ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতিতেও খোলা চট্টগ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়, অভিভাবকদের দুশ্চিন্তা-ক্ষোভ
চট্টগ্রাম ও বান্দরবানে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ২০ লাখ মানুষ। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী। এ অবস্থায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হলেও খোলা রাখা হয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা।
চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে চট্টগ্রামের ১৯২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এ অবস্থায় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো বন্ধের দাবী জানিয়েছেন অভিভাবক ও শিক্ষকরা।
গতকাল চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে বন্যার পানিতে ডুবে নিপা পালিত (২২) নামে এক কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়।
এর আগে ২০২২ সালের আগষ্ট মাসে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে সারাদেশে ৯ জনের মৃত্যু হয়। কিন্তু সেই দুর্যোগেও দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো খোলা রাখা হয়েছিল।
নগরের চান্দগাঁও শমশের পাড়া এলাকার বাসিন্দা মনোয়ারা বেগম বলেন, "ঘরের ভেতর পানি চলে এসেছে। রাস্তায় একগলা পানি। এ অবস্থায়ও বাচ্চাদের স্কুলগুলো খোলা রাখা হয়েছে। অনেক অবিভাবক বাচ্চাদের নিয়ে স্কুলে যেতে মারাত্মক ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।"
নগরের মোহরা রাজাখান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকা জানান, বৃষ্টিতে বহদ্দারহাট থেকে কাপ্তাই রাস্তার মাথা পর্যন্ত পুরো সড়কই পানিতে তলিয়ে গেছে। কিন্তু স্কুল খোলা থাকায় বাধ্য হয়ে ভোগান্তি নিয়ে স্কুলে আসতে হচ্ছে। এর আগেও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় মাধ্যমিক ও কলেজ বন্ধ দেওয়া হলেও প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা রাখা হয়। ফলে হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষক ও অবিভাবকরা দুশ্চিন্তায় থাকেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা অফিসার মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, "এখন পর্যন্ত আমরা ১৯২টি প্রাথমিক স্কুলে পানি প্রবেশের খবর পেয়েছি। পাশাপাশি রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় অনেক স্কুলেই শিক্ষার্থীরা আসতে পারছেনা। আমরা ওইসব স্কুলে পাঠক্রম বন্ধ করে দিয়েছি, তবে অফিস কার্যক্রম চলছে। স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্তটি পুরোপুরি মন্ত্রণালয়ের।"
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মো. আসাদুজ্জামান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "চট্টগ্রামের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের ধারণা নেই। বিষয়টি নিয়ে আমরা জরুরিভাবে বসতে যাচ্ছি। পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।"
টানা কয়েকদিন ধরে চট্টগ্রামে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। এতে নগরের বিভিন্ন নিচু এলাকা তলিয়ে যাচ্ছে, বহু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া একাধিক স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনাও ঘটেছে।
অন্যদিকে, সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তার আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ ৩৪২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বান্দরবানে। সেখানে বৃষ্টিপাত এখনও অব্যাহত রয়েছে।