দ্রুত নয়, ঝামেলা-মুক্তও নয়: অনলাইন পাসপোর্টের বিপর্যস্ত অবস্থা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্চারুমপুর সাইফুল্লাহ কান্দি এলাকার বাসিন্দা ৭৪ বছরের সুফিয়া বেগম। ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর (ডিআইপি) হেডকোয়ার্টার্সের চারতলা থেকে ছেলে ও নাতনির সাহায্যে নামতে দেখা যায় এ অশীতিপর বৃদ্ধাকে।
মুখে স্পষ্ট ক্লান্তির ছাপ, সাফিয়ার চোখে আশাহীনের দৃষ্টি। তার এক ছেলে হাবিবুর রহমান থাকে ইতালিতে। ছেলের পাসপোর্ট নবায়ন ও জন্মতারিখ পরিবর্তনের আশায় গত এক বছর ধরে কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন এ বৃদ্ধা।
২৩ বছর বয়সী হাবিবুর থাকেন ইতালির রোমে। ২০২০ সালের ৫ অক্টোবরে হাবিবুর ইতালির রোম থেকেই নবায়নের আবেদন করেন। তাকে ওই বছরের ৯ নভেম্বর তা সংগ্রহের তারিখ দেওয়া হয়। তবে মহামারির চলাকালেই পেরিয়ে যায় সে তারিখ, তারপর থেকেই ঝুলে আছে হাবিবুরের পাসপোর্ট পাওয়ার বিষয়টি।
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে সুফিয়া বলেন, "জন্মতারিখ পরিবর্তনের আবেদন করায় আমার ছেলে এখন পাসপোর্ট পাবে না বলে তারা জানিয়েছেন। কারো কোনো গরজও নেই। তাই প্রতিদিন আমরা এখানে আসছি।"
তিনি আক্ষেপ করে আরো বলেন, "কর্তৃপক্ষ বলছেন পাঁচ বছরের বেশি সময় পর জন্মের তারিখ তারা পরিবর্তন করতে পারবেন না। অথচ আমার ছেলে ১৩ বছর আগে পাসপোর্ট করেছে। ২০০৮ সালে সে যখন ইতালি যায় তখন রিক্রুটিং এজেন্সি এই পরিবর্তন করেছিল । এখন আমরা বৈধ তারিখ চাই, কারণ পাসপোর্ট নবায়ন না হলে, আমার ছেলেকে ইতালিতে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে ঘোষণা করা হবে।"
এই ভোগান্তি সুফিয়া ও তার ছেলে হাবিবের একার নয়, আরো হাজার হাজার প্রবাসী ও তাদের স্বজনেরা এই দুর্ভোগের শিকার। এই ঘটনা দেশের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের বিশাল অবদানের প্রতি গুরুত্বহীনতাকেই যেন তুলে ধরছে।
বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে প্রায় এক কোটি প্রবাসী শ্রমিক বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে কাজ করছে। তারা প্রতি বছর দেশে প্রায় ২৪-২৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠায়।
ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রধান শরিফুল ইসলাম হাসান বলেন, "দেশ স্বাধীন হওয়ার ৫০ বছর পরও প্রবাসী শ্রমিকদের কোনো ধরনের ঝামেলামুক্ত সেবা দিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। পাসপোর্ট একজন ব্যক্তির একটি ভ্রমণ দলিল মাত্র, কিন্তু এই পরিষেবাটি কখনই ঘুষমুক্ত বা মসৃণ ছিল না।"
"কারো যদি জাতীয় পরিচয়পত্র থাকে, তাহলে কেন তাকে পাসপোর্ট পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে? আমরা কয়েক দশক ধরে প্রবাসীদের জন্য পাসপোর্ট পরিষেবাকে ঝামেলামুক্ত করতে চাইছি; শত শত কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানোর জন্য তাদের প্রশংসা করা হচ্ছে। তারপরও কর্তৃপক্ষ এত বছর ধরে একটি মসৃণ পাসপোর্ট ব্যবস্থা করতে তৈরি পারেননি!"
শরিফুল আরও বলেন, শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিদেশের বিভিন্ন মিশনেও (বাংলাদেশ দূতাবাস) অভিবাসী শ্রমিকদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।
এই সমস্যা নিরসনে ২০১৯ সালে অনলাইন পাসপোর্ট ব্যবস্থা চালু করে সরকার। এর মাধ্যমে ঘরে বসেই যে কেউ পাসপোর্ট অফিসারদের সেবা নিতে পারে।
বাংলাদেশের ডিজিটালাইজেশনের মুকুটে আরেকটি উজ্জ্বল রত্ন হিসাবে অনেক ধুমধামের মধ্যে চালু করা এই প্রক্রিয়াটির উদ্দেশ্য ছিল পাসপোর্ট পাওয়ার প্রক্রিয়াটিকে দ্রুততর করা।
তবে গুরুতর জনবল ঘাটতি এবং অবকাঠামোগত ক্ষমতার অভাবের ডিজিটালাইজড পাসপোর্ট প্রদানের ব্যবস্থা নাগরিকদের জন্য আশীর্বাদের চেয়ে মাথাব্যথাই বেশি হয়ে উঠেছে।
ই-পাসপোর্ট পেতে চলতি বছরের গত ৮ ডিসেম্বর চেষ্টা করেন একটি ব্যবসায়িক গ্রুপের শীর্ষ এক পরিচালক। তখন জানতে পারেন ২০২২ সালের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত কোনো স্লট ফাঁকা নেই। অথচ, সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি ক্যাটাগরির আওতায় থাকা ৪৮ পাতা ও ১০ বছর মেয়াদি এ পাসপোর্টের আবেদন মঞ্জুর করে মাত্র দুই দিনের মধ্যে দেওয়ার নিয়ম।
কিন্তু, নির্মম পরিহাস হলো- তিনি পরের মাসেও ছবি ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেওয়ার তারিখ পাননি।
এ কোম্পানি পরিচালক টিবিএস'কে বলেন, "তবে অবাক হওয়ার আরো বাকি ছিল। ডিআইপি অফিস প্রাঙ্গণে এক দালাল আমাকে বলে, বাড়তি ৫ হাজার টাকা দিলেই মাত্র ৫ কর্মদিবসের মধ্যে সে পাসপোর্ট রেডি করে দেবে। তার কথা অনুযায়ী, কোনো এক জাদুমন্ত্রের বলে ১৪ ডিসেম্বরে ই-পাসপোর্ট পেয়ে যাই।"
"আমি ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আইরিশ স্ক্যান ও ছবি দেওয়ার কোনো ডেট পেলাম না, কিন্তু একজন দালাল কীভাবে তা পারলো! তাহলে কি নেপথ্যে লেনদেন চলে? এই বাস্তবতায় সাধারণ মানুষ কতোটা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন!"- অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রশ্ন রাখেন তিনি।
ভ্রমণ-সম্পর্কিত কন্টেট নির্মাতা মো. আশরাফুল আলম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের কাছে তার নিজ অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, "অক্টোবরে আমার পাসপোর্টের মেয়াদ প্রায় শেষ হওয়ার উপক্রম হয়। তখন সরকারি ওয়েবসাইটে চাওয়া সকল তথ্যপূরণ করে আবেদন করি। কিন্তু বহুবার (দুই সপ্তাহে অন্তত ২০ বারের বেশি) চেষ্টা করেও আমি ছবির জন্য কোনো তারিখ পাইনি। নিয়মিত বা এক্সপ্রেস ডেলিভারি কোটা- কোনোটিতেই আমি খালি কোনো ডেট পাইনি।"
"নিয়মিত এবং এক্সপ্রেস ক্যাটাগরিতে তারিখই খালি ছিল না। পরবর্তী ৩ মাসও ছিল ভর্তি। শুরুতে আমি এক্সপ্রেস বিভাগে খালি তারিখ দেখেছি কিন্তু নিয়মিত বিভাগে দেখিনি। তাই প্রথমে ভুল করেছি ভেবে আমি আবেদনটি এক্সপ্রেসে বদলেছিলাম। কিন্তু তখন সমস্ত এক্সপ্রেস তারিখ বুক দেখায়।"
আরেক ভোগান্তির কথাও উল্লেখ করেন আশরাফুল। সিস্টেমটি এক সপ্তাহের বেশি কোনো আবেদনকারীর ডেটা সংরক্ষণ করে না, ফলে প্রতি সপ্তাহেই তাকে পাসপোর্ট ফর্ম পূরণ করতে হয়েছে। তার মতে, "এই অভিজ্ঞতা ছিল প্রচণ্ড বিরক্তিকর।"
চাহিদা বাড়লেও, সক্ষমতায় উন্নতি হয়নি:
অনলাইন আবেদন পদ্ধতি এবং ই-পাসপোর্ট চালু করে পাসপোর্ট কার্যক্রমে একটি বড় রূপান্তরের চেষ্টা করেছে সরকার। অনলাইনে বায়োমেট্রিক ডেটা ও অন্যান্য দরকারি নথি জমা দিয়ে আবেদন ফর্মপূরণের সুবিধাসহ ঝঞ্ঝাটমুক্ত ও দ্রুত সেবার যুগ সূচনার লক্ষ্য ছিল।
পাসপোর্ট অফিসে বাড়তি ভিড় এড়াতে অনলাইন অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেওয়ার সময় কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত কিছু সংখ্যক আবেদনকারীকে একটি নির্দিষ্ট সময়ে অনলাইন আবেদন ফর্মের হার্ডকপি জমা দেওয়ার সময় (টাইম স্লট) দেন।
কিন্তু, সে নতুন যুগের ব্যবস্থা কাগজেকলমেই রয়ে গেছে।
নতুন ব্যবস্থাটিতে এখনো সেবাপ্রত্যাশীদের আস্থা অর্জন করতে পারেনি, এখনও প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার আবেদনকারী আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে আসছেন। অথচ সেবাদানের সক্ষমতা মাত্র এক হাজার।
বিশাল ভিড়ের ফলে দীর্ঘ সারি হয়, এমনকি লিফটে ওঠার অপেক্ষার সময় ২০ মিনিটে পৌঁছে যায়।
পুরো ব্যবস্থায় স্পষ্টতই কিছু ভুল হয়েছে এবং তা আমলাতান্ত্রিক লাল ফিতার জটিলতার দিকেই অঙ্গুলিনির্দেশ নির্দেশ করে।
পাসপোর্ট অফিস ২০১৭ সালে ৬ হাজার ৮৭ জন কর্মী নিয়োগ করতে চেয়েছিল। তখন দৈনিক পাসপোর্ট বিতরণ ছিল ১০-১৫ হাজার।
কিন্তু প্রস্তাবিত লোকবল বৃদ্ধির চাহিদাকে ২০১৮ সালে সংশোধন করে ৪ হাজার ১৩৭ জনে নামিয়ে আনা হয়। ২০২১ সালে তা আরকদফা কমিয়ে ৯১৭ জন করা হয়। সম্প্রতি বিদ্যমান ১৪৭টি পদ লুপ্ত করে এই সংখ্যা ৩৪৭ জন করা হয়েছে। অর্থাৎ, মাত্র ১৯৯টি নতুন নিয়োগের সুযোগ রাখা হয়।
তবে সেই নিয়োগ প্রস্তাবের চূড়ান্ত অনুমোদনও এখনো পাওয়া যায়নি।
এদিকে, গত পাঁচ বছরে পাসপোর্টের চাহিদা দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে, পাসপোর্ট অফিসের তথ্যানুযায়ী, দিনে ৩৫ হাজারের বেশি পাসপোর্ট সরবরাহ করা হয়েছে।
কিন্তু, এর জনবলের চাহিদা এখনও মেটানো হয়নি। ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সিস্টেম বিশ্লেষক (পরিচালক) নজরুল ইসলাম ভূঁইয়ার মতে, আবেদনকারীদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যার সাথে মানিয়ে নিতে, ২০১৮ সালে দপ্তরটিতে ২ হাজার ৯৫৩ জনকে নতুন নিয়োগদানের প্রয়োজন ছিল।
বর্তমানে বিদেশি কূটনৈতিক মিশনসহ চারটি ক্যাটাগরিতে ১ হাজার ১৮৪টি পদ রয়েছে। নতুন লোকবল চাহিদা থাকা সত্ত্বেও বর্তমানে আরো ৮৪টি পদ শূন্য রয়েছে।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আইয়ুব চৌধুরী টিবিএসকে বলেন যে, প্রযুক্তি পরিবর্তনের সময় কর্মীর অভাব একটি বড় সমস্যা ছিল, কিন্তু পরিবর্তিত সেবা চাহিদার সাথে মানিয়ে নিতে, পর্যাপ্ত পরিমাণে জনবল বাড়ানো হয়নি।
তিনি জানান, আবেদন প্রক্রিয়ার ডিজিটালাইজেশন নথিপত্রের ঝামেলা কমিয়েছে, তবে 'সার্ভারে ত্রুটি' থাকায় সেবাপ্রার্থীরা অনলাইনে স্লট পেতে অসুবিধার মধ্যে পড়েছে, যা তারা ঠিক করার চেষ্টা করছেন।
তিনি আরো জানান, পাসপোর্ট অধিদপ্তর আগারগাঁও, উত্তরা ও কেরানীগঞ্জ- কেবল এই তিনটি স্টেশনে অনলাইন স্লট চালু করেছে। পাসপোর্ট অফিস প্রাক-মহামারি সময়ের তুলনায় প্রতিদিন কমপক্ষে ৫ হাজারের বেশি আবেদন গ্রহণ করছে। মহামারিকালে কার্যক্রম স্থগিত থাকার ঘাটতি পূরণেই তা করা হচ্ছে।
কার্যক্রম শুরু হওয়া মাত্রই পাসপোর্ট আবেদনের জোয়ার দেখা দেয়। তার সঙ্গে অধিদপ্তরের সীমিত জনবলের কারণ যোগ হয়ে সেবাপ্রত্যাশীদের জন্য দুর্ভোগ সৃষ্টি হয় বলে জানান তিনি।
"আমাদের অভিবাসনের বৈশ্বিক মান নিশ্চিত করতে হবে, সেজন্য জনসাধারণকে তাদের নাম, জন্ম তারিখ পরিবর্তনের জন্য ভোগান্তি পোহাতে হবে"- বলে মন্তব্য করেন মহাপরিচালক।
নাম না প্রকাশের শর্তে আরেকজন কর্মকর্তা বলেছেন, "গত তিন মাসে ৬০টি আবেদনে ৫৫ জন ভুয়া হলফনামা (এফিডেভিড) দিয়েছে, তাই পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়া কীভাবে কাউকে পাসপোর্ট দেওয়া সম্ভব?"
ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর (ডিআইপি) এর কর্মকর্তারা টিবিএস'কে বলেন, নাম সংশোধন, জন্মতারিখ বদল এবং 'এমডি বা মোহাম্মদ' ইত্যাদি সংশোধনের মতো নানান কারণে ৩০ হাজারের বেশি ই-পাসপোর্ট আবেদন স্থগিত রাখা হয়েছে।
দালালদের দৌরাত্ম্য:
ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে সন্তানদের নিয়ে নতুন পাসপোর্ট নিতে আসেন এক দম্পতি, সেদিন তাদের তৃতীয় বারের মতো খালি হাতে ফিরতে হয়।
অজ্ঞাত থাকার শর্তে ওই দম্পতি জানান, "স্লট ফাঁকা নেই বলে বার বার আমাদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু, তারপরও আমরা একটি টাকাও অবৈধভাবে দেব না। আমরা সবকিছু বৈধভাবে করতে চাই, আমাদের কোনো তাড়া নেই।"
এক্ষেত্রে অবৈধ পন্থাটি পাসপোর্ট অফিস চত্বরের আশপাশে থাকা অসংখ্য দালালের সহায়তায় চলছে।
সার্ভারের তথাকথিত ত্রুটির কথা বলে সশরীরে অ্যাপয়েন্টমেন্টের অনলাইন স্লট পরিবর্তন ঘটাচ্ছে দালালেরা। ফলে আবেদন পূরণকারী নাগরিকরা দেখছেন সম্পূর্ণ বুকড শিডিউল।
অপরদিকে কয়েক হাজার টাকার বিনিময়ে অনলাইন সেবা ঘোষিত সময়ের চেয়ে দ্রুত কাজ করে দিচ্ছে দালালেরাই।
টিবিএস এর এই প্রতিবেদকও কিছু দালালেরও সন্ধান পান, যারা মানুষকে বাড়তি টাকার বিনিময়ে ঝামেলামুক্তভাবে পাসপোর্ট পাইয়ে দেবার প্রস্তাব দিচ্ছে।
তাদেরই একজন হলেন- আলমগীর হোসেন। এক সময় তিনিও নিজের পাসপোর্ট করাতেই ঢাকা আসেন। কিন্তু, তাতে ব্যর্থ হওয়ার পর দালালির ক্যারিয়ার বেঁছে নেন।
তার মতে, তিনি এখন মানুষের বিদেশ যাওয়ার স্বপ্নপূরণে সাহায্য করছেন।
"নিজের পাসপোর্টটা তো করাতে পারিনি। কিন্তু, পুরো ব্যবস্থাটা এখানেই ঘুরে ফিরে শিখেছি। এখন আর নিজে দেশের বাইরে যাওয়ার স্বপ্ন দেখি না, তবে অন্যদের স্বপ্নপূরণে সাহায্য করি"- যোগ করেন আলমগীর।
টিবিএস এর লক্ষ্মীপুর, মৌলভীবাজার এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিরাও আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসগুলোয় একই রকম সমস্যার কথা জানিয়েছেন। সেবা প্রত্যাশীরা তাদের বলেছেন, সরাসরি তাদের পাসপোর্ট দেওয়া হয়নি, কিন্তু দালালেরা তাদের 'সুপার এক্সপ্রেস সেবা' পাইয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিচ্ছে।
এ দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর (ডিআইপি) দালালদের বৈধকরণের একটি পদক্ষেপও নিয়েছে। এতে নিবন্ধনের মাধ্যমে দালালদের জবাবদিহিতার মধ্যে আনা হবে। এ ব্যবস্থায় সেবাপ্রত্যাশীরা নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দিয়ে ঝামেলামুক্ত ভাবে পাসপোর্ট পাবেন।
সেবাপ্রত্যাশীদের আগেই দালালরা কীভাবে অনলাইন স্লট বুক করছে তা জানতে চাওয়া হলে অধিদপ্তরের পরিচালক (অ্যাডমিন ও ফিন্যান্স) শিহাব উদ্দিন খান কোনো জবাব দেননি।
তবে তিনি জানান, "দালালদের এজেন্ট হিসেবে নিয়োগদানের প্রস্তাব দিয়ে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে। এর ভিত্তিতে এজেন্টদের কার্যক্রম নজরদারিতে মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রক নীতিমালা প্রণয়নের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে।"