সরকারি কর্মচারীদের বেতন মূল্যস্ফীতির সাথে সমন্বয় করে বাড়ানো হবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ায় মূল্যস্ফীতির সাথে সমন্বয় করে সরকারি কর্মচারীদের বেতনভাতা বাড়ানো হবে।
তিনি বলেন, 'মহার্ঘ ভাতা (সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য) বলে কিছু নেই। মূল্যস্ফীতি যত বাড়বে তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমরা একটি পার্সেন্টেজ বেতন বাড়াই। তাছাড়া আমরা অনেক সুযোগ-সুবিধাও দিচ্ছি'।
দেশের বর্তমান বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের তেমন কোনো সংকট নেই জানিয়ে সরকার-প্রধান বলেছেন, 'তিন মাসের খাদ্য কেনার মতো ডলার যেন আমাদের হাতে থাকে, সেটা নিয়েই আমাদের চিন্তা। রিজার্ভ নিয়ে কোনো চিন্তা নেই'।
তিনি বলেন, আমাদের রিজার্ভ এখনো যা আছে তাতে অন্তত এটুকু বলতে পারি, আমাদের এমন কোনো সংকট এভাবে নাই। তবে আমরা সবসময় রিজার্ভ ধরে রাখারই চেষ্টা করি'।
আজ সোমবার (১৫ মে) বিকেলে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জাপানে সদ্য সমাপ্ত ত্রিদেশীয় সফর নিয়ে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা জাপান সফরকালে একটি বিনিয়োগ সম্মেলন এবং সংবর্ধনায় অংশ নেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য জাপানের চার জন বিশিষ্ট নাগরিককে 'ফ্রেন্ডস অব লিবারেশন ওয়ার অনার' পদক দেন তিনি।
এছাড়া, জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োশিমা হায়াশি, জাপান আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা (জাইকা)-র প্রেসিডেন্ট ড. তানাকা আকিহিকো, জাপান-বাংলাদেশ কমিটি ফর কমার্শিয়াল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন (জেবিসিসিইসি)-র চেয়ারম্যান ফুমিয়া কোকুবো, জাপানের বৈদেশিক বাণিজ্য সংস্থা (জেট্রো)-র চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী ইশিগুরো নোরিহিকো এবং জাপান-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ লীগের (জেবিপিএফএল)- এর প্রেসিডেন্ট তারো আসোর সাথে পৃথক পৃথক বৈঠকে অংশ নেন।
বাংলাদেশের সাথে বিশ্বব্যাংকের সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ২৮ এপ্রিল সফরের দ্বিতীয় ধাপে টোকিও থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে যান শেখ হাসিনা।
গত ১ মে বৈশ্বিক দাতা-সংস্থাটির সদর দপ্তরে 'বাংলাদেশ-বিশ্বব্যাংক অংশীদারত্বের ৫০ বছরের ওপর প্রতিফলন' শীর্ষক এক সেমিনারে অংশ নেন তিনি।
ওয়াশিংটনে অবস্থানকালে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা এবং ইউএস চেম্বার অব কমার্সের প্রধান নির্বাহী সুজান পি ক্লার্কের সাথে পৃথক বৈঠকে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।
এর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধিদের নির্বাহী পর্যায়ের এক শীর্ষ গোলটেবিল বৈঠকে এবং সংবর্ধনায় অংশ নেন।
ত্রিদেশীয় সফরের শেষ ধাপে ৪ মে পাঁচ দিনের আনুষ্ঠানিক সফরে লন্ডনে পৌঁছান সরকারপ্রধান। যুক্তরাজ্য সফরকালে ৬ মে বাকিংহাম প্যালেসে রাজা তৃতীয় চার্লস এবং রানি ক্যামিলার রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি।
লন্ডনে থাকার সময় শেখ হাসিনা রাজা তৃতীয় চার্লসের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী রিশি সুনাকের সাথে এক বৈঠকে অংশ নেন।
এছাড়া, কমনওয়েলথ দেশগুলোর সরকার-প্রধানদের দেওয়া রাজা তৃতীয় চার্লসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
যুক্তরাজ্যে অবস্থানকালে তিনি ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক ও রানি জেতসুন পেমার সাথে এক বৈঠক করেন।
ত্রিদেশীয় এই সফর শেষে শেখ হাসিনা ৯ মে দেশে ফিরে আসেন।