বাবার অভিভাবকত্ব বাতিলের আবেদন নিয়ে আবারও আদালতের দ্বারে ব্রিটনি
২০০৮ সাল থেকে পপ তারকা ব্রিটনি স্পিয়ার্সের ব্যক্তিগত জীবন ও সম্পদ নিয়ন্ত্রণের আইনি অধিকার (কনজারভেটরশিপ) তার বাবা জেমি স্পিয়ার্সের হাতে। বারবার বাবার সেই অধিকার বাতিলের আবেদন করে আদালতে প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন ৩৯ বছর বয়সী এই গায়িকা।
জিম্মাদশার বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের জন্য সম্প্রতি তিনি ম্যাথিউ রোজেনগার্ট নামক নতুন একজন আইনজীবী নিয়োগ দেন।
সোমবার রোজেনগার্ট আদালতের কাছে আবারও ব্রিটনির ৬০ মিলিয়ন ডলারের সম্পত্তির নিয়ন্ত্রক ও সংরক্ষণক হিসাবে তার বাবাকে অপসারণের জন্য পিটিশন দায়ের করেন।
আদালতের কাছে ম্যাথিউ অনুরোধ করেন শীঘ্রই যেন জেমি স্পিয়ার্সকে সরিয়ে ব্রিটনির সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব সার্টিফায়েড (স্বীকৃত) পাবলিক অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেসন রুবিনের হাতে সোপর্দ করা হয়।
এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে ২৯শে সেপ্টেম্বরে, লস এঞ্জেলেস সুপিরিয়র কোর্টে।
২০০৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কনজারভেটরশিপ আইনের অধীনে আদালতের আদেশে ব্রিটনির বাবা জেমিকে মেয়ের সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার দেওয়া হয়। সে সময় উদ্বেগ ও অবসাদের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল ব্রিটনিকে।
ফলে গত ১৩ বছর ধরে ব্রিটনি স্পিয়ার্সের ব্যক্তিগত ও আর্থিক-সমস্ত কিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন তার বাবা।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে লস অ্যাঞ্জেলেস আদালতে ব্রিটনির বাবার আইনি অভিভাবকত্ব বাতিলের জন্য আবেদন করেন তার আইনজীবী।
আদালতকে ব্রিটনি জানান, তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। দিনের পর দিন কেঁদেছেন। তাকে আরও সন্তান নিতে দেওয়া হয়নি। ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে সাইকায়াট্রিক ড্রাগ লিথিয়াম দেওয়া হয়েছে।
দুই সন্তানের মা ব্রিটনি আরও জানান, তিনি তার প্রেমিককে বিয়ে করতে চান। আরেকটা সন্তান নিতে চান। কিন্তু তার আইনি অভিভাবক সে অনুমতি দেননি। ব্রিটনির দাবি, তাকে গর্ভনিরোধক ডিভাইস পরতে হয়েছে, যাতে আর সন্তান নিতে না পারেন।
মামলার নতুন আবেদনে রোজেনগার্ট এই কনজারভেটরশিপকে 'কাফকাস্কের দুঃস্বপ্ন' হিসেবে অভিহিত করে বলেন, "এটি ক্রমশ বিষাক্ত হয়ে উঠেছে এবং একে কোনভাবেই আর চলতে দেয়া যায় না"।
তিনি প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে জেমি স্পিয়ার্সের অপসারণ দাবি করেন, যা ক্রমান্বয়ে ব্রিটনির কনজারভেটরশিপের পুরোপুরি অবসান ঘটাবে একদিন।
পিটিশনে রোজেনগার্ট বলেন, "হয়তো এমনও এক সময় আসবে যখন আদালতকে এই কনজারভেটরশিপ আর চালিয়ে নেয়া উচিত কিনা সে বিষয়ে বিবেচনা করার জন্য বলা হবে"।
তবে এ বিষয়ে জেমি স্পিয়ার্সের আইনজীবির কাছে মন্তব্যের জন্য অনুরোধ করা হলে তিনি তাতে সাড়া দেন নি। পূর্ববর্তী বিবৃতি এবং আদালতের নথিতে তিনি উল্লেখ করেছিলেন যে, জেমি তার মেয়েকে ভালবাসেন এবং শুধুই তার সুস্থতা কামনা করেন। এমনকি এই মাসের শুরুর দিকে জেমির আইনজীবী ভিভিয়ান থোরিন, তার (জেমি স্পিয়ার্স) ওপর আসা অনেক অভিযোগই মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন।
এখন পর্যন্ত আদালতের পক্ষ থেকে কোনও রায় ঘোষণা না করা হলেও বিশ্বজুড়ে ব্রিটনির ভক্তদের 'ফ্রি ব্রিটনি' হ্যাশট্যাগে ছেয়ে গেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পর্দা।
ডজনখানেক তারকাও আওয়াজ তুলেছেন ব্রিটনির সমর্থনে। তাদের মধ্যে আছেন পপ তারকার সাবেক প্রেমিক জাস্টিন টিম্বারলেক।
- সূত্র-রয়টার্স