চার দিনে চালের দাম যেভাবে বেড়েছে, ঠিক সেভাবেই কমানোর নির্দেশ দিলেন খাদ্যমন্ত্রী

বাংলাদেশ

টিবিএস রিপোর্ট
18 January, 2024, 09:30 am
Last modified: 18 January, 2024, 10:37 am
পাশাপাশি প্রয়োজনে চাল আমদানি করার ঘোষণাও দিয়েছেন মন্ত্রী।

চার দিনের মধ্যে যেভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে কেজিতে ৬ টাকা পর্যন্ত চালের দাম বেড়েছে, ঠিক সেভাবেই আগামী চার দিনের মধ্যে মিল মালিক ও চাল ব্যবসায়ীদের দাম কমিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। পাশাপাশি প্রয়োজনে চাল আমদানি করার ঘোষণাও দিয়েছেন মন্ত্রী।

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) খাদ্য অধিদপ্তরে আয়োজিত চাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে এসব কথা জানান খাদ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে সারাদেশের মিল মালিক, আড়তদার, কর্পোরেট ও চালের পাইকারী ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন। 

সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, 'যেভাবে চারদিনের ভেতরে লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়ানো হয়েছে, চার দিনের ব্যাবধানে আবার আগের জায়গায় নিয়ে আসবেন। বাজার তদারকি শুরু হয়েছে। আমাদের কার্যক্রম চলবে। যারা অবৈধ মজুত করেছে লাইসেন্স ছাড়া, সে যে-ই হোক তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।'

তিনি আরও বলেন, 'এখন আমনের ভরা মৌসুম। এ সময়ে চালের দাম বাড়বে, এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। মিল পর্যায়ে যদি দাম বেড়ে যায় তাহলে বাজারে তো বাড়বেই৷ আবার যারা কর্পোরেট, তাদের প্যাকেজিংয়ে ২-৩ টাকা খরচ হলেও তা সুপারশপে ৮ টাকা বাড়িয়ে মূল্য নির্ধারণ করা হয়।'

মন্ত্রী বলেন, চাল আমদানির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমদানি শুল্ক শূন্যে নিয়ে আসতে ফাইল অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। এখন যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে চাল আমদানি করা হবে। 

সভা সূত্রে জানা যায়, মিল মালিক ও আড়তদাররা দাবি করেন, তারা সবাই যার যার এলাকায় নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকায় নির্বাচনের আগে চালের দাম স্বাভাবিক ছিল। নির্বাচনের পর যখন সবাই একসঙ্গে ধান কেনা শুরু করে, তখন বাজারে চাপ তৈরি হয় এবং ধানের দাম বেড়ে যায়। যে কারণে চালের দামও বেড়েছে। 

তবে মিল মালিকদের দাবি, মাঝারি মানের চিকন চাল মিলগেটে ৪৭-৪৭.৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা যৌক্তিক। যেখানে সরকার কিনছে ৪৪ টাকা কেজি দরে। 

এ সময় অবশ্য মিল মালিকরা চালের দাম বৃদ্ধির পেছনে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে দোষারোপ করেন। তারা দাবি করেন, কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো বাজার থেকে যখন চাল কেনে, তখন তারা বাজারদরের চেয়ে বেশি দাম দিয়ে কেনে। যে কারণে ধানের দাম বাড়ে এবং বাজারে এর প্রভাব পড়ে। 

সভায় নওগাঁর ধান-চাল আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নিরোদ বরন সাহা বলেন, প্রতি বছর আমন মৌসুম শেষে চালের দাম কিছুটা বাড়ে। এখন যেটা বেড়েছে সেটা মাঝারি মানের স্বর্ণা-৫ জাতীয় চাল। এই চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ২-৩ টাকা। 

এ সময় তিনি দাবি করেন, আমন মৌসুমে মজুতের প্রবণতা অনেক বেশি, কারণ এ সময়কার ধান শুকনো থাকে। 

এ সময় খাদ্য সচিব মো. ইসমাইল হোসেন তার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে বলেন, 'প্রতি বছর এ সময় দাম বাড়ে না। দাম বাড়ে বোরোর ফসল ওঠার আগমুহূর্তে, মার্চ-এপ্রিল মাসে।' 

অবশ্য ব্যবসায়ীদের মধ্যে থেকেই দাবি করা হয়, মিল পর্যায়ে যখন ২ টাকা চালের দাম বাড়ে, তখন অনেকেই সেই সুযোগটা নিয়ে এর সঙ্গে আরও তিন-চার টাকা বাড়িয়ে দেয়। এ বিষয়ে মনিটরিং করা দরকার বলে দাবি করেন ব্যবসায়ীরা। 

একই সঙ্গে চালের চাহিদা এবং উৎপাদনের সঠিক তথ্য তুলে ধরার দাবিও করেন ব্যবসায়ীরা। 

এদিকে কর্পোরেটদের বেশি দামে চাল কেনার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এসিআইয়ের কর্মকর্তা মো. রুবেল পারভেজ বলেন, 'কর্পোরেটদের চালের ব্যবসার পরিমাণ ১ শতাংশের অনেক কম। এই মার্কেট শেয়ার নিয়ে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।' 

খাদ্য সচিব বলেন, 'কারা কতটুকু নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, সে বিষয়ে সরকারের কাছে তথ্য আছে।' 

 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.