মোমেনকে মিসবাহ’র চ্যালেঞ্জ
সিলেট-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। নির্বাচন কমিশন থেকে মনোনয়পত্রও সংগ্রহ করেছেন তিনি।
মিসবাহর প্রার্থীতার ঘোষণায় দলের ভেতরেই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাওয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবুল মোমেনকে। মোমেন এখানকার বর্তমান সংসদ সদস্য। বুধবার (২৯ নভেম্বর) রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোয়নপত্রও জমা দিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, মিসবাহ এবার সিলেট-১ ও ৩ আসন থেকে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। নৌকা না পেয়ে তিনি এই দুই আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে মনোনয়পত্র সংগ্রহ করেছেন। এরপর আওয়ামী লীগের ভেতরেই এনিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা।
নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে ডামি প্রার্থী রাখতে মনোনয়নপ্রাপ্তদের নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নৌকার বিরুদ্ধে দলীয় কোনো নেতা প্রার্থী হলে– এবার শাস্তিমূলক কোন ব্যবস্থা না নেওয়ারও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। দলীয় প্রধানের এমন প্রশ্রয়ে এবার মনোনয়ন-বঞ্চিত আওয়ামী লীগ নেতাদের অনেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার চিন্তা করছেন।
গত নির্বাচনে সিলেট-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এ কে আব্দুল মোমেন। এরআগে টানা দুই মেয়াদে এই আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন মোমেনের অগ্রজ– সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত আবুল মাল আবদুল মুহিত। স্বাধীনতার পর থেকে সিলেট-১ আসন থেকে নির্বাচিত প্রার্থীর দলই সরকার গঠন করেছে, ফলে এই আসনটি ভোটের রাজনীতিতে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
এর আগে গত সোমবার নির্বাচন কমিশন থেকে সিলেট-১ আসনের জন্য মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়। মিসবাহ টানা তিনবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। এ ছাড়া, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সিলেট জেলা জজ কোর্টের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি বা পিপির দায়িত্বও পালন করেন দীর্ঘদিন। গত সিলেট সিটি নির্বাচনেও মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন-প্রত্যাশী ছিলেন তিনি।
এ ব্যাপারে মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, 'আমি দলের মনোনয়ন চেয়েছিলাম। তবে পাইনি। তবে আমাদের নেত্রী বলে দিয়েছেন, যে কেউ চাইলে প্রার্থী হতে পারেন। তার নির্দেশনা পেয়েই মাঠে নেমেছি। তা ছাড়া ছাত্রজীবন থেকে আমি রাজনীতিতে সক্রিয়। নির্বাচন করার জন্য নেতাকর্মী এবং এলাকার মানুষেরও চাপ রয়েছে।'
মিসবাহর ঘনিষ্ট একজন জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে নির্বাচন কমিশনের বাধ্যবাধকতা মেনে এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর সংগ্রহ করছেন মিসবাহ।
দলীয় নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন বলেন, 'নির্বাচনকে উৎসবমুখর ও অংশগ্রহণমূলক করতে দলীয় প্রধানই ডামি প্রার্থী হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। যাতে করে ভোটে মানুষের সম্পৃক্ততা বাড়ে। ফলে যে কেউ প্রার্থী হতে পারেন। তবে ডামি প্রার্থীরা নৌকার বিজয়ে কোন প্রভাব ফেলতে পারবেন না, বরং নির্বাচনকেই তারা উৎসবমুখর করবেন।'