বগুড়ায় শিশুদের অপহরণের হুমকি দিয়ে পোস্টার, এলাকায় আতঙ্ক

বাংলাদেশ

01 October, 2023, 05:35 pm
Last modified: 01 October, 2023, 05:35 pm

বগুড়ার কাহালু উপজেলার মুরইল ইউনিয়নের বাসিন্দা সালেহা বেগম। স্বামী মারা গেছেন কয়েক বছর হলো। এরপর তিনিই তার তিন সন্তানকে মানুষ করছেন। হঠাৎ আজ (১ অক্টোবর) সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখেন, তার বাড়ির দেওয়ালে ৫ হাজার টাকা চাঁদা চেয়ে পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। চাঁদা না দিলে আগামী ৭ অক্টোবরের মধ্যে সন্তানদের অপহরণের হুমকিও দেওয়া হয়। এরপর থেকে আতঙ্কে রয়েছেন সালেহা।

স্থানীয়রা জানান, এই চাঁদা শুধু সালেহার কাছেই নয়, এলাকায় অন্তত ৬০০ বাড়িতে একইভাবে পোস্টার সাঁটানো হয়েছে।

রোববার ভোরে এলাকাবাসীরা বিভিন্ন অঙ্কের চাঁদা দাবি করা লিফলেট বাড়ির দেওয়ালে দেখতে পান। এরপর থেকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়। এই আতঙ্কিত এলাকাবাসীদের একজন সালেহা। তিনি জানান, 'আমার বাড়িতে ৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে পোস্টার লাগানো হয়েছে। তিন ছেলেমেয়ে আর নাতি-নাতনি নিয়ে বসবাস করি। এর মধ্যে চাঁদাবাজির পোস্টারে আতঙ্কের মধ্যে আছি। ছোট বাচ্চাদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি।'

পুলিশ জানায়, নোটিশে বাড়ির মালিকের আর্থিক ও পারিবারিক অবস্থা বিবেচনা করে সর্বনিম্ন ২০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছে। এছাড়া পোস্টারে বলা হয়েছে, টাকা ৬ তারিখের মধ্যে নির্দিষ্ট স্থানে দিতে হবে। টাকা না দিলে আগামী ৭ তারিখের পর ছেলেমেয়ে হারিয়ে গেলে কোনো কিছু করার থাকবে না।

চাঁদা দাবি করা ব্যক্তি কে বা কারা, সেটা খুঁজে অল্প কিছু টাকার জন্য বাচ্চাদের বিপদে না ফেলার ব্যাপারেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে পোস্টারে। প্রত্যেককে নিজের টাকার সঙ্গে একটি কাগজে নিজের নাম লিখে স্থাপিত বাক্সে ফেলার ব্যাপারে নির্দেশনাও দিয়েছে দুর্বৃত্ত চক্র।

ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা শারমিন আকতার বলেন, 'রাতের বেলায় কে পোস্টার লাগাইছে, জানি না। অনেক কিছু লিখে রাখছে। কারও ২ হাজার, কারও ৫ হাজার টাকা চাঁদা ধরা হয়েছে। তবে আমার দরজায় ২০০ টাকা চেয়ে পোস্টার লাগাইছে। যাদের সন্তান আছে, তাদের চাঁদা বেশি দিছে। আমার সন্তান নাই, তাই ২০০ টাকা।'

এসব পোস্টার দেখার পর এলাকার সবাই এখন ছোট ছোট সন্তান নিয়ে ভয়ে আছেন। 

সকালের চাঁদার পোস্টার দেখার পর সন্তানকে নিজে মাদ্রাসায় নিয়ে গেছেন মোছা. সুলতানা। তিনি জানান, দিনের বেলায় সাধারণত এলাকার পুরুষেরা কাজে বের হন। এ কারণে সন্তানদের দেখভাল তারাই করেন। আগে ছেলেমেয়েরা একাই স্কুলে যাওয়া-আসা করত। আজ এই লিফলেট দেখে 'কলিজা থরথর করে কাঁপছে'।

ঘটনার পর সকালের দিকে বগুড়া জেলা পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা ওই এলাকার পরিদর্শন করেছেন। বগুড়া জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার বলেন, 'এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। কারা কারা জড়িত তাদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।'

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.