নারায়ণগঞ্জে জয়ী হলেন কোভিড হিরো 

বাংলাদেশ

টিবিএস রিপোর্ট
18 January, 2022, 11:30 am
Last modified: 18 January, 2022, 02:22 pm
দেশে যখন কোভিডের সংক্রমণ প্রকট আকার ধারণ করে, সেসময় নিজ উদ্যোগে সাধ্যমত মানুষকে সাহায্য সহযোগীতা করেছেন মাকসুদুল আলম খন্দকার। এ বছরের নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে তিনি আবারও ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন।

কোভিড মহামারি চলাকালীন সময়ে মানুষের জন্য কাজ করায়, মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের (এনসিসি) ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিসেবে চতুর্থবারের মতো পুনর্নির্বাচিত করেছে ভোটাররা।

দেশে যখন কোভিডের সংক্রমণ প্রকট আকার ধারণ করে, তখন ঘরবন্দি ছিল সবাই। কেউ কারো সাথে দেখা করতো না। কেউ মারা গেলে দাফন করার লোকও পাওয়া যেত না। এমনকি আপন লোকজনও দূরে থাকত।

এমনই এক সময় এগিয়ে আসেন নারায়ণগঞ্জ শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার। লাশ গোসল করানো ও দাফন করানোসহ সকল কাজ করতেন তিনি। এসব কাজ করতে তার নেতৃত্বে নেতা-কর্মীদের নিয়ে তিনি গঠন করেন একটি টিম।

শুধু তাই নয়; নিজ উদ্যোগে সাধ্যমত মানুষকে সাহায্য সহযোগীতাও করেছেন তিনি। এসব কাজের মাধ্যমেই তিনি হয়ে ওঠেন নারায়নগঞ্জের কোভিড হিরো।

তবে, তার সেই ভাল কাজ বিফলে যায়নি। এবারের নির্বাচনে সে কাজের স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি। এ বছরের নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে তিনি আবারও ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন।

এবার নিয়ে তিনি টানা চতুর্থবারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন। ২০০৩ সালে পৌরসভা নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর, ২০১১ ও ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও বিজয়ী হন জনপ্রিয় এই নেতা।

বিএনপির সাথে জড়িত হলেও নির্বাচনে তাকে কেউ হারাতে পারেনি। এবারের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকারের ছোট ভাই তিনি।

১৬ তারিখে অনুষ্ঠিত নারায়নগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মাকসুদুল আলম ছাড়াও ৮ জন কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছে।

এর আগে ২০১৬ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির ১২ জন প্রার্থী বিজয়ী হয়েছিলেন। সেবার আওয়ামী লীগের ১১ জন নির্বাচিত হয়।

এবারের নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ১৫ জন জয়ী হয়েছেন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ছাড়াও, জাতীয় পার্টির (জাপা) দুজন ও সমাজতান্ত্রিক দলের একজন নির্বাচিত হয়েছেন।

এবারের বিজয়ী ২৭ কাউন্সিলরের মধ্যে ১২ জনই প্রথমবার নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া ১৩ জন হত্যা, মাদক, অস্ত্রসহ বিভিন্ন মামলার আসামি।

এদিকে ৯ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৮ জনই পুননির্বাচিত কাউন্সিলর।

নির্বাচিত প্রার্থীরা

নাসিক নির্বাচনে নবনির্বাচিত ২৭ সাধারণ কাউন্সিলর হলেন- ১ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের আনোয়ার হোসেন, ২ নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর বিএনপির মো. ইকবাল হোসেন, ৩ নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর আওয়ামী লীগের শাহজালাল বাদল, ৪ নং ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের নুর উদ্দিন, ৫ নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর বিএনপির সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনের ছেলে গোলাম মুহাম্মদ সাদরিল, ৬ নং ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর আওয়ামী লীগের মতিউর রহমান, ৭ নং ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের মিজানুর রহমান রিপন, ৮ নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর আওয়ামী লীগের রুহুল আমিন মোল্লা, ৯ নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেয়া ইস্রাফিল প্রধান, ১০ নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর আওয়ামী লীগের ইফতেখার আলম খোকন, ১১ নং ওয়ার্ডে বিএনপির অহিদুল ইসলাম ছক্কু, ১২ নং ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু,১৩ নং ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর বিএনপির মাকসুদুল আলম খন্দকার, ১৪ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের মনিরুজ্জামান মনির, ১৫ নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের অসিত বরন বিশ্বাস, ১৬ নং ওয়ার্ডে সাবেক প্যানেল মেয়র ওবায়দুল্লার ভাতিজা আওয়ামী লীগের রিয়াদ হাসান, ১৭ নং ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর আওয়ামী লীগের মো. আব্দুল করিম বাবু, ১৮ নং ওয়ার্ডে শ্রমিক লীগ নেতা কামরুল হাসান মুন্না, ১৯ নং ওয়ার্ডে জাতীয় পার্টির মোখলেছুর রহমান চৌধুরী, ২০ নং ওয়ার্ডে বিএনপির মোহাম্মদ শাহেনশাহ, ২১ নং ওয়ার্ডে দলনিরপেক্ষ শাহিন মিয়া, ২২ নং ওয়ার্ডে বিএনপির সুলতান আহমেদ ভূইয়া, ২৩ নং ওয়ার্ডে স্বেচ্ছাসেবক দলের মহানগরের সভাপতি আবুল কাউসার আশা, ২৪ নং ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর জাতীয় পার্টির আফজাল হোসেন, ২৫ নং ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর বিএনপির এনায়েত হোসেন, ২৬ নং ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর বিএনপির মো. সামসুজ্জোহা এবং ২৭ নং ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সিরাজুল ইসলাম।

সংরক্ষিত ৯ জন নারী কাউন্সিলর হলেন-১, ২ ও ৩ সংরক্ষিত কাউন্সিলর মাকসুদা মোজাফফর, ৪, ৫ ও ৬ সংরক্ষিত কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগম, ৭, ৮ ও ৯ সংরক্ষিত কাউন্সিলর মোসাম্মাৎ আয়শা আক্তার দিনা, ১০, ১১ ও ১২ সংরক্ষিত কাউন্সিলর মিনোয়ারা বেগম, ১৩, ১৪ ও ১৫ সংরক্ষিত কাউন্সিলর শারমীন হাবিব বিন্নী, ১৬, ১৭ ও ১৮ সংরক্ষিত কাউন্সিলর আফসানা আফরোজ বিভা, ১৯, ২০ ও ২১ সংরক্ষিত কাউন্সিলর শিউলি নওশাদ, ২২, ২৩ ও ২৪ সংরক্ষিত কাউন্সিলর শাওন অংকন এবং ২৫, ২৬ ও ২৭ সংরক্ষিত কাউন্সিলর সানিয়া আক্তার।

সানিয়া আক্তার এবার প্রথমবারের মত কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। বাকিরা পুননির্বাচিত হয়েছেন।

 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.