সিলেট-সুনামগঞ্জে আবারও পানি বাড়ছে

বাংলাদেশ

29 June, 2022, 01:25 pm
Last modified: 29 June, 2022, 01:29 pm
বিভিন্ন পয়েন্টে সুরমা, কুশিয়ারা ও লোভা নদীর পানি বেড়েছে।

কয়েকদিন পানি কিছুটা কমলেও সিলেট ও সুনামগঞ্জে আবারও বাড়তে শুরু করেছে নদ-নদীর পানি। বুধবার সিলেট ও সুনামগঞ্জের সবগুলো পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি কয়েক ইঞ্চি বেড়েছে। বেড়েছে কুশিয়ারা এবং লোভা নদীর পানিও।

সিলেটে চলমান স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার পানি এখনো পুরো নামেনি। এখনো প্লাবিত জেলার বেশিরভাগ এলাকা। তবে গত কয়েকদিন ধরে পানি কমতে শুরু করেছিল। আজ বুধবার এসে ফের বাড়ছে নদীর পানি। পানি আবার বাড়তে শুরু করায় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে বন্যায় বিধ্বস্ত এ দুই জেলায়।

এদিকে, মঙ্গলবার রাতের ভারি বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয় নগরের বেশিরভাগ এলাকা। উপশহর, তালতালা, তেররতণ, জামতলা, মির্জাজাঙ্গালসহ কিছু এলাকার ঘরবাড়িতেও পানি ঢুকে পরে। এতে ফের দুর্ভোগ পোহাতে হয় এসব এলাকার বাসিন্দাদের। পানি আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটে অনেকের। তবে বুধবার সকাল থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় নগরের পানি কিছুটা কমেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য বলছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে বুধবার বেলা ১২টা পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে ২৯ সেন্টিমিটার, সিলেট পয়েন্টে ১৬ সেন্টিমিটার বেড়েছে। আর সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি ১০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া কুশিয়ারা নদীর পানি শেরপুর পয়েন্টে এক সেন্টিমিটার বেড়েছে। বেড়েছে লোভা নদীর পানিও।

পাউবো সিলেটের উপ-সহকারি প্রকৌশলী একেএম নিলয় পাশা বলেন, সিলেটের পাশাপাশি উজানেও বৃষ্টি হচ্ছে। একারণে ঢলে নদনদীর পানি বাড়ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড, সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম বলেন, সোমবার থেকে ভারতের মেঘালয়ে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ফলে সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি বেড়েছে। দোয়ারাবাজার ও ছাতক আগে থেকেই নিমজ্জিত থাকায় পানি বের হওয়ার জায়গা না পেয়ে এসব এলাকায় কিছু এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে।

মঙ্গলবার রাতের বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পরে নগরের উপশহর এলাকা। এই এলাকার বাসিন্দা মাসুক আমিন বলেন, গতরাতে আতঙ্কে আমরা কেউ ঘুমাতে পারিনি। রাত জেগে পানি পাহারা দিয়েছি। রাতে রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গিয়েছিলো।

তিনি বলেন, টানা ১০দিন পর মাত্র দুইদিন আগে ঘর থেকে পানি নেমেছে। এখন আবার ঘরে পানি উঠলে দুর্ভোগের কোন সীমা থাকবে না।

মঙ্গলবার রাতে পানি ঢুকে পরে জামতলা এলাকার বাসিন্দা সাগর চৌধুরীর বাসায়। তিনি বলেন, বারবার এভাবে পানি ঢুকে পরছে। আমরা কী করবো, কোথায় যাবো কিছুই বুঝতে পারছি না।

তবে বুধবার সকালে ঘর থেকে পানি নেমেছে বলে জানান তিনি।

মঙ্গলবার রাতে নগরের কালিঘাট এলাকার ব্যবসায়ী নিলাঞ্জন দাশ টুকুর দোকানেও পানি ঢুকে পরে। টুকু বলেন, ৮/৯ দিন পর গত সোমবার দোকান থেকে পানি নেমেছিলে। গতরাতে আবার ঢুকে পরে। একমাসে এই তিনবার পানি ঢুকলো।

টুকু বলেন, কান্না করা ছাড়া এখন আর কিছুই করার নাই আসলে। কারো কাছে তো অভিযোগ জানানোরও নেই। আমাদের যে কী ক্ষতি হচ্ছে তা বলে বোঝানো যাবে না।

নদী, ড্রেন ও ছড়া পানিতে ভরাট হয়ে পরায় অল্প বৃষ্টিতেই নগরে জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে জানিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান বলেন, সব জলাধার পানিতে টুইটুম্বুর। নদী পানি টানতে পারছে না। ফলে বৃষ্টির পানি নামার জায়গা পাচ্ছে না। একারণে অল্প বৃষ্টিতেই মঙ্গলবার নগরে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। তবে বৃষ্টি থামার পর পানি নেমে গেছে।

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.