কুসিক নির্বাচন: আওয়ামী লীগ বিএনপির চার প্রার্থী
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনের মনোনয়ন সংগ্রহ ও দাখিলের শেষ দিন মঙ্গলবার (১৭ মে) ছয়জন মেয়র প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাতও এদিন মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। আরও করেন কুমিল্লার দুইবারের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। তিনি প্রথমবার স্বতন্ত্র ও দ্বিতীয়বার বিএনপি থেকে মেয়র নির্বাচিত হন। এবার তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন। তার পক্ষে আইনজীবী কায়মুল হক মনোনয়নপত্র জমা দেন।
একইদিনে স্বতন্ত্রের ব্যানারে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নিজাম উদ্দিন কায়সার। বিকালে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ আফজল খানের ছেলে কুমিল্লা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদ পারভেজ খান ইমরান। তার পক্ষে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন জসিম উদ্দিন। তিনি দল মনোনীত প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতের বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচন করবেন।
মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও দলটির বিদ্রোহীসহ মোট ২ জন প্রার্থী, বিএনপি নেতা স্বতন্ত্র্র প্রার্থী ২ জন। আরও আছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রাশেদুল ইসলাম এবং নাগরিক ফোরাম সংগঠনের ব্যানারে স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান বাবুল।
২৭টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ১২০জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৫ ও ১০নং ওয়ার্ডে একজন করে জমা দিয়েছেন। বেশি জমা দিয়েছেন ৩ ও ২৩ নং ওয়ার্ডে ৮ জন করে। সংরক্ষিত ৯টি ওয়ার্ডে জমা দিয়েছেন ৩৮ জন। ৬ জন জমা দিয়েছেন ১নং ওয়ার্ডে।
নির্বাচন অফিসের সামনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত সাংবাদিকদের বলেন, 'অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগ অনেক বেশি ঐক্যবদ্ধ। আমাদের কোনো গ্রুপিং নেই। সবাই এক হয়ে কাজ করে বিজয় ছিনিয়ে আনব।'
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী পারভেজ খান ইমরান জানান, 'দলীয় নেতাকর্মীরা চান আমি নির্বাচন করি। গত ১০ বছরে কুমিল্লায় দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন হয়নি। আমি আশাবাদী, জনগণ আমাকে নির্বাচিত করবে। শেষপর্যন্ত আমি মাঠে থাকব।'
মনিরুল হক সাক্কুর পক্ষে মনোনয়ন দাখিল করেন তার ভাই আইনজীবী কায়মুল হক রিংকু। তাকে তার দলের অন্য প্রার্থী বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ওই বিষয়ে কোন কথা বলতে চাই না। কুমিল্লায় সাক্কুর মতো নেতা তৈরি হতে আরও পঞ্চাশ বছর লাগবে। তিনি দুইবার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। জনগণ এবারও তার কাজের প্রতিদান দেবে। আরো পরে নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে কথা বলব।
মহানগর স্বেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি নিজাম উদ্দিন কায়সার বলেন, তিনি (মনিরুল হক সাক্কু) বিএনপিকে ধারণ করেন না। বিএনপিও তাকে এখন ধারণ করে না। তিনি আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করেন। গত ১০ বছরে তিনি কুমিল্লার তেমন উন্নয়ন করতে পারেননি। মানুষ পরিবর্তনে বিশ্বাসী। আশা করি, জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাকে বিজয়ী করবে।
তফসিল অনুযায়ী, কুমিল্লা সিটি নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ১৭ মে। মনোনয়নপত্র বাছাই ১৯ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৬ মে। প্রতীক বরাদ্দ ২৭ মে। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৫ জুন। এবার দুই লাখ ২৯ হাজার ভোটার ইভিএম পদ্ধতিতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। ২৭টি ওয়ার্ডের ১০৫টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।