লন্ডনে ফ্ল্যাটে আগুন: বেঁচে যাওয়া বাংলাদেশিরা এখন গৃহহীন
গত ৫ মার্চ ইস্ট লন্ডনের জনাকীর্ণ একটি ফ্ল্যাটের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড থেকে বেঁচে যাওয়া কয়েকজন বাংলাদেশি সোমবার (২৪ এপ্রিল) থেকে গৃহহীন হয়ে পড়েছেন।
সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন খুঁজে না পেয়ে বর্তমানে তারা এই সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন বলে জানা গেছে।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর বেঁচে যাওয়া ভুক্তভোগীদের হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু সেই সুবিধা শেষ হয়েছে রোববার (২৩ এপ্রিল) রাতে। অর্থাৎ, ঈদের সপ্তাহান্ত থেকেই তারা গৃহহীন হয়ে পড়েছেন।
গত ৫ মার্চ ইস্ট লন্ডনের শ্যাডওয়েল স্টেশনের পাশে চারতলাবিশিষ্ট ভবন মাডক্স হাউসের দুই কক্ষের ফ্ল্যাটটিতে আগুন লাগে। ফ্ল্যাটে থাকা ইলেকট্রিক বাইসাইকেলের ব্যাটারি বিস্ফোরিত হয়ে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে জানা যায়। এ ঘটনায় মিজানুর রহমান নামে এক বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনার মাত্র কয়েকদিন আগেই লন্ডনে গিয়েছিলেন তিনি।
দুর্ঘটনার শিকার ফ্ল্যাটটিতে পাঁচজন থাকার অনুমোদন থাকলেও সেখানে ছিলেন ২২ জন। বাসিন্দারা জানান, গাদাগাদি করে থাকতে হতো তাদের; মাঝে মাঝে বাথরুমের মেঝেতেও ঘুমাতে হতো।
ওই অগ্নিকাণ্ডে বেঁচে যাওয়াদের মধ্যে ১৮ জন বাংলাদেশি ছাত্র ও শ্রমিক রয়েছেন।
তবে অগ্নিকাণ্ডের এক মাসেরও বেশি সময় পার হলেও তাদের অনেকেই এখনও থাকার জায়গার ব্যবস্থা করতে পারেন নি।
গত বছর হার্টফোর্ডশায়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন পড়তে যান নমুশ শাহাদাত (২৫)। তিনি জানিয়েছেন, 'আমরা আবাসন খুঁজেছি, এস্টেট এজেন্টদের কাছে গিয়েছি। কিন্তু সাশ্রয়ী মূল্যে, আমাদের সাধ্যের মধ্যে কিছুই পাইনি।'
'তারা ১২ মাসের পে-স্লিপ এবং আগের বাড়িওয়ালার রেফারেন্স চায়। আমরা কোথাও জায়গা পাইনি। যদি আমরা থাকার জন্য নতুন আবাসনের ব্যবস্থা করতে না পারি, তাহলে হয়তো রাতে টাউন হলে ঘুমাতে হবে,' বলেন তিনি।
অগ্নিকাণ্ডে বেঁচে যাওয়াদের অনেকেই আইন ও ব্যবসা বিষয়ে ডিগ্রি নিতে এবং অন্যরা ক্যাটারিং, উবার ইটসের মতো প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ এখন সপ্তাহে ১০০ পাউন্ড ভাড়ার বিনিময়ে আবাসনের ব্যবস্থা করেছেন। পে-স্লিপ, আগের বাড়িওয়ালার রেফারেন্স এবং স্যালারি রেকর্ড না দেখাতে পারায় তারা সুবিধাজনক আবাসনের ব্যবস্থা করতে পারছেন না। এসব দেখাতে না পারায় বাড়িওয়ালাও তাদের কাছে বেশি ভাড়া দাবি করছেন।