ঢাকায় বসে আন্তর্জাতিক কোকেন রুট নিয়ন্ত্রণ করেন নাইজেরিয়ান নাগরিক: ডিএনসি

বাংলাদেশ

টিবিএস রিপোর্ট
29 January, 2024, 09:20 am
Last modified: 29 January, 2024, 09:21 am

হযরত শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর ও রাজধানীর উত্তরার একটি আবাসিক হোটেলে আলাদা দুটি অভিযানে সাড়ে ৮ কেজি কোকেন উদ্ধার ও দুজনকে গ্রেপ্তারের পর মাদকনিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) বলেছে, নাইজেরিয়ান নাগরিক ডন ফ্রাঙ্কি ওরফে জ্যাকব ফ্রাঙ্কি বাংলাদেশে কোকেন সিন্ডিকেটের মূল হোতা। তিনি 'বিগ বস' নামে নিজেদের কমিউনিটিতে পরিচিত এবং বাংলাদেশ নাইজেরিয়ান কমিউনিটির প্রেসিডেন্ট। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালানের নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন।

তবে কোকেন পাচারের ঘটনায় মূল হোতা দাবি করা ডন ফ্রাঙ্কিকে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি ডিএনসি। 

এ চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর ডিএনসির মহাপরিচালক মুস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী রবিবার (২৮ জানুয়ারি) বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, গত ২৪ ও ২৫ জানুয়ারি তারা সাড়ে ৮ কেজি কোকেনসহ মালাউয়ের নাগরিক নোমথানডাজো তোয়েরা সোকো (৩৫) নামে একজনকে বিমানবন্দর এবং উত্তরায় একটি হোটেল থেকে তানজানিয়ার নাগরিক মোহাম্মেদি আলি মোহাম্মদকে গ্রেপ্তার করেন।

তিনি বলেন,  মালাউ ও তানজেনিয়ার নাগরিককে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাদ, ডিজিটাল ডিভাইস ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে কোকেন চোরাচালান চক্রের অন্যান্য সদস্যসহ মূল হোতা ডন ফ্রাঙ্কি নামের এক নাইজেরিয়ান নাগরিকের সন্ধান পাওয়া যায়। গত ৯ বছর ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করা ফ্রাঙ্কি ৯ মাস আগে বাংলাদেশ ছেড়ে নিজ দেশে পাড়ি জমিয়েছেন।

মাত্র এক দিনের ব্যবধানে দেশের ইতিহাসে সর্বাধিক কোকেন উদ্ধারের ঘটনায় জড়িতদের ধরতে তদন্ত শুরু করে ডিএনসি। এরপর ২৫ থেকে ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—সাইফুল ইসলাম রনি (৩৪), আসাদুজ্জামান আপেল (২৭), ক্যামেরুনের নাগরিক কেলভিন ইয়েঙ্গে (৪২), নাইজেরিয়ান নাগরিক ননসো ইজিমা পেটার ওরফে অস্কার (৩০) ও এনডুলয়ে ইবুকা স্টানলি ওরফে পডস্কি (৩১)।

চক্রটির সম্পৃক্ততার বিষয়ে ডিএনসির মহাপরিচালক বলেন, গ্রেপ্তার কেলভিন চলতি মাসের ২০ তারিখ মোহাম্মেদি আলির সঙ্গে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। কেলভিন এই মাদক চক্রের অন্যতম সদস্য। তিনি বাংলাদেশে বসে মাদকের দেশি-বিদেশি সদস্যদের সমন্বয়ের কাজ করে থাকেন। তিনি কোকেনসহ গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে দেশ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এদিকে চক্রের মূলহোতা ডন ফ্রাঙ্কির বাংলাদেশী সহযোগী হচ্ছেন রনি। তিনি এই সিন্ডিকেটের বাংলাদেশি সমন্বয়কারী। তিনিও গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন ব্যবসার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে মাদক পাচারের কাজ করতেন। 

ডিএনসির মহাপরিচালক বলেন, রনির কাজ ছিল মাদক বহনকারীদের দেশে প্রবেশের প্রয়োজনীয় ইনভাইটেশন, হোলেট বুকিং ও ভিসা পাওয়ার কার্যক্রমে সহযোগিতা করা। ম্যাসপেক্স লিমিটেড নামের কথিত একটি প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে এই আমন্ত্রণপত্র ইস্যু করা হতো। রনির মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও অন্যান্য প্রযুক্তির ডিভাইস বিশ্লেষণ করে একাধিক ভুয়া ইনভাইটেশন লেটার পাঠানো ও চক্রের মূলহোতা ফ্রাঙ্কির সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.