বন্য পাখির বিক্রি ধরতে হোটেলে ক্রেতা সেজে অভিযান

বাংলাদেশ

06 February, 2022, 05:35 pm
Last modified: 06 February, 2022, 05:41 pm
অভিযানের শুরুতে দোকানে থাকা বিক্রেতা ওয়াহিদ মিয়া প্রশাসনের কাছে সকল মাংস 'হাঁস আর কোয়েল পাখি' দাবি করে বসেন। তবে শেষমেশ পরিবেশ কর্মীদের ভিডিওচিত্র থেকে তা বন্যপাখির মাংস বলে প্রমাণিত হয়।

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর বাজারে হাঁকডাক করে সকল রেস্টুরেন্টে বিক্রি হয় বন্য পাখির মাংস। কিন্তু অভিযানে গেলেই সব হয়ে যায় হাঁস কিংবা কোয়েল পাখি। তবে এবার পরিবেশ কর্মীরা অবলম্বন করলেন অন্য এক কৌশল। খাবার জন্য সকল পাখির মাংসের নাম জেনে খেতেও বসলেন। এমন সময় শুরু হলো ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান। ঘটনাটি ঘটেছে রোববার (৬ জানুয়ারি) দুপুর পৌনে ১ টার দিকে।  

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ মৌলভীবাজারের সমন্বয়ে অভিযানের নেতৃত্ব দেন জৈন্তাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিপামনি দেবী।

অভিযানের শুরুতে দোকানে থাকা বিক্রেতা ওয়াহিদ মিয়া প্রশাসনের কাছে সকল মাংস 'হাঁস আর কোয়েল পাখি' দাবি করে বসেন। তবে শেষমেশ পরিবেশ কর্মীদের ভিডিওচিত্রে প্রমাণিত হলো বন্য পাখির মাংস। পরে ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে ভবিষ্যতে আর এমন কাজ করবেন না বলে মুচলেকা দেন তিনি।

অভিযানকালে উপস্থিত ছিলেন- বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ মৌলভীবাজারের বন্যপ্রাণী ও জৈববৈচিত্র সংরক্ষণ কর্মকর্তা মির্জা মেহেদি সারোয়ার, রেঞ্জ কর্মকর্তা গোলাম সারোয়ার, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম, র‍্যাব-৯ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৌমেন মজুমদারের নেতৃত্বে ডিএডি জসিম, এসআই নাজমুলসহ ৭ সদস্য।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারু মিয়া রেস্টুরেন্ট ৩৩ বছর থেকে এ ব্যবসা চালিয়ে আসছে। এজন্য একাধিকবার জরিমানাও গুনতে হয় তাকে। তবে সম্প্রতি কয়েক বছর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রেস্টুরেন্টটি ব্যাপক প্রচারণা পেলে দূর-দূরান্ত থেকে দলবেঁধে লোকজন তার রেস্টুরেন্টে খেতে আসেন। বাদ পড়েন না জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের কর্মকর্তারাও। সময়ের সাথে ওই রেস্টুরেন্টের আশপাশে বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্ট গড়ে ওঠে। সবগুলোতেই পাখির মাংস বিক্রি হয়।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ মৌলভীবাজারের বন্যপ্রাণী ও জৈববৈচিত্র সংরক্ষণ কর্মকর্তা মির্জা মেহেদি সারোয়ার বলেন, আমাদের কাছে তথ্য ছিল, এখানে বন্যপাখির মাংস বিক্রি করা হয়। তাই অভিযানের ব্যবস্থা করা হলে এখানে এসে বালিহাঁস, কালিম, ডাহুক, কুড়া, সামুকখুল, বক, ঘুঘু পাখির কাঁচা মাংস উদ্ধার করা হয়েছে। এগুলো ল্যাবে পরীক্ষার মাধ্যমে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আপাতত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এসময় আশপাশের সকল রেস্টুরেন্টে অভিযান চালানো হলেও তারা অভিযানের খবরে সবকিছু সরিয়ে নিয়েছে।

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.