মন্ত্রীদের প্রথম দিন: আন্তর্জাতিক চাপ, দুর্নীতি মোকাবিলা ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি আলোচনায়

বাংলাদেশ

টিবিএস রিপোর্ট
14 January, 2024, 06:35 pm
Last modified: 14 January, 2024, 07:16 pm
দুর্নীতি, মূল্যস্ফীতি, আন্তর্জাতিক চাপ,  টাকার অবমূল্যায়ন এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন ইস্যু আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল।

দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই নবনিযুক্ত মন্ত্রীরা আগামী দিনের চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরেন এবং সেগুলো মোকাবিলায় তাদের পরিকল্পনার কথা জানান।

দুর্নীতি, মূল্যস্ফীতি, আন্তর্জাতিক চাপ, টাকার অবমূল্যায়ন এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন ইস্যু আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল।

রবিবার (১৪ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে পৃথক আলোচনায় মন্ত্রীরা কী বলেছেন তা এক নজরে দেখে নেওয়া যাক।

আন্তর্জাতিক চাপের মুখে বাংলাদেশের অগ্রাধিকার অর্থনৈতিক কূটনীতি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নবনিযুক্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, 'নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশের উদ্বেগের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ কোনো চাপ অনুভব করছে না৷ তবে বাংলাদেশ বিভিন্ন দৃশ্যের কনসার্নগুলোকে মূল্য দেয়৷'

হাসান মাহমুদ বলেন, 'নির্বাচন নিয়ে গভীর, মধ্যম ও নিম্নচাপ ছিল৷ তবে আমরা কোনো চাপ অনুভব করছি না৷ আমরা পূর্ব-পশ্চিম সব দেশের সঙ্গেই কাজ করব৷'

তিনি বলেন, 'বার্লিন প্রাচীর পতনের পর বিশ্ব যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, এখন আবার পৃথিবী বিভক্ত৷ বিভক্তি আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ৷ তবে সবাই আমাদের বন্ধু ও  উন্নয়ন অংশীদার৷'

মন্ত্রী হিসেবে তিনি অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে ইকোনমিক ডিপ্লোম্যাসি স্ট্রং করার ওপর জোর দেবেন বলে জানান তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি, বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠানো এবং ব্যাংকিং চ্যানেলে সহজলভ্যতা ও উন্মুক্ততা বৃদ্ধির মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের বৈশ্বিক অবস্থানকে শক্তিশালী করতে চান।

অর্থপাচার ও টাকার অবমূল্যায়ন দুটি চ্যালেঞ্জ: অর্থমন্ত্রী

নবনিযুক্ত অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, অর্থপাচার ও বাংলাদেশি মুদ্রার অবমূল্যায়ন দুটি চ্যালেঞ্জ।

তিনি বলেন, 'দেখা যাক এ ক্ষেত্রে কী করা যায়। চ্যালেঞ্জ আছে, আমাদের কিছুটা সময় দিন।'

অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় একা পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না, তা কমাতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সময় প্রয়োজন। সব সংকট রাতারাতি দূর হবে না।

১০০ দিনের কর্মপরিকল্পনা করে বাস্তবায়ন করা হবে: পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নবনিযুক্ত মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন অগ্রাধিকারমূলক কর্মাকাণ্ড অন্তর্ভুক্ত করে ১০০ দিনের কর্মপরিকল্পনা তৈরি করে বাস্তবায়ন করা হবে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নবনিযুক্ত মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন অগ্রাধিকারমূলক কর্মাকাণ্ড অন্তর্ভুক্ত করে ১০০ দিনের কর্মপরিকল্পনা তৈরি করে বাস্তবায়ন করা হবে। পরিবেশমন্ত্রী বলেন, টেকসই উন্নয়ন, বন দখল রোধে আইনের যথাযথ প্রয়োগ করা হবে। আন্তর্জাতিক অর্থছাড়ের চেষ্টা করা হবে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়কে পারফর্মেন্সের দিক দিয়ে ১ নম্বরে নেওয়ার চেষ্টা করা হবে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করা হবে। দায়িত্ব পালনে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি করা বা তদবির গ্রহণযোগ্য হবে না। 

তিনি বলেন, গণমাধ্যমকে সার্বিক সহায়তা করা হবে, মিডিয়ার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করব। এছাড়াও, পরিবেশ দূষণ রোধে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরগুলোর সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন, তাই অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করব। 

স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি রোধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করবেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্তলাল সেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি রোধে তাকে কঠোর হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন এবং প্রয়োজনে তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছেন।

সামন্ত লাল সেন সাংবাদিকদের বলেন, 'মন্ত্রিপরিষদ সচিব যখন ফোন করেন, আমি ভেবেছিলাম হয়তো রোগীর বিষয়ে আলাপ করার জন্য ফোন করেছেন। কিন্তু মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান প্রধানমন্ত্রী আমাকে তার মন্ত্রিপরিষদে অন্তর্ভুক্ত করেছেন এবং তিনি আমাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।'

তিনি বলেন, 'সেই মুহূর্তে আমি স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলাম। তারপরে আমি স্বাস্থ্য খাত নিয়ে অনেক চিন্তা করেছি। কি কি করতে হবে, কিভাবে করতে হবে ইত্যাদি। '

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, 'গতকাল টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনকের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা গিয়েছিলেন। সেখানে যাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেই দায়িত্ব যথাযথ ও সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।'

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের প্রমাণ করতে হবে নির্বাচন অনুষ্ঠান সঠিকভাবে দেশ পরিচালনার সিদ্ধান্ত ছিল।'

ড. সেন বলেন, সাধারণ জনগণের দোরগোড়ায় চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দিতে চাই। একেবারে পাটগ্রামের মত প্রত্যন্ত অঞ্চলে মানুষ যাতে হাসপাতাল পায়, সহজে চিকিৎসা পায়, ভালো চিকিৎসক পায় সেই ব্যবস্থা করার চেষ্টা করব। চিকিৎসকরা যাতে মফস্বলে থাকতে চান সেই পরিবেশ গড়ে তুলব।'

তিনি বলেন, ঢাকা শহরের মতো শহরের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীরা মাটিতে শুয়ে থাকবে এটা আমি চাইনা। আমি জানি এতে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। কারণ আমি পাঁচ বেডের বার্ন ইউনিটকে ৫০০ বেডে উন্নীত করেছি। তখন আমি দেখেছি পদে পদে চ্যালেঞ্জ। অনেক ক্ষেত্রে আমার ফাইল ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। ফলে রাতারাতি করে ফেলা যাবে এমন নয়।'

মন্ত্রী আরও বলেন, 'এজন্য আমি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি পরিকল্পনা তৈরি করব এবং বাস্তবায়নের চেষ্টা করব।'

বিমানে কোনো দুর্নীতি নেই: ফারুক খান

নবনিযুক্ত বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেছেন, রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে কোনো দুর্নীতি ছিল না।

তিনি বলেন, 'আমি বিমানে কোনো দুর্নীতি আছে বলে স্বীকার করি না। আগে প্রমাণ দেখতে হবে। না দেখে কেন স্বীকার করব?'

 মন্ত্রী বলেন, 'বিমানে দুর্নীতি আছে কি না সেটি আগে দেখতে হবে। আমি আগেও এই মন্ত্রণালয়ে ছিলাম। সুতরাং এখানকার কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আমি জানি। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে যে কাজগুলো চলছে, সেগুলো যাতে দ্রুত শেষ হয় সেদিকটা দেখব।'

তিনি আরও বলেন, 'যাত্রী সেবা, লাগেজ হ্যান্ডেলিং কীভাবে আরো উন্নত করা যায় এবং কীভাবে আরো নতুন নতুন ডেস্টিনেশনে বিমান যেতে পারে সেগুলো দেখার চেষ্টা করব।'

পর্যটনমন্ত্রী বলেন, 'পর্যটন খাতে আমাদের অপার সম্ভাবনা আছে। কীভাবে সেই সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করা যায় সেগুলো দেখব।'

কোনো কর্মপরিকল্পনা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগের কর্মপরিকল্পনায় কোন মন্ত্রণালয় কি করবে সেটি বলা আছে, সেই কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করব। এর বাইরে বিভিন্ন সময় যে বিষয়গুলো আলোচনায় আসবে সেগুলো করব।'

সড়কে শৃঙ্খলার অভাব অন্যতম চ্যালেঞ্জ: ওবায়দুল কাদের

সড়কে যান চলাচলে শৃঙ্খলার অভাব অন্যতম একটি চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন নবনিযুক্ত সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আমরা বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে একযোগে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি, যার লক্ষ্য সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সড়কগুলোকে স্মার্ট করে তুলতে হবে। অনেক রাস্তার কাজও শেষ করতে হবে।'

নতুন সরকারের সামনে কী চ্যালেঞ্জ রয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে এসব চ্যালেঞ্জ আরও কঠিন। তবে আমি মনে করি কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা অসম্ভব নয়।'

তিনি আরও বলেন, 'যখন পদ্মাসেতুর কাজ শুরু হয়, তখন কেউ ভাবেনি এটা শেষ করা সম্ভব হবে। বিশ্বব্যাংকও পাশে ছিল না। কিন্তু সেটিও সম্ভব হয়েছে। মেট্রোরেল দিয়ে যে এ শহর সমৃদ্ধ হবে এ কথাও কেউ ভাবেনি। কিন্তু সেটাও শেখ হাসিনার সরকার উপহার দিয়েছে। আরও অনেক কাজ আছে সামনে, অনেক চ্যালেঞ্জ আছে।'

নতুন সরকারের ওপর দেশি-বিদেশি চাপ আছে কি না এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, 'আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিদেশ থেকে চাপ আছে। অভ্যন্তরীণভাবেও চাপ আছে। তবে আমরা চাপ মোকাবিলার সক্ষমতা রাখি। আমাদের শক্তি এ দেশের জনগণ। দেশের জনগণ সঙ্গে থাকলে কোনো চাপই মোকাবিলা করা অসম্ভব নয়।'

তিনি বলেন, 'অনেকে ভেবেছিল নির্বাচন হবে না। কিন্তু তাদের স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেছে।'

মন্ত্রী বলেন, 'নিম্ন আয়ের মানুষেরা কষ্টে আছে। মানুষ যাতে সহজে দ্রব্যমূল্য কিনতে পারে সেক্ষেত্রে জোর দেওয়া হবে।'

বিরোধীদের বার্তা দিতে চান কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'এ দেশ সবার। আমি বলতে পারি না যে দেশটা শুধু আওয়ামী লীগের। আমাদের সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক চর্চা করতে হবে। আমরা চিরকাল ক্ষমতায় থাকব না। এদেশের সব সম্পদ জনগণের। যারা বিরোধী দলে আছে, সেই দলও এই সম্পদের একটি অংশ রাখে।'

প্রয়োজনে মূল্যায়ন ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা হবে: শিক্ষামন্ত্রী

নতুন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, মূল্যায়ন পদ্ধতিতে প্রয়োজনে অবশ্যই পরিবর্তন আনা হবে।

আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমরা শিক্ষায় নানা ধরনের রূপান্তরের কাজ সূচনা করেছি। শিক্ষার সব কাজের মধ্যে একটা ধারাবাহিকতা থাকতে হয়। সুতরাং এখানে নতুন করে হঠাৎ করে কোনো কিছু চিন্তা করার অবকাশ খুবই কম। তাই সেই ধারাবাহিকতার মধ্যেই রূপান্তর, ধারাবাহিকতার মধ্যেই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হবে।'

তিনি বলেন, 'এই ধারাবাহিকতার মধ্যেই স্মার্ট সিটিজেন তৈরি করার জন্য স্মার্ট এডুকেশন সিস্টেম আমাদের প্রয়োজন, সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করব।'

মন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক শিক্ষার্থী যেন কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত দক্ষতা অর্জন করেন, তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, কর্মসংশ্লিষ্ট দক্ষতাগুলোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ জোর দিতে বলেছেন। কারণ এবার আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গীকার হচ্ছে কর্মসংস্থান। স্মার্ট সিটিজেন করতে হলে কর্মসংস্থান করতেই হবে এবং কর্মসংস্থানের জন্য মাল্টি স্কিল্ড স্মার্ট সিটিজেন আমাদের খুব প্রয়োজন। আর বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণার ওপর জোর দেওয়া হবে।'

নতুন কারিকুলাম প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, 'কারিকুলাম নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। সে আলোচনা-সমালোচনাগুলো মাথায় রেখেই দুর্বলতা বা  সমস্যা থাকলে সেগুলো সমাধান করা হবে। মূল্যায়নের জায়গায় একটা আলোচনা আছে। মূল্যায়নটা যাতে এমন না হয় যাতে সেটা প্রতিবন্ধকতা হিসেবে পরিণত হয়। সেগুলো বিবেচনা করেই আমরা আগামী দিনগুলোতে শিক্ষা পরিবারের সবাইকে নিয়ে কাজ করব।'

কৃষকদের পাট চাষে উৎসাহিত করা হবে: বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী নানক

কৃষকদের পাট চাষে উৎসাহিত করা হবে বলে জানিয়েছেন নবনিযুক্ত বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক।

রবিবার সচিবালয়ে প্রথম অফিসে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

রবিবার (১৪ জানুয়ারি) সচিবালয়ে দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিন সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, 'আমি কৃষক ও পাট উৎপাদকদের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকব এবং পাট উৎপাদনে উৎসাহিত করব।'

এসময় নানক বলেন, 'এর আগে ২০০৮ সালে আমি প্রতিমন্ত্রী ছিলাম। সেসময় একটি চ্যালেঞ্জে পড়েছিলাম। বিএনপি-জামায়াত এমন একটি দেশ রেখে গিয়েছিল, যে দেশটি ছিল মুখ থুবড়ে পড়া একটি দেশ। ছিল পানির হাহাকার, সড়ক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছিল, স্থানীয় সরকার ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমি প্রতিমন্ত্রী হিসেবে সেই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে নিয়ে সারা বাংলাদেশে ওই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে উত্তীর্ণ হয়েছিলাম।'

তিনি বলেন, 'আজ একটি নতুন মন্ত্রণালয়ে, নতুন জায়গায় আবার সেই মাঠের মানুষদের সঙ্গে যোগাযোগ হবে। মাঠের কৃষকদের সঙ্গ যোগাযোগ হবে। পাট উৎপাদনকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ হবে। পাট উৎপাদনে উৎসাহিত করা হবে।'

বৈদেশিক অর্থায়নে প্রকল্প ও  গ্রামীণ যোগাযোগ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবে: পরিকল্পনামন্ত্রী আবদুস সালাম

আগামী পাঁচ বছরে দেশের বৈদেশিক অর্থায়নে প্রকল্পগুলো সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবে বলে জানিয়েছেন নবনিযুক্ত পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল আবদুস সালাম।

তিনি বলেন, 'বিদেশি অর্থায়নে প্রকল্পগুলোর অনুমোদন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা হবে এবং সেগুলো বাস্তবায়নের ওপর জোর দেওয়া হবে।'

মন্ত্রী বলেন, 'বিদেশি অর্থায়নের ওপর আমাদের নির্ভরতার পরিপ্রেক্ষিতে, এই প্রকল্পগুলোকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।'

গ্রামীণ উন্নয়নের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী গ্রামীণ সংযোগ বাড়ানোর লক্ষ্যে এই প্রকল্পগুলোর জন্য দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, 'পাকা রাস্তাগুলো গ্রামের জনগণকে শহরাঞ্চলে সুবিধাজনক যাতায়াতের সুবিধা দেবে, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাবে। ফলে গ্রামীণ অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি আমাদের মূল অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।'

মন্ত্রী আবদুস সালাম আগামী পাঁচ বছরের জন্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনাকে তৃতীয় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হিসেবে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, 'গ্রামাঞ্চলে ডাক্তারদের নিরাপত্তা দেওয়া অপরিহার্য। চিকিৎসার জন্য মানুষের ঢাকায় যাতায়াতের প্রয়োজন কমাতে স্বাস্থ্য অবকাঠামো বাড়ানোর দিকে নজর দেওয়া হবে।'

বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিষয়ে মন্ত্রী পূর্ববর্তী সাফল্যের কথা স্বীকার করে সরবরাহ ব্যবস্থায় মনোযোগ দেওয়ার কথা বলেন।

তিনি বলেন, গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর বিদ্যুতের সরবরাহ নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ এবং এই সেক্টরে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের বিষয়ে সতর্ক করে দেন।

শিগগিরই চামড়া রপ্তানিতে নগদ প্রণোদনা দেওয়া হবে: শিল্পমন্ত্রী হুমায়ূন মজিদ মাহমুদ

চামড়া রপ্তানিকে উৎসাহিত করতে নগদ প্রণোদনা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান টানা দ্বিতীয়বারের মতো শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়া নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন।

তিনি বলেন, 'আশুগঞ্জে পুরনো কারখানার জায়গায় আধুনিক সার কারখানার পাশাপাশি ভোলায় নতুন কারখানা স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।'

হুমায়ুন আরও বলেন, 'আমরা চিনিকলগুলোকে আধুনিকায়ন করে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে চাই। লবণ শিল্পের উন্নয়নে কক্সবাজারে একটি লবণ ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হবে।'

তিনি আরও বলেন, পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে আমরা অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও সরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করব।

 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.