নেত্রকোনায় বন্যার পানি থেকে দুই নারীর মরদেহ উদ্ধার

বাংলাদেশ

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
21 June, 2022, 05:10 pm
Last modified: 21 June, 2022, 08:45 pm
‘সন্তানকে বাঁচাতে তিনিও পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এ সময় তানজিনাকে উদ্ধার করতে পারলেও জুলেখা পানিতে ডুবে মারা যান।’

নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার জুড়াইল হাওরে মঙ্গলবার বন্যার পানিতে ডুবে জুলেখা বেগম এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া কলমাকান্দা উপজেলার খারনৈ এলাকার খাগগড়া বিল থেকে আরেক অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। 

কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী হোসেন পিপিএম ও কলমাকান্দা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শহীদুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয়দের বরাতে কেন্দুয়া থানার ওসি জানান, জুড়াইল গ্রামের দক্ষিণপাড়ার হারেছ মিয়ার স্ত্রী জুলেখা বেগম।

মঙ্গলবার সকালে বন্যার পানি দেখার উদ্দেশ্যে তার জা নাজমুন্নাহার ও তাদের শিশুদের নিয়ে ডিঙি নৌকাযোগে জুড়াইল হাওরে যান। এ সময় প্রবল বাতাসে নৌকাটি দোল খেতে থাকলে জুলেখার সাত বছরের মেয়ে তানজিনা পানিতে পড়ে যায়। 

পরে সন্তানকে বাঁচাতে তিনিও পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এ সময় তানজিনাকে উদ্ধার করতে পারলেও জুলেখা পানিতে ডুবে মারা যান। পরে স্বজনরা তাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন। 

অন্যদিকে কলমাকান্দা থানার এসআই শহীদুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার সকালে স্থানীয়রা খারনৈ ইউনিয়নের খাগগড়া বিলের পানিতে এক নারীর পচা-গলা মরদেহ ভাসতে দেখে থানায় খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। ধারণা করা হচ্ছে, গত বৃহস্পতিবার রাতের পাহাড়ি ঢলে উত্তর দিক থেকে ভেসে আসেন ওই নারীর মরদেহ। বিকেল পর্যন্ত তার পরিচয় জানা যায়নি। 

ওই এলাকার পাশেই ভারত সীমান্ত হওয়ায় তিনি ভারতের বাসিন্দাও হতে পারেন, স্থানীয়দের এমন সন্দেহের কথাও জানান এসআই শহীদ। 

নেত্রকোনার হাওড়দ্বীপ খালিয়াজুরী, কলমাকান্দা, মোহনগঞ্জ ও মদনসহ ৯ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে।  শুধু দুর্গাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বন্যার পানি কমছে।

নেত্রকোনার খালিয়াজুরী, মোহনগঞ্জ, মদন ও কলমাকান্দাসহ ৯ উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। শুধু দুর্গাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বন্যার পানি কমছে। 

এদিকে বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ো বাতাসে খালিয়াজুরী, মোহনগঞ্জ ও মদনের হাওর তীরবর্তী গ্রামগুলোতে ভাঙন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। 

এদিকে হাওরাঞ্চলের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খোলা আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতেও চলছে নানা সঙ্কট। বেশিরভাগ আশ্রয়কেন্দ্রই পানিবন্দি। 

অনেকগুলোর নিচতলা এবং টয়লেট ও নলকূপ ডুবে গেছে। এ কারণে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে পয়ঃনিষ্কাশন ও বিশুদ্ধ খাবার পানির সঙ্কট চলছে। 

 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.