মশার প্রজননক্ষেত্র পেলেই মামলা: মেয়র আতিক

বাংলাদেশ

টিবিএস রিপোর্ট
12 December, 2022, 09:05 pm
Last modified: 12 December, 2022, 09:15 pm
এ সময় সবাইকে সাত দিনের সময় বেঁধে দিয়ে মেয়র বলেন, ‘সাতদিন পর আমি বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করব। ডিএনসিসির ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান চালাবেন। কোথাও কচুরিপানা বা মশার প্রজননক্ষেত্র পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, মশার প্রজননক্ষেত্র পেলে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ছাড় দেওয়া হবে না। সরকারি ও বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করা হবে।

সোমবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশান-২ এ নগর ভবনের অডিটোরিয়ামে কিউলেক্স মশার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে করণীয় সম্পর্কে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন।

মেয়র আতিক বলেন, 'ঢাকা শহরের কোনো জায়গা কিন্তু মালিক ছাড়া নেই। ঢাকার প্রতিটি জায়গা হয় ব্যক্তি মালিকানাধীন অথবা কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের অধীন। অতএব মালিক বা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজেদের জায়গা ও জলাশয় পরিষ্কার করতে হবে।'

এ সময় সবাইকে সাত দিনের সময় বেঁধে দিয়ে মেয়র বলেন, 'সাতদিন পর আমি বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করব। ডিএনসিসির ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান চালাবেন। কোথাও কচুরিপানা বা মশার প্রজননক্ষেত্র পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন সিভিল অ্যাভিয়েশন, রাজউক, গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ, স্বাস্থ্য বিভাগসহ অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধিগণ এবং ডিএনসিসির আওতাধীন এলাকার বিভিন্ন হাউজিং সোসাইটির প্রতিনিধিবৃন্দ।

সভায় ডিএনসিসি মেয়র বলেন, 'আমি সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখেছি এয়ারপোর্টের পার্শ্ববর্তী খাল, জলাশয় ও ডোবাগুলোতে মশার চাষ হচ্ছে। এগুলো সিভিল অ্যাভিয়েশন, রাজউক, গৃহায়ন কর্তৃপক্ষসহ অন্যান্য সংস্থার অধীন। জলাশয়গুলোতে প্রচুর পরিমাণে কচুরিপানা। এই কচুরিপানা পরিষ্কার না করলে আমরা সিটি কর্পোরেশন থেকে যতই মশার ওষুধ দেই না কেন মশা নিধন করা সম্ভব না। সবাইকে নিজেদের খাল, জলাশয় ও ডোবা পরিষ্কার করতে হবে। ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব নিতে হবে।'

এসময় ডিএনসিসির স্বাস্থ্য বিভাগকে সব সংস্থা ও হাউজিং সোসাইটিগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে ১ জানুয়ারি থেকে এক বছরের কর্মপরিকল্পনা নির্দিষ্ট করে একটি ক্যালেন্ডার প্রণয়নের নির্দেশ দেন তিনি।

ডিএনসিসি মেয়র আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'শুধু কিউলেক্স মশা নয়, এডিস মশাও এখনো রয়েছে। আমাদের মশক নিধন কার্যক্রম ও অভিযান চলমান। দুই ভবনের মাঝখানে খালি জায়গায় অনেকে ময়লা ফেলে দেন। দয়া করে এটি বন্ধ করুন। স্থানীয় জনগণ ও হাউজিং সোসাইটির উদ্যোগে এগুলো বন্ধে কাজ করুন। অনেক হাউজিং সোসাইটি মশার ওষুধ ছিটানোর মেশিন কিনেছেন। আমরা সেসব সোসাইটিকে ডিএনসিসি থেকে বিনামূল্যে মশার ওষুধ সরবরাহ করব।'

এসময় আতিকুল ইসলাম বলেন, 'বিভিন্ন বাসা-বাড়ির ও অন্যান্য ভবনের পয়ঃবর্জ্যের সংযোগ সরাসরি বৃষ্টির পানি নামার ভূ-উপরিস্থ ড্রেন দিয়ে শহরের খাল ও জলাশয় দূষণ করছে। আমরা বার বার বলেছি প্রতিটি ভবনে উৎসস্থলে পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা করতে হবে।'

গুলশান, বনানী, নিকেতন ও বারিধারা এলাকায় ইতোমধ্যে বর্জ্যবিভাগ থেকে সমীক্ষার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে জানিয়ে মেয়র বলেন, 'আগামী  ৪ জানুয়ারি এসব এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হবে। সারফেস ড্রেনে পয়ঃবর্জ্যের সংযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।'

মতবিনিময় সভায় ডিএনসিসি মেয়রের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. কবিরুল বাসার বলেন, 'মানুষ এখন অনেক সচেতন। সবাই জানেন কেন এবং কোথায় মশার জন্ম হয়। কিন্তু মানুষ মশা নিয়ন্ত্রণে সম্পৃক্ত হচ্ছেন না। মশা নিয়ন্ত্রণে মানুষকে সচেতনতার পাশাপাশি সম্পৃক্ত হতে হবে। একা কারও পক্ষেই মশা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মশা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে।'

ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা'র সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ জোবায়দুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহঃ আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক, ডিএনসিসির মশক নিয়ন্ত্রণ স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও ১১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেওয়ান আবদুল মান্নান, ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাগণসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.