৩ মাস পর থানায় হাজির পদ্মা সেতু থেকে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ রিকশাচালক!

বাংলাদেশ

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
01 October, 2023, 08:00 pm
Last modified: 01 October, 2023, 08:00 pm

গত ১৯ জুন নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ে পদ্মা সেতুতে উঠে নিরাপত্তাকর্মীদের ভয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছিলেন রিকশাচালক শরিফুল ইসলাম। কয়েকদিন উদ্ধারকাজ চালালেও সে সময় খোঁজ মেলেনি তার। 

নিখোঁজ হওয়ার ৩ মাস ১০ দিন পর অবশেষে খোঁজ মিলেছে শরিফুলের, বেঁচে আছেন তিনি। রোববার (১ অক্টোবর) দুপুরে পদ্মা সেতু উত্তর থানায় হাজির হন তিনি। পদ্মা উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।  

শরিফুলের বাড়ি বাগেরহাটের মোল্লাহাট গ্রামে। 

শরিফুল বলেন, তিনি ঢাকার হাজারীবাগে থেকে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। ঘটনার দিন রাতে পারিবারিক কলহের জেরে বাসা থেকে বের হয়ে যান। তার উদ্দেশ্য ছিল, ঢাকা থেকে বাগেরহাটে গ্রামের বাড়িতে চলে যাবেন। 

সেদিনের ঘটনা সম্পর্কে শরিফুল জানান, মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্ত হয়ে রিকশা চালিয়ে পদ্মা সেতুতে উঠে পড়েন তিনি। এক পর্যায়ে একটি গাড়ির সঙ্গে তার রিকশার ধাক্কা লাগলে নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে ধাওয়া দেন। এ সময় নিরাপত্তাকর্মীরা গুলি করবেন, এই ভয়ে রিকশা রেখেই তিনি সেতু থেকে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

তিনি বলেন, 'রাতভর নদীতে ভেসে ছিলাম আমি। নদীতে অনেক ঢেউ ছিল, কোনো কূল-কিনারা খুঁজে পাইনি। নিজের মতো করে সাঁতরাচ্ছিলাম। সকালে মাওয়া প্রান্ত থেকে দূরের একটি এলাকায় গিয়ে উঠি।

'পরে বাসে উঠে বাড়িতে গেলেও পরিবারের কেউ আমার এই ঘটনা বিশ্বাস করেনি। সবাই বলছিল, অটোরিকশাটি আমি চুরি করে বিক্রি করে দিয়েছি।'

শরিফুল বলেন, 'পরে জানতে পারি আমার অটোরিকশাটি থানায় আছে। এজন্য পদ্মা সেতু উত্তর থানায় আসি। বাড়ির লোকজন মনে করেছে, আমি এটি বিক্রি করে দিয়েছি।' অটোরিকশাটি নিয়ে যাওয়ার জন্যই তিনি থানায় হাজির হয়েছেন বলে জানান।

এ বিষয়ে শরিফুলের শশুর মোহাম্মদ দাউদ মোল্লাহ বলেন, '[নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার] ঘটনাটি আমাদের বলার পরও আমরা বিশ্বাস করতে পারিনি। কারণ পদ্মা নদীতে পড়ে কেউ জীবিত ফিরতে পারে না। শরিফুলের মানসিকভাবে কিছু সমস্যা ছিল। এই ঘটনা জানানোর পর অনেকদিন পর্যন্ত সে হাসপাতালে ভর্তি ছিল। এখন থানায় এসে দেখলাম তারই অটোরিকশাটি। এখন বিশ্বাস হচ্ছে।'

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.