আরসিসি’র মেয়রের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কোরিয়ান কোম্পানির ‘কৌতূহলোদ্দীপক’ দাবি

বাংলাদেশ

17 February, 2022, 11:35 am
Last modified: 17 February, 2022, 12:49 pm
মেয়র লিটন এ অভিযোগকে হাস্যকর ও তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অপচেষ্টা হিসেবে অভিহিত করেছেন।

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (আরসিসি) মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের নামে তথাকথিত আটটি ফায়ার ট্রাক ক্রয়ে জাল নথি ব্যবহার করে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি কোম্পানির কাছ থেকে প্রায় ৭৯ হাজার ডলার প্রতারণার চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার শিনশিন গ্লোবাল কোম্পানি লিমিটেড (এসএসজি)-এর দাবি, মেয়র লিটন 'চুক্তির' জন্য মোট ৭৮,৮৯৩ ডলার ঘুষ দেওয়ার কথা বলেছিলেন। তবে এ অভিযোগকে সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছেন আরসিসির মেয়র। 

এমন অভিযোগকে উদ্ভট দাবি করে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন জানান, আরসিসি ফায়ার ট্রাক কেনার কোনো চুক্তিই করেনি। আন্তর্জাতিক একটি চক্র তার পাসপোর্ট জাল করে এবং কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের ভুয়া নাম-পদবী ব্যবহার করে ৯টি ভুয়া ডকুমেন্ট তৈরি করে এসএসজি থেকে ৮টি ফায়ার ট্রাক কেনার চুক্তি করেছে।

বুধবার সংবাদ সম্মেলনে মেয়র লিটন বলেছেন, "এসএসজি তৃতীয় কোন পক্ষ দ্বারা প্রতারিত হয়েছে, নাকি বাইওং-চেওল শিন ও তার সহযোগিরা নিজেরাই বিভিন্ন ভুয়া ডকুমেন্ট তৈরি করে আরসিসিকে ফাঁসানোর চেষ্টা চালাচ্ছে, তা যথাযথ তদন্ত ও তথ্য-প্রমাণ সাপেক্ষে জানা যাবে।" 

এসএসজি কোম্পানির সিইও বাইওং-চেওল শিন এবং চেয়ারম্যান জুন-সুক হান গত ২৫ জানুয়ারি সিউলে বাংলাদেশ দূতাবাসে প্রথমবার এ বিষয়ে অভিযোগ নিয়ে গেলে দূতাবাস কর্মকর্তারা তাদের আরসিসির সঙ্গে টেলিফোনে ও ই-মেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।

পরে গত ৮ ফেব্রুয়ারি আবারও বাংলাদেশ দূতাবাসে গিয়ে লিখিতভাবে অভিযোগ করে ৩ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণ চেয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ান এই কোম্পানি।

ওইদিন বাংলাদেশ দূতাবাসে গিয়ে এসএসজির সিইও ও চেয়ারম্যান তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে চুক্তিমতো দ্রুত ট্রাক সরবরাহ নেওয়া অথবা ক্ষতিপূরণ বাবদ ৩ লাখ ডলার দিয়ে বিষয়টি দ্রুত সমাধানের দাবি করেন। অন্যথায়, বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে বিষয়টি প্রচার করার হুমকি দেন তারা।

গণমাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ পেলে বিব্রতকর অবস্থা সৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি কোরিয়া ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ার আশঙ্কার কথা উল্লেখ করে বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি করতে ১১ ফেব্রুয়ারি মেয়র লিটনকে চিঠি পাঠান কোরিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর ড. মোঃ মিজানুর রহমান।

আরসিসি এলাকায় সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের বিষয়ে আলাপ করতে ২০১৮ ও ২০১৯ সালে রাজশাহী গিয়ে মেয়র লিটনের সঙ্গে দেখা করে করেন এসএসজি কোম্পানির সিইও শিন । তার মতে, ২০২১ সালের মে মাসে মেয়রকে কোরিয়ার একটি কোম্পানির তৈরি বিশেষ ফায়ার ট্রাক কেনার পরামর্শ দেন তিনি।

জবাবে রাজশাহী বিভাগের আটটি জেলার জন্য মেয়র আটটি ট্রাক কিনতে রাজি হন। ফায়ার ট্রাক সরবরাহ করার বিষয়ে গত ১৬ জুলাই এসএসজি ও আরসিসির মধ্যে ১০.১২ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি সই হয়।

 শিনের দাবি, "মেয়র লিটন জোর দিয়ে বলেছিলেন সিটি কাউন্সিল থেকে চুক্তিটি অনুমোদন করা দরকার। এবং সেই অজুহাতে মেয়র কাউন্সিল সদস্যদের অনুমোদনের জন্য আমার কাছে ৫ হাজার ডলার চেয়েছিলেন।" 

শিন বলেন, "আমি বিব্রত হয়ে পড়েছিলাম, কারণ এখানে (কোরিয়ায়) এ ধরনের কোনো প্রথা নেই, বা বিশ্বের কোথাও আমার ধারণা এরকম রীতি নেই; কিন্তু আমি তাকে এতটাই বিশ্বাস করেছি এবং কেবল চুক্তিটিকে সফল করার জন্য আমি টি/টি মাধ্যমে ফিলিপাইনে তার বন্ধুর অ্যাকাউন্টে ৫ হাজার ডলার পাঠিয়েছিলাম। ২৯ জুন, ২০২১ তারিখে তিনি এই অনুরোধ করেছিলেন।"

চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, এসএসজি মোট চুক্তির পরিমাণের ৫০ শতাংশ অগ্রিম অর্থপ্রদানের জন্য একটি বাণিজ্যিক চালান জমা দেয় এবং আরসিসি আনুষ্ঠানিকভাবে ওই বাণিজ্যিক চালানে স্বাক্ষরও করে, যার ওপর 'অনুমোদন' স্ট্যাম্পও রয়েছে। স্বাক্ষরের পর গত বছরের ২৭ জুলাই চালানটি এসএসজিকে ফেরত দিয়েছে আরসিসি। 

"দিনের পর দিন চলে গেলেও আমাদের অগ্রিম অর্থপ্রদান করা হয়নি। কয়েকবার অর্থ দেওয়ার তাগিদ দিলে মেয়র বলেন, 'আমাদের চালানটি কার্যকর করতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মোঃ শ্রীফুল ইসলাম এবং বাজেট অফিসার জনাব মোঃ শফিকুল ইসলাম খানের স্বাক্ষর প্রয়োজন। আমি তাদের স্বাক্ষর করতে বলেছি, কিন্তু তারা করছেন না; তাই আমাদের তাদের সঙ্গে এগোতে হলে অন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। দয়া করে আমাকে জরুরিভাবে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ ডলার পাঠান'", বলেন এসএসজির সিইও। 

"তার অনুরোধ রাখা ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় ছিল না, তাই আমি ১৭ আগস্ট ২০২১ তারিখে ফিলিপাইনে তার বন্ধু মিস্টার লর্ডসের অ্যাকাউন্টে ৩০ হাজার ডলার পাঠাতে বাধ্য হয়েছিলাম।"

"মেয়রের কথা অনুযায়ী, তারা (মেয়র কর্মকর্তারা) মেয়রকে জোর দিয়ে বলেছিল, আমরা তাকে ফায়ার ট্রাক সরবরাহকারীর কাছ থেকে প্রায় এক মিলিয়ন ডলার কমিশন নেওয়ার বিষয়ে অবগত, তাই আপনাকে এর একটি ভাগ আমাদের সঙ্গেও শেয়ার করতে হবে।" 

"এবং লেনদেন সম্পন্ন হওয়ার সময় মেয়র তার নিজের ও তার সদস্যদের জন্য চুক্তির পরিমাণের প্রায় ২ থেকে ৩ শতাংশ প্রণোদনা নিতে চেয়েছিলেন। ২০২১ সালের মে মাসে একদিন, আমি তাকে এই প্রণোদনার বিষয়ে ফোন করেছিলাম, তখন তিনি বলেছিলেন সমস্ত যোগাযোগ কেবল ই-মেইলের মাধ্যমে হবে। কারণ ফোনে যোগাযোগ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ", অভিযোগ পত্রে শিন এসব কথা উল্লেখ করেছেন।

"মেয়রের সঙ্গে আমার সহযোগিতামূলক সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও, তিনি আমাদের অগ্রিম অর্থপ্রদান করেননি। আমি তাকে অনেকবার অর্থ প্রদানের জন্য অনুরোধ করেছি; কিন্তু তিনি বলেছিলেন এঅ্যান্ডজি ফাইন্যান্স লিমিটেড ইউকে-এর কাছ থেকে অর্থ নিতে হবে, কারণ আরসিসির কাছে অর্থ ফেরত দেওয়ার জন্য যথেষ্ট বাজেট ছিলনা। তিনি আমাকে আবার এঅ্যান্ডজি ফাইন্যান্সের সিইও গ্রাহাম ডাডলি এবং মিসেস অ্যাগনেস ম্যাগারির কাছে প্রাথমিক কমিশন হিসেবে পাঠাতে আরও ১ লাখ ডলার প্রস্তুত করতে বলেন।"

"আমি এইবার এই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করি। কিন্তু মেয়র আমাকে একটি 'ইর ট্রান্সফার ইন্ট্রাকশন' পাঠিয়ে প্রলুব্ধ করেন, যা মেয়র এবং বাজেট অফিসার দ্বারা স্বাক্ষরিত ছিল, এঅ্যান্ডজি-এর পি/এফ অনুমোদন পত্র, পি/এফ চুক্তির সঙ্গে ফার্স্ট গাল্ফ ব্যাংকের আরডব্লিউএ ইত্যাদি কাগজপত্রও ছিল। এমনকি মেয়র এবং জনাব ডাডলির পাসপোর্টএর কপিও সঙ্গে ছিল", দাবি করেন শিন।
 
তিনি বলেন, মেয়র লিটনের পাসপোর্টের কপি দেখে আমি আবারও তাকে বিশ্বাস করি এবং তার নির্দেশনা অনুযায়ী মোট ৪৩ হাজার ৮৯৩ বিট কয়েন তাকে পাঠাই। 

"আমরা মেয়রের দ্বারা সম্পূর্ণভাবে প্রতারিত হয়েছি। আমরা আগে কখনো এভাবে প্রতারিত হইনি। আমাদের কোম্পানি এই আবর্জনা-সদৃশ কাজটি বিনা কারণে গত আট মাস ধরে করছে। মোট ৭৮ হাজার ৮৯৩ ডলার প্রতারণার শিকার হয়েছি আমরা এবং আমাদের কোম্পানির খ্যাতি ও ভাবমূর্তির যে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে তা টাকায় পরিমাপ করা যায়না", বলেন শিন। 
 
তিনি আরও বলেন, উপরোক্ত আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি অনেক বড়। কিন্তু বাস্তবতা বিবেচনা করে আমরা কমপক্ষে ৩ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণ হিসেবে দাবি করছি।
 
অন্যদিকে সংবাদ সম্মেলনে মেয়র লিটন বলেছেন, "আমার সঙ্গে ফোনালাপ কিংবা আমার ই-মেইলে যোগাযোগ না করে ভুয়া ই-মেইলে যোগাযোগের মাধ্যমে চুক্তিপত্র সম্পাদনের বিষয়টি অবহিত করার পরও দক্ষিণ কোরিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসে বাইওং-চেওল শিনের একাধিকবার যোগাযোগ ও মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করায় আমার ও আরসিসির ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে। এটি বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্টের গভীর অপচেষ্টা।"

তিনি বলেন, "সিটি কর্পোরেশনের কার্যাবলির মধ্যে ফায়ার ফাইটিং সেবা অন্তর্ভূক্ত নয়। ফায়ার ফাইটিং এর জন্য দেশে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স নামে একটি স্বতন্ত্র ও পূর্ণাঙ্গ সরকারি সংস্থা রয়েছে। তাই আরসিসির ফায়ার ফাইটিং ট্রাক কেনার কোনো প্রশ্নই আসে না। বিষয়টি অপ্রাসঙ্গিক ও অযৌক্তিকও।"

সিটি কর্পোরেশনের সকল কেনাকাটা পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অ্যাক্ট ২০০৬ ও ২০০৮ অনুযায়ী হয়ে থাকে। যেকোনো পণ্য কেনার ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সরবরাহকারীদের কাছ থেকে কেনা হয়। বিজ্ঞপ্তি ছাড়া সরকারি টাকায় এতো বড় অংকের যানবাহন কোনো সরবরাহকারীর কাছ থেকে কেনার সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে এসএসজির সঙ্গে ১০.১২ মিলিয়ন ডলারের সরাসরি ক্রয়চুক্তি সরকারি ক্রয় নীতিমালার পরিপন্থি ও বাস্তবসম্মত নয়।

মেয়র বলেন, "২০১৮ সালের জানুয়ারিতে শিনশিন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড রাজশাহীতে ১০০ মেগাওয়াটের সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণের আগ্রহ দেখিয়ে আরসিসির মেয়র বরাবর পত্র দেয়। তার প্রেক্ষিতে কোম্পানিটির প্রেসিডেন্ট বাইওং-চেওল শিন রাজশাহীতে আসেন। একাধিক আলোচনার পর আরসিসি অনাগ্রহ দেখালে সে সময়ই পত্র যোগাযোগসহ এ বিষয়টির সমাপ্তি ঘটে।" 

"এর প্রায় ৩ বছর পর ২০২১ সালের ১ ডিসেম্বর বাইওং-চেওল শিনের টেলিফোন নম্বর থেকে আরসিসির ইঞ্জিনিয়ারিং এডভাইজার মোঃ আশরাফুল হককে ফোন করে ৮টি ফায়ার ফাইটিং ট্রাক আরসিসির পক্ষ থেকে কেনার বিষয়ে জানতে চান। তখন আরসিসির সঙ্গে কোম্পানিটির কখনই যোগাযোগ না হওয়ার বিষয়টি তাকে জানিয়ে দেওয়া হয়। এরপর তিনি কয়েকটি ই-মেইল পাঠিয়ে তার কোম্পানি থেকে ৮টি ফায়ার ফাইটিং ট্রাক কেনা বিষয়ক ভুয়া ডকুমেন্ট পাঠায়।"

"আরসিসির ইঞ্জিনিয়ারিং এডভাইজার মোঃ আশরাফুল হকের কাছে পাঠানো ডকুমেন্ট ও পূর্বের কথিত ই-মেইলগুলো যাচাই করে দেখা যায় যে, বাইওং-চেওল শিন ৮টি ট্রাক কেনা সংক্রান্ত যাবতীয় যোগাযোগ একটি ভুয়া ই-মেইল অ্যাড্রেস (khzzaman_liton@yahoo.com) এর সঙ্গে করেছেন, যা আমার ই-মেইল অ্যাড্রেস নয়। প্রকৃতপক্ষে, আমার ই-মেইল অ্যাড্রেস khzaman_liton@yaho0.com।  বাইওং-চেওল শিন তার কথিত অর্থ লেনদেনের কোনো পর্যায়ে তিনি আমার সঙ্গে ফোনালাপ বা আমার প্রকৃত ই-মেইল অ্যাড্রেসে কোনো ই-মেইল প্রেরণ করেননি", জানান মেয়র। 
 
খায়রুজ্জামান লিটন জানান, "এরপরও গত ৪ ডিসেম্বর তিনি আমার বরাবর কথিত যে ডিমান্ড নোটিশ পাঠিয়েছেন, তার সংযুক্তি হিসেবে প্রাপ্ত ৯টি ডকুমেন্ট যাচাই-বাছাই করে আমার পাসপোর্ট জালিয়াতি ও ভুয়া ই-মেইল আইডি ব্যবহার, সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তার ভুয়া নাম, পদবী ও স্বাক্ষর ব্যবহারের বিষয়টি স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়েছে।"

"কোম্পানিটির ডকুমেন্টে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের যে প্যাড ব্যবহার করা হয়েছে, তা কর্পোরেশনের নয়। এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এর যে নাম দেখানো হয়েছে, সে নামে কোনো এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সিটি কর্পোরেশনে কখনও কর্মরত ছিলেন না। চুক্তিতে মোঃ ইসলাম খান উদ্দিন নামে সিটি কর্পোরেশনের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার নাম, পদবী ও সিল উল্লেখ রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এই নামে কোনো হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আরসিসিতে এখন নেই, কখনও ছিলেন না। এতে প্রমাণিত হয়, কোরিয়ান কোম্পানিটির দেওয়া চুক্তিপত্রটি বানোয়াট ও ভুয়া", বলেন মেয়র লিটন।

তিনি আরও বলেন, "এছাড়া ইমেইলে (জিএমটি+১) টাইম জোন দেখা যায়, যা বাংলাদেশ (জিএমটি+৬) বা দক্ষিণ কোরিয়া (জিএমটি+৯) এর টাইম জোন নয়। বরং জিএমটি+১ টাইম জোন নাইজেরিয়াসহ অন্য কয়েকটি দেশের। ডকুমেন্টে দেওয়া মোবাইল নাম্বারটিও আমার নয়। ডকুমেন্ট হিসেবে যুক্ত করা পাসপোর্টের দুটি জাল পাতায় প্রদত্ত আমার নাম, পাসপোর্ট নাম্বার, ইর্মাজেন্সি কন্টাক্ট ও অন্যান্য তথ্যাদি সঠিক নয়। পাসপোর্টে থাকা ছবিটি পাসপোর্ট সাইজের না। আমার ছবিটি পোস্টার বা ফেসবুক থেকে সংগ্রহ করে পাসপোর্টে লাগানো হয়েছে। সুতরাং কোরিয়ান কোম্পানিটির এই কথিত লেনদেনের দায় আমার বা রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ওপর বর্তায় না।"

খায়রুজ্জামান লিটন জানান, তার ও আরসিসির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অপতৎপরতা চলছে। এ ব্যাপারে ইতোমধ্যে বোয়ালিয়া মডেল থানায় জিডি করা হয়েছে। 

"প্রকৃত ঘটনা উল্লেখ করে বাংলাদেশ দূতাবাস, সিউল, দক্ষিণ কোরিয়াকে কর্পোরেশন চিঠি দিয়েছে। চক্রটির বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে দুই একদিনের মধ্যেই সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে মামলা করবো", তিনি আরও বলেন।
 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.