উপকূলের মানুষ পানির কষ্টের কথা জানালেন সুইডেনের প্রিন্সেসকে 

বাংলাদেশ

খুলনা প্রতিনিধি
19 March, 2024, 03:15 pm
Last modified: 19 March, 2024, 03:20 pm
মঙ্গলবার সকালে কয়রার মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের নোয়ানি গ্রামের যজ্ঞমন্দির এলাকায় তিনি স্থানীয় মানুষদের লবণমুক্ত সুপেয় পানি সংগ্রহ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন ও মতবিনিময় করেন। প্রিন্সেসকে কাছে পেয়ে উপকূলের মানুষ লবণাক্ততার জন্য অতীতে পানযোগ্য পানির সংকটের কথা তুলে ধরেন।

বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের উপকূলে বেড়েছে লবণাক্ততা। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের সুপেয় পানি সংগ্রহ করার জন্য হাঁটতে হতো মাইলের পর মাইল। সেই কষ্ট দূর করতে এগিয়ে এসেছিল জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) এবং রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং সিস্টেম বাস্তবায়নের মাধ্যমে দূর করেছে পানির অসহনীয় কষ্ট। সেই কার্যক্রম দেখতে খুলনার উপকূলীয় কয়রা উপজেলায় এসেছিলেন ইউএনডিপি'র শুভেচ্ছা দূত ও সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া।

মঙ্গলবার সকালে কয়রার মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের নোয়ানি গ্রামের যজ্ঞমন্দির এলাকায় তিনি স্থানীয় মানুষদের লবণমুক্ত সুপেয় পানি সংগ্রহ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন ও মতবিনিময় করেন। প্রিন্সেসকে কাছে পেয়ে উপকূলের মানুষ লবণাক্ততার জন্য অতীতে পানযোগ্য পানির সংকটের কথা তুলে ধরেন। তারা জানান, আগে গ্রামীণ উৎস থেকে পরিবারের জন্য পানি সংগ্রহ করতে নারীদের বাড়ি থেকে দূরে যেতে হতো। আবার অনেক সময় লবণমুক্ত পানি পাওয়া কঠিন হয়ে পড়তো। এখন নতুন ওয়াটার হারভেস্টিং সিস্টেম হওয়ার পরে সহজেই লবণমুক্ত বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যাচ্ছে।

ওয়াটার হারভেস্টিং সিস্টেম প্রকল্পটি বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে পরিচালিত লজিক প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ করা হয়েছে। ইউএনডিপি, ইউএনসিডিএফ, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও সুইডেন সরকার এতে অর্থায়নে করেছে।

প্রকল্পটি প্রদর্শনের পরে সুডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস একই ইউনিয়নের শিকারিপাড়া এলাকায় লজিক প্রকল্পের আওতায় জলবায়ু সহনশীল জীবিকায়নের অংশ হিসেবে ভেড়া পালন, মৎস্য চাষ এবং জলবায়ু ও জীবিকা উন্নয়ন সমবায় সমিতির মধু বিপণন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। পরে তিনি কয়রার মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে অবস্থিত ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার পরিদর্শন করে ডিজিটাল সেন্টার হতে সেবা গ্রহণকারীরা কীভাবে সেবা পান সেটি পর্যবেক্ষণ করেন। পরবর্তীতে তিনি ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে ডিজিটাল সেন্টারের সুবিধা-সেবাসমূহ নিয়ে পটগানের পরিবেশনা উপভোগ করেন।

এরপর কয়রা উপজেলা সদরে বাংলাদেশ ডাক অধিদপ্তরের স্মার্ট সার্ভিস পয়েন্ট অব পোস্ট অফিস উদ্বোধন করেন ক্রাউন প্রিন্সেস। উদ্বোধনী কার্যক্রম শেষে তিনি চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে হেলিকপ্টার যোগে কয়রা ত্যাগ করেন। ক্রাউন প্রিন্সেসের সফরকালে সুইডেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী জোহান ফরসেল, বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক উপস্থিত ছিলেন।

এসময় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, "আমরা খুবই আনন্দিত যে সুইডেনের ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার পরিদর্শন ও স্মার্ট ডাক সার্ভিস পয়েন্ট পোস্ট অফিস উদ্বোধন করলেন। সরকার দেশের সাড়ে চার হাজার ইউনিয়ন, ৩১৯টি পৌরসভা ও সকল সিটি কর্পোরেশনে ডিজিটাল সেন্টার চালু করেছে। সেন্টারগুলো থেকে প্রতি মাসে প্রায় এক কোটি মানুষ সেবা গ্রহণ করছেন। যার মাধ্যমে আমরা ডিজিটাল সরকার ব্যবস্থা প্রণয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছি।"

এর আগে সকালে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মো. ফিরোজ শাহ, বাংলাদেশ পুলিশের খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) জয়দেব চৌধুরী, জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান খুলনার কয়রা উপজেলার মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের ভিকেএসএ পাঞ্জুগাজী গিলাবাড়ি ইউনাইটেড একাডেমি মাঠের অস্থায়ী হেলিপ্যাডে ক্রাউন প্রিন্সেসকে স্বাগত জানান।

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.