গত ১৪ বছরে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ১৩০ শতাংশ, দাম বাড়ানো হয়েছে ১৩ বার: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সরকারের সমালোচনা করে বলেছেন, 'গত ১৪ বছরে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ১৩০%, দাম বাড়ানো হয়েছে ১৩ বার। ক্যাপাসিটি চার্জের নামে গত ১৪ বছরে ১ লাখ ৪ হাজার ৯২৬ কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে।'
বুধবার বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, 'রোজার আগে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির মূল কারণ সরকারদলীয় সিন্ডিকেটের লুটপাট।'
বিদ্যুৎ, গ্যাস, জ্বালানি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামী শনিবার( ৯ মার্চ) ঢাকা মহানগরসহ সারা দেশে লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগের কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।
এসময় রিজভী বলেন, বিপিডিবি'র তথ্যমতে, ২০০৯ সালে দেশে বিদ্যুতের দাম ছিল ইউনিট প্রতি ৩.৭৩ টাকা। বর্তমানে দাম বেড়ে হয়েছে ৮.৯৫ টাকা। ইউনিট প্রতি এই দাম ২০০ ইউনিটের নিচে হলে, ২০০ থেকে ৩০০ ইউনিট হলে দাম হবে ইউনিট প্রতি ১২.০৩ টাকা। আর ৬০০ ইউনিটের উপরে কেউ যদি ব্যবহার করে তবে সেটির দাম হবে ইউনিট প্রতি ১৪.৬১ টাকা। ২০২২-২৩ সালে বিদ্যুৎ খাতে সরকার ৪৩ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা ভর্তুকি বরাদ্দ করেছিল, যার বড় একটি অংশ ব্যয় হয়েছে ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে।
তিনি বলেন, সরকার কমিশন ও লুটপাট করার জন্য তুলনামূলক কম টাকায় নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে কয়লা, তেল, গ্যাস ইত্যাদি পরিবেশ দূষণকারী ফসিল ফুয়েল ব্যবহার করে দেশের পরিবেশের বিপর্যয় ডেকে আনছে। কয়লা, গ্যাস, তেল ইত্যাদি আমদানির নামে দেশ থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার করছে।'
তিনি আরও বলেন, 'গ্যাস সংকটে দেশের শিল্প-কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বাড়িতে বাড়িতে চুলা জ্বলছে না। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে রমজান মাসে ভয়াবহ দুর্ভোগের মধ্যে পড়বে সাধারণ মানুষ।'
রুহুল কবির রিজভী বলেন, সবজির ভরা মৌসুমেও পিঁয়াজসহ সব জিনিসের দাম এখন আকাশচুম্বী। বাংলাদেশের ইতিহাসে ভরা মৌসুমে পিঁয়াজের চড়া মূল্য নজিরবিহীন ঘটনা। এই সময় পিঁয়াজের মূল্য থাকার কথা ১৫/২০ টাকা, কিন্তু এখনও ১০০ টাকার নিচে কোন পিঁয়াজ পাওয়া যায় না। রোজার আগে ডিম, মাছ-মাংসসহ সকল নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির মূল কারণ হলো সরকারদলীয় সিন্ডিকেটের লুটপাট। ডামি সরকারের মন্ত্রীরা গরীব সাধারণ মানুষের সাথে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য আচরণ করছেন।
তিনি বলেন, রোজার প্রাক্কালে সরকারের সিন্ডিকেটের সদস্য আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। পরিকল্পিতভাবে নানা অঘটন ঘটিয়ে এরই মধ্যে বাড়িয়ে দিয়েছে চিনির দাম। শুল্ক কমানোর পরদিন থেকেই দাম তো কমেইনি বরং বৃদ্ধি পেয়েছে। খেজুরের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে অস্বাভাবিক গতিতে, এত দাম বৃদ্ধি হয়েছে যে, মানুষ আর খেজুর কিনতে পারছে না। প্রতি কেজিতে খেজুরের দাম ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
শিল্পমন্ত্রীর সমালোচনা করে বলেন, 'খেজুরের বদলে বরই দিয়ে ইফতার করুন, আঙ্গুর-খেজুর লাগবে কেন?'। এই ধরনের বক্তব্য ধর্মপ্রাণ মুসলমানের প্রতি এক ধরনের রসিকতা। খেজুর দিয়ে ইফতারির যেমন সায়েন্টিফিক ব্যাখ্যাও আছে তেমনি একইভাবে মহৎ অনুভূতিও রয়েছে। কারণ আমাদের প্রিয় নবী (সা.) খেজুর দিয়ে ইফতারি করতেন।