বরিশালে প্রিজন সেলে হত্যা মামলার আসামির হাতে আরেক হত্যা মামলার আসামি খুন

বাংলাদেশ

বরিশাল প্রতিবেদক
14 April, 2024, 10:20 pm
Last modified: 14 April, 2024, 10:35 pm
জানা গেছে, তরিকুল, মোতাহার ও অজিত একইসঙ্গে প্রিজন সেলের একটি কক্ষে ছিলেন। রবিবার ভোরে হঠাৎ করেই তরিকুল ঘুমিয়ে থাকা ওই দুই আসামিকে স্ট্যান্ড দিয়ে পেটাতে শুরু করেন।

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে এক হত্যা মামলার আসামির বিরুদ্ধে আরেক হত্যা মামলার আসামিকে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও একজন।

নিহতের নাম মোতাহার হোসেন (৬০)। তিনি বরগুনার বেতাগী উপজেলার কাউনিয়া গ্রামের রফিজউদ্দিনের ছেলে। আহত অজিত মণ্ডল মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রাজারচর গ্রামের গৌরাঙ্গ মণ্ডলের ছেলে। তিনি একটি চুরির মামলার আসামি।

অপরদিকে অভিযুক্ত আসামির নাম তরিকুল ইসলাম (২৫)। তিনি পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার কলাগাছিয়া গ্রামের ফারুক সরদারের ছেলে। 

অভিযুক্ত ও নিহত দুজনের নামেই নিজ নিজ জেলায় হত্যা মামলা রয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত তরিকুল মানসিক প্রতিবন্ধী।

আজ রবিবার (১৪ এপ্রিল) ভোরে হাসপাতালের নিচতলার প্রিজন সেলে মোতাহারসহ দুজনকে বেধড়ক পেটান তরিকুল। পরে আহতদের উদ্ধার করে চতুর্থ তলার সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ১টায় মোতাহার মারা যান।

বরিশাল নগরের কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম আরিচুল হক বলেন, 'হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন আসামি মানসিক রোগী তরিকুল অপর দুই আসামিকে স্যালাইনের স্টিলের স্ট্যান্ড দিয়ে পিটিয়েছেন। এতে তারা আহত হন। তাদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ডেপুটি জেলার নুর ই আলম সিদ্দিকী বলেন, 'প্রিজন সেলে একটি ঘটনা ঘটেছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। এ বিষয়ে আজ কিছু বলতে পারব না।'

জানা গেছে, তরিকুল, মোতাহার ও অজিত একইসঙ্গে প্রিজন সেলের একটি কক্ষে ছিলেন। রবিবার ভোরে হঠাৎ করেই তরিকুল ঘুমিয়ে থাকা অপর দুই আসামিকে স্ট্যান্ড দিয়ে পেটাতে শুরু করেন। এতে মোতাহারের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। অজিত আঘাত পেলেও তার আঘাত গুরুতর ছিল না।

ঘটনার সময় সেলের তালার চাবি নিয়ে একজন বাইরে নাস্তা করতে গিয়েছিলেন। তাই ওই সময় দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা প্রিজন সেলে ঢুকতে পারেননি।

হাসপাতাল প্রশাসন বলছে, মানসিক প্রতিবন্ধী ওই রোগীকে নিয়মানুযায়ী হাসপাতালের মানসিক ওয়ার্ডে রাখার কথা। আর সেখানে রাখলে এমনটা হতো না। কিন্তু সেখানে না রেখে সুস্থ মানুষের মধ্যে এভাবে রাখাটা উচিত হয়নি কারা কর্তৃপক্ষের। রাখলেও সেভাবে ব্যবস্থা রাখা উচিত ছিল।

বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার রত্না রায় বলেন, 'কী ঘটেছে তা তদন্ত ছাড়া বলা যাবে না। আমরা ঘটনা তদন্ত করেছি। তদন্ত শেষ করে বলতে পারব। দায়িত্বরতদের অবহেলার বিষয়টিও তদন্ত করা হচ্ছে।'

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.