রুতিশীল এই র‍্যাম্প মডেল ক্যারিয়ারের শুরু থেকে এ পর্যন্ত প্রচুর র‍্যাম্পে ক্যাটওয়াক করে আলো ছড়িয়েছেন।
জয়নব আলম জুঁই। ছবি: জুঁইয়ের সৌজন্যে/ফেসবুক

জয়নব আলম জুঁই। প্রতিশ্রুতিশীল র‍্যাম্প মডেল। ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির সুপরিচিত মুখ। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে এ পর্যন্ত প্রচুর র‍্যাম্পে ক্যাটওয়াক করে আলো ছড়িয়েছেন।

র‍্যাম্প মডেলিং ঘিরে নিজ ভাবনা তিনি প্রকাশ করেছেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের কাছে।

আপনার বেড়ে ওঠা...

জয়নব আলম জুঁই: আমার জন্ম কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে; গ্রাম-শহর মিলিয়েই বেড়ে উঠেছি। পড়াশোনাও একই রকম। অনেক স্কুলে পড়তে হয়েছে। পরিবারের বড় সন্তান বলে সবার চোখের মণি আমি। সম্প্রতি একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সিএসসি কমপ্লিট করেছি।

র‍্যাম্পমডেলিং ভাবনা এলো কীভাবে?

জুঁই: ছোটবেলা থেকেই আমার হাঁটার স্টাইল অনেক সুন্দর ছিল। সবার কাছ থেকে অনেক প্রশংসা পেয়েছি। একাডেমিক রেজাল্ট এবং স্পোর্টসের জন্য সবার কাছে একটু বেশিই 'স্পেশাল' ছিলাম। কখনো ভাবিনি র‍্যাম্পে আসব। র‍্যাম্পে আসাটা হুট করেই হয়ে গেছে। যখন ক্লাস নাইনে পড়ি, টিভিতে একটা ফ্যাশন শো দেখে খুব ইচ্ছে হলো, আমিও র‍্যাম্পে কাজ করব।

প্রথম দিকের স্ট্রাগলগুলো কেমন ছিল?

জুঁই: প্রথমদিকে স্ট্রাগলটা অনেক বেশি ছিল। আমি ব্যক্তিগতভাবে ইন্ডাস্ট্রির কাউকে চিনতাম না। শুরুতে অনেক প্র্যাকটিস করেছি হাঁটার। অনেক পরিশ্রম করেছি। এমনও হয়েছে, রাস্তায় হাঁটার সময় কানে হেডফোন দিয়ে, মিউজিকের বিটের সঙ্গে হাঁটতাম। সবসময়ই ভাবতাম, এটাই আমার রানওয়ে, আর আমিই রানী।

কোনো বিশেষ বাধা বা ঘটনার স্মৃতি মনে পড়ে? কীভাবে সামলিয়েছেন?

জুঁই: শুরুর দিকে পরিবার থেকে কেউ গ্রহণ করতে পারেনি। পরে কাজ দেখে সবাই খুব অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। এখনো অনুপ্রেরণা দেন।

র‍্যাম্পে সবচেয়ে আনন্দের স্মৃতি?

জুঁই: যখন রানওয়েতে হেঁটে যাই, এবং আমার ওপর স্পটলাইটটা পড়ে, সবার চোখ থাকে ঠিক আমার ওপর, সেটিই সবচেয়ে আনন্দের মুহূর্ত

সবচেয়ে বেদনার স্মৃতি?

জুঁই: তেমন কোনো বেদনার স্মৃতি এখন পর্যন্ত নেই। তবে একবার অনেক জ্বর নিয়ে রিয়ার্সাল ও শো করেছি; কাউকে বুঝতে দিইনি।

সর্বশেষ কবে শো করেছেন? কোথায়?

জুঁই: শেষ শো করেছি ৯ ফেব্রুয়ারি। বঙ্গবন্ধু ইন্টারন্যাশনাল ফ্রিস্টাইল স্ট্যান্ড সাইক্লিং চ্যাম্পিয়নশিপ শো; শেখ রাসেল রোলার স্কেটিং কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম নিয়ে ভাবনা?

জুঁই: বিদেশে শোয়ের অভিজ্ঞতা এখনো হয়নি। শুরুর দিক থেকেই বিদেশে শো করার ইচ্ছেটা রয়ে গেছে। কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারি আমাদের সবাইকেই ঘায়েল করে বসে আছে। একটা ফ্লোতে থাকা অবস্থা থেকে এভাবে থমকে যাওয়া, এ কারণে একটু হয়তো পিছিয়ে পড়েছি। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে কাজ করার ব্যাপারে আশাবাদী।

র‍্যাম্পে না হলেও, বিদেশে থিয়েটার অভিনয়ের অভিজ্ঞতা অবশ্য আমার আছে; ভারতে, ২০১৫ সালে। সেটা খুবই অসাধারণ অভিজ্ঞতা।

বাংলাদেশের র‍্যাম্প মডেলিং নিয়ে অভিজ্ঞতার আলোকে আপনার মূল্যায়ন?

জুঁই: র‍্যাম্প মডেলিংয়ের অভিজ্ঞতা আমার খুবই ভালো। অনেক ভালোবাসা ও প্রশংসা পেয়েছি, যেগুলো আমাকে পথ চলতে সাহায্য করছে।

র‍্যাম্পে কাজ করতে আগ্রহী নতুনদের প্রতি পরামর্শ?

জুঁই: নতুনদের বলব, এটা কাজের জায়গা। এখানে না শিখে আসার কোনো উপায় নেই। শিখে এলে পথটা অনেক বেশি সহজ ও সুদীর্ঘ হবে। বাইরে থেকে কাজটা খুব সহজ মনে হলেও, এতটা সহজ নয়। তাই অনেক কিছু শেখার আছে। আমিও প্রতিনিয়ত শিখছি। শেখার জায়গাটিকে গুরুত্ব দিতে হবে।

করোনা পরবর্তী র‍্যাম্প মডেলিং ইন্ডাস্ট্রি কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বলে মনে করেন?

জুঁই: করোনার কারণে ইন্ডাস্ট্রির অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেছে। আমরা বেশ কিছু 'সিজন' মিস করেছি- বৈশাখ, ঈদ...। পরিস্থিতি পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমরা ভালোর দিকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করব। ক্ষতি পূরণ করার চেষ্টা করব।

র‍্যাম্পের বাইরে আপনি...

জুঁই: র‍্যাম্পের বাইরে অনুষ্ঠান উপস্থাপনা, টিভিসিতে মডেলিং, মিউজিক ভিডিওতে পারফর্ম... এসব করেছি। আমি কারাতে খেলোয়াড়। সাইক্লিং খুব ভালোবাসি। মোটরবাইক চালাতে দারুণ লাগে!

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.