হাসপাতালে নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশু রোগীর ভিড় বাড়ছে

বাংলাদেশ

16 November, 2022, 03:30 pm
Last modified: 16 November, 2022, 03:57 pm

দেশের হাসপাতালগুলোর শিশু ওয়ার্ডগুলো নিউমোনিয়া ও ব্রংকাইটিস আক্রান্ত শিশু রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে । 

হাসপাতালের মেঝেতে-বারান্দায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে অনেক রোগী।

অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে সারাদেশের বেশিরভাগ হাসপাতালে শিশু নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। 

শিশু হাসপাতালের এপিডিওমোলজিস্ট মাহফুজুর রহমান মামুন বলেন, "অক্টোবরের তুলনায় বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউট চলতি মাসে ১০% বেশি নিউমোনিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে। অক্টোবর মাসে ৩০৮ জন নিউমোনিয়া রোগী ভর্তি ছিলো, এ মাসের ১৩ দিনে ১০০ জনের বেশি নিউমোনিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে।" 

শিশু হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, এখন হাসপাতালে প্রতিদিন যত রোগী ভর্তি হচ্ছে তার প্রায় অর্ধেকই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। ঢাকার বাইরে থেকে রোগী বেশি আসছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শিশুরোগ বিভাগের প্রধান, অধ্যাপক ডা ইফফাত আরা সামাদ বলেন, শিশু ডিপার্টমেন্টের প্রতিটি ওয়ার্ডে নিউমোনিয়া ও ব্রংকাইটিস আক্রান্ত রোগীর চাপ বাড়ছে।

"আমাদের প্রতিটি শিশু ওয়ার্ডে ২০টি বেড আছে, সেখানে একটি বেডে চারটি করে শিশু ভর্তি থাকছে। এছাড়া মেঝেতেও রোগী ভর্তি থাকছে।" 

শিশুদের যাতে ঠান্ডা না লাগে সে বিষয়ে সতর্ক থাকার আর বুকের দুধ খাওয়ানোর পরামর্শ দেন ডা ইফফাত। 

চিকিৎসকরা জানান, শিশুর মাঝারি বা তীব্র মাত্রার জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিউমোনিয়ার প্রধান লক্ষণ। এছাড়া শ্বাসকষ্ট হলে প্রশ্বাসের গতি বেড়ে যায়, বুকের খাঁচা বা পাজর দেবে যায়। এসব লক্ষণ দেখা দিলে শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের হাসপাতালের (সিএমসিএইচ) শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের একটি বেডে ৫জন করে শিশু ভর্তি থাকছে বলে জানিয়েছেন সিএমসিএইচ শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী রেজিস্টার, ডা মাহমুদ শাহ আবরার।

যশোর ২৫০ শয্যা শিশু হাসপাতালে নভেম্বরের ১৩ দিনে আউটডোরে চিকিৎসা নিয়েছে প্রায় তিন হাজার শিশুরোগী, আর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ৭৯০ জন। হাসপাতালটিতে শিশুদের জন্য থাকা ২৪ বেডের বিপরীতে প্রতিদিন গড়ে ভর্তি থাকছে অন্তত ৬১ শিশু।

হাসপাতালের ওয়ার্ডের রোগীদের জন্য নির্ধারিত টয়লেটের সামনের মেঝেতেও ভর্তি আছে শিশু রোগী। 

যশোর মেডিকেল কলেজের সহকারি অধ্যাপক ডা. ইমদাদুল হক রাজু বলেন, হাসপাতালে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অন্তত তিন গুণেরও বেশি শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে। অভিভাবকদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, শিশুদের যেন ঠান্ডা না লাগে সেদিকে নজর দিতে হবে। আবহওয়া অনুযায়ী উষ্ণ রাখতে হবে শিশুকে।

শরীয়তপুরে গত এক সপ্তাহেই সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে ৯৫১ শিশু।

১০০ বেডের হাসপাতালটিতে শিশুদের জন্য থাকা ২০ বেডের বিপরীতে প্রতিদিন গড়ে ভর্তি থাকছে অন্তত ৭৫ শিশু। স্বাভাবিকের তিনগুনেরও বেশি রোগী ভর্তি থাকায় বারান্দায় ও মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে শিশুদের।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা.ফয়সাল আহম্মেদ বলেন, হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগী বেশী আসছে। তবে সামনে শিশুদের ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার পরিমাণ বাড়বে।
 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.