সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের নিয়োগ কমিটিতে থাকছেন না বিএসএমএমইউ ভিসি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

বাংলাদেশ

টিবিএস রিপোর্ট
07 June, 2023, 05:35 pm
Last modified: 07 June, 2023, 05:38 pm
হাসপাতাল পরিচালনার জন্য ১,০০০ জনবল নিয়োগ দেয়ার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে ২৫০ জনের মত জনবল নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি এই নিয়োগে ভিসির স্বজনপ্রীতি ও আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ দুদকে জমা দিয়েছে হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সেটি নিয়ে দেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, এ মাসে চালু হচ্ছে বিএসএমএমইউ সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের ইনডোর সার্ভিস। তবে হাসপাতালটির নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে এরইমধ্যে অনেক অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটিতে বড় একটি নিয়োগ হবে, সেজন্য একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করা হয়েছে। সে কমিটিতে থাকছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। কমিটি স্বচ্ছতার সাথে জনবল নিয়োগ দিবে।

আজ বুধবার (৭ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) 'মিট দ্য রিপোর্টার্স' অনুষ্ঠানে বিএসএমএমইউ সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের নিয়োগ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালিন নোমানী। অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন মাইনুল হাসান সোহেল।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, বিএসএমএমইউ এর বিষয়টি খুব ভালো করে দেখবো। ১,৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে জাতির জনকের নামের হাসপাতাল এটি। এই হাসপাতালের গুরুতর অনিয়ম আমরা হতে দিতে পারি না। তবে, আপনারা জানেন বিএসএমএমইউ একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। যে কারণে এ হাসপাতালের নিয়োগ, ক্রয়-বিক্রয়সহ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো তারা নিজেরাই নিয়ে থাকে। আমাদের সংশ্লিষ্টতা খুব বেশি থাকে না। কিন্তু, হাসপাতালটিতে সরকার অর্থায়ন করে থাকে। সে হিসেবে আমরা অবশ্যই অনিয়মের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখব। আমরা চাই না এখানে আসা রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হোক।

গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর বিএসএমএমইউ সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর প্রায় তিন মাস পর ওই বছরের ২৭ ডিসেম্বর থেকে বহিঃসেবা চালু হয় হাসপাতালে। 

হাসপাতাল পরিচালনার জন্য ১,০০০ জনবল নিয়োগ দেয়ার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে ২৫০ জনের মত জনবল নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি এই নিয়োগে ভিসির স্বজনপ্রীতি ও আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ দুদকে জমা দিয়েছে হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সেটি নিয়ে দেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ সরকারি হাসপাতালে দালালের দৌরাত্ম্য বন্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কি করছে তা জানতে চাইলে অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, 'ঢাকা মেডিকেলে দালাল নাই বলব না। সারাদেশে এই চিত্র আছে, তারা সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগীকে প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যায়। ঢামেক দালাল মুক্ত রাখতে ড্রেস কোড দিয়েছি। ড্রেস কোড দেয়া হয়, যাতে দালাল কে, আর কে কর্মী - তা বোঝা যায়। তবে মানুষকেও সচেতন হতে হবে। মন্ত্রণালয় থেকে পরিচালককে নির্দেশ দেয়া হয় অভিযান চালানোর জন্য।'

অ্যাম্বুলেন্সের জন্য নীতি ঠিক করা হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, 'আমরা অ্যাম্বুলেন্সের একটা পলিসি ঠিক করছি- যাতে ভাড়া নির্ধারিত থাকে। অ্যাম্বুলেন্সে যা যা থাকা প্রয়োজন, তা আছে কিনা দেখা হবে, ড্রাইভারেরা দালালি করে রোগীকে যেন অন্য হাসপাতালে নিয়ে না যায়, তাও দেখা হবে।'

জেলা উপজেলা হাসপাতালে গার্ড নিয়োগের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানান মন্ত্রী।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, '১৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে স্বাস্থ্য খাত ডিজিটালাইজড করার উদ্যোগ নেয়া হযেছে। প্রত্যেকে একটা হেলথ কার্ড পাবে। সে কার্ডে তার রোগের হিস্ট্রি থাকবে।'

তিনি আরো বলেন, 'সর্বজনীন হেলথ কাভারেজ অর্জনের জন্য আমরা কাজ হাতে নিয়েছি। সরকারি চিকিৎসা অলরেডি বিনামূল্যে দেয়া হয়। প্রাইভেট সেক্টরে স্বাস্থ্যসেবা কিভাবে অর্থায়ন করব, সেটাই এখন চ্যালেঞ্জ। নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ বাড়ছে, অ্যান্টিবায়োটিকের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার বেড়েছে, প্রাইভেট হাসপাতালে ৭০ শতাংশ সি সেকশন হয়, এদিকেও নজর দিতে হবে।'

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, গত সাড়ে চার বছরে ১৫ হাজার ডাক্তার, ২০ হাজার নার্স, ২৫ হাজার অন্যান্য কর্মী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। হাসপাতালে ৮,০০০ শয্যা বাড়ানো হয়েছে। মেডিকেল কলেজে ১,২০০ সিট বেড়েছে।

মন্ত্রী বলেন, ডিএসসিসি কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল নর্থ সিটি করপোরেশনকে ফিরিয়ে দেয়া হবে। তারা সেখানে হাসপাতাল করবে বলে শোনা যাচ্ছে।

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.