সদরে নৌকা জয়ী, বগুড়া-৪ আসনে মশাল
বগুড়া-৬ আসনে উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রাগেবুল আহসান রিপু বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। আর বগুড়া-৪ (নন্দীগ্রাম-কাহালু) আসনে উপ-নির্বাচনে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন মহাজোটের মশাল প্রতীকের প্রার্থী একেএম রেজাউল করিম তানসেন।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাতে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বগুড়ার জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ফলাফলে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও সংগঠনটির জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু ৪৯ হাজার ৩৩৬ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক মার্কা আবদুল মান্নান আকন্দ পেয়েছেন ২১ হাজার ৮৬৪ ভোট। মান্নান আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন।
এই আসনে তৃতীয় অবস্থানে হয়েছেন লাঙ্গল প্রতীকের নুরুল ইসলাম ওমর। তিনি এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। ওমর পেয়েছেন ৬ হাজার ৯৯৫ ভোট। এছাড়াও একতারা প্রতীকের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম পেয়েছেন ৫ হাজার ২৭৪ ভোট। তিনি রয়েছেন চতুর্থ অবস্থানে।
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নজরুল ইসলাম বটগাছ প্রতীকে ৪৬৮ ভোট, জাকের পার্টির মো. ফয়সাল বিন শফিক গোলাপ ফুলে পেয়েছেন ৪১৭ ভোট, জাসদের ইমদাদুল হক ইমদাদ পেয়েছেন ১ হাজার ৩৪০ ভোট, গণফ্রন্টের প্রার্থী আফজাল হোসেন মাছ প্রতীকে পেয়েছেন ১৭০ ভোট, স্বতন্ত্র প্রাথী মাসুদার রহমান হেলাল আপেল প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ৬১৮ ভোট, রাকিব হাসান কুমির প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ৪৪৯ ভোট, কুড়াল মার্কায় সরকার বাদল পেয়েছেন ২ হাজার ৮১১ ভোট।
বগুড়া-৬ (সদর) আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ১০ হাজার ৭৪৩ জন। এখানে মোট ভোট কাস্ট হয়েছে ৯১ হাজার ৭৪২।
আসনটিতে ভোট কেন্দ্র ছিল ১৪৩টি ও কক্ষ ছিল ১ হাজার ১৭টি। এ আসনে ১৪৩ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ১ হাজার ১৭ সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও ২ হাজার ৩৪ জন পোলিং কর্মকর্তা নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করেছেন ।
যদিও বগুড়া সদর আসনে ভোট শুরুর পর থেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে আসছেন। তাদের মধ্যে অনেকে এজেন্টে বের করে দেওয়ার অভিযোগে সরব ছিলেন সারাদিন। কিন্তু রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, দু-একটি কেন্দ্রের বিষয়ে আমাদের কাছে এমন অভিযোগ থাকলেও ওখানে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গিয়ে কাউকে পাননি। দুই আসনের কোথাও এমন পরিস্থিতি হলে তারা ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
এদিকে বগুড়া-৪ আসনে মোট ১১২ টি কেন্দ্রে তানসেন মশাল প্রতীকে ২০ হাজার ৪০৫ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম একতারা প্রতীকে পেয়েছেন ১৯ হাজার ৫৭১ ভোট। অর্থাৎ ৮৩৪ ভোটের ব্যবধানে হেরে গেছেন হিরো আলম। ১১২ কেন্দ্রে মোট বৈধ ভোট পড়েছে ৭৮ হাজার ৫২৪টি।
এই আসনে জাকের পার্টির গোলাপ ফুল মার্কায় আব্দুর রশিদ সরকার পেয়েছেন ৪ হাজার ৬৪ ভোট, স্বতন্ত্র ইলিয়াস আলী কলার ছড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ৮৪৮ ভোট, কুড়াল প্রতীকের কামরুল হাসান সিদ্দিকী (জুয়েল) পেয়েছেন ১০ হাজার ৪৪২ ভোট, দালান প্রতীকে গোলাম মোস্তফা পেয়েছেন ২ হাজার ৩৯০ ভোট, ট্রাক প্রতীকের মোশফিকুর রহমান পেয়েছেন ১০ হাজার ৭৯১ ভোট, জাতীয় পার্টির শাহীন মোস্তফা কামাল লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন ৬৪৪৬টি ভোট এবং বাংলাদেশ কংগ্রেসের তাজ উদ্দিন মণ্ডল ডাব প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৫৬৭ ভোট।
বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ২৮ হাজার ৪৬৯। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১১২টি। ভোট কক্ষের সংখ্যা ৭৭৭টি। এর মধ্যে অস্থায়ী কক্ষ ৪২টি। এই আসনে মোট প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ছিলেন ১১২ জন। এ ছাড়া সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ৭৭৭ জন এবং পোলিং অফিসার ১ হাজার ৫৫৪ জন।
গত বছরের ১০ ডিসেম্বরে বিএনপির দলীয় সাতজন এমপির পদত্যাগ ঘোষণা আসে। পরদিন ১১ বিএনপির ছয়জন সংসদ সদস্য স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। এরপর এই আসনগুলোতে উপনির্বাচনের ঘোষণা দেয় নির্বাচন কমিশন।