বিএনপির বহিস্কৃত নেতা একরামুজ্জামানের পাশে আ. লীগের মনোনয়ন বঞ্চিতরা

বাংলাদেশ

10 December, 2023, 02:20 pm
Last modified: 10 December, 2023, 02:23 pm
একরামুজ্জামান বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ছিলেন। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় গত ২৮ নভেম্বর তাকে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদসহ দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে বহিস্কার করা হয়।

বিএনপির বহিস্কৃত নেতা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের স্বতন্ত্রপ্রার্থী সৈয়দ এ. কে. একরামুজ্জামানের পক্ষে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়েছে আওয়ামী লীগের একাংশ। এদের মধ্যে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন দুইজন। তারা হলেন- নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সহ-সভাপতি রুমা আক্তার ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান সরকার।

এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য বদরুদ্দোজা মো. ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম। মূলত একরামুজ্জামানকেই তার শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করছেন রাজনীতি সংশ্লিষ্ট ও ভোটাররা।

গতকাল শনিবার (০৯ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা থেকে নাসিরনগর উপজেলা সদরে গেলে রাস্তায় একরামুজ্জামানকে বরণ করে নেন রুমা আক্তারের স্বামী, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের অর্থ সম্পাদক নাজির আহমেদসহ সর্বস্তরের মানুষজন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন রুমা আক্তার ও মনিরুজ্জামান। মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র পদে লড়তে মনোনয়নপত্রও জমা দেন তারা। তবে তাদের সমর্থনকারী এক শতাংশ ভোটারের সাক্ষরে গড়মিল থাকায় রিটার্নিং কর্মকর্তা দুজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেন। তবে ইতোমধ্যে একরামুজ্জামানকে সমর্থন দিয়েছেন রুমা আক্তার ও মনিরুজ্জামান সরকার।

এছাড়া একরামুজ্জামনের পাশে দাঁড়িয়েছেন নাসিরনগর উপজেলার ফান্দাউক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ফারুকুজ্জামান ফারুকসহ আওয়ামী লীগের একাংশের নেতাকর্মী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একরামুজ্জামান বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ছিলেন। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় গত ২৮ নভেম্বর তাকে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদসহ দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে বহিস্কার করে কেন্দ্রীয় বিএনপি।

একরামুজ্জামান আরএকে সিরামিকসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। গত নবম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন তিনি।

নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রুমা আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, 'আমি ও আমার স্বামী স্বতন্ত্রপ্রার্থী একরামুজ্জামানকে সমর্থন দিচ্ছি। কারণ সাধারণ মানুষ তাকে ভালোবাসেন।'

দলীয় প্রার্থীর পরিবর্তে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থন করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমরা তাকে (বর্তমান সংসদ সদস্য) পছন্দ করি না। পাঁচ বছরের নাসিরনগরের কোনো উন্নয়ন হয়নি। এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে আমরা একরামুজ্জামানকে সমর্থন দিয়েছি।'

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান সরকার সাংবাদিকদের বলেন, 'আমার পক্ষের ভোটার ও কর্মী-সমর্থকরা এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে একরামুজ্জামানকে সমর্থন দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি ভালো ও জনপ্রিয় মানুষ। তিনি সংসদ সদস্য হলে এলাকার উন্নয়ন হবে।'

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লতিফ হোসেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'তারা যে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন- সেটি আপনরা লিখেন। আমরা দলীয়ভাবে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি। তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক যা ব্যবস্থা আছে- সেটি আমরা নেব।'

আওয়ামী লীগ নেতাদের সমর্থনের বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের স্বতন্ত্রপ্রার্থী সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'দল-মত নির্বিশেষে মানুষ আমাকে ভালোবেসে বরণ করে নিয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমাকে সমর্থন দিয়েছেন- এটি ভোটের মাঠে আমার জন্য প্লাস পয়েন্ট।'

 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.