সিত্রাং তাণ্ডবে ঢাকায় বেড়েছে শাক-সবজির দাম

বাংলাদেশ

29 October, 2022, 09:45 am
Last modified: 30 October, 2022, 04:06 pm
রাজধানী ঢাকায় বিভিন্ন শাকের দাম এক সপ্তাহেরও কম ব্যবধানে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। আর সবজির দাম প্রকারভেদে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে সবজির ক্ষতি হওয়ায় বাজারে প্রতিটি সবজির দামই বেড়েছে। রাজধানী ঢাকায় বিভিন্ন শাকের দাম এক সপ্তাহেরও কম ব্যবধানে বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ।

সবজির দাম প্রকারভেদে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ব্যবাসীরা বলছেন, সিত্রাংয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বাজারে সবজি আসছে কম। সামনে দাম আরো বাড়তে পারে।

সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাতে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং আঘাত হানে বাংলাদেশে। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে ক্ষেতে প্রায় সব ধরনের ফসল, শাক-সবজির ক্ষতি হয়েছে।

শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মগবাজার ঘুরে দেখা যায়, লাল শাক, পুঁই শাক প্রতি আটি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা।

মগবাজার এলাকার বিক্রেতা নুরুল ইসলাম বলেন, "ঘুর্ণিঝড়ের পর আমাদের পাইকারি শাক কিনতে হচ্ছে দ্বিগুণ দাম দিয়ে। লাল শাক প্রতি আটি পাইকারি কিনতাম ৬ থেকে ৭ টাকায়, আজকে কিনেছি ১৬ টাকায়; লাল শাক ১০ টাকার জায়গায় হয়েছে ১৮ টাকা, পুঁই শাক ১০ টাকা থেকে হয়েছে ২০ টাকা।"

তিনি বলেন, "যেই দামে কিনি তার চেয়ে প্রতি আটি ২ থেকে ৩ টাকা বেশি দামে বিক্রি করি।" 

এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে পোটল, ঢেঁড়স, চিচিঙ্গা, বেগুন, ও কাঁকরোলসহ সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। পোটল ৫০ টাকা, শিম ১০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা মোহম্মদ বাবুল বলেন, "ঘুর্ণিঝড়ের পর দক্ষিণ অঞ্চল থেকে সবজি কম আসছে। এখন উত্তর অঞ্চলের সবজি দিয়েই চাহিদা মেটাতে হচ্ছে, তাই দাম একটু বেশি।" 

কারওয়ান বাজারে কথা হয় আব্দুল মজিদের সঙ্গে; তিনি বলেন, "সব কিছুর দাম বাড়ছে। আমরা কীভাবে বাঁচবো! ৫০ টাকার নিচে এখন কোনো সবজি নেই। ২০ হাজার টাকা বেতন পাই, সেই টাকায় ৪ জনের সংসার চলে না। গত দুই মাস ধরে প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকা ধার করে চলতে হচ্ছে।"

দাম কমেনি ডিম ও মাংসের

এদিকে, দাম বাড়ার পর ডিম ও মাংসেরও আর দাম কমেনি। ব্রয়লার মুরগির ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায়। 

প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা এবং পাকিস্তানি কক মুরগি ৩১০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

অন্যদিকে, গরুর মাংস ৭০০ টাকা আর খাসির মাংস কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা দরে। 

চালও বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামেই। চালের বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৩ থেকে ৭৫ টাকায়, আটাশ ৫৬ থেকে ৫৮ টাকা, নাজিরশাইল ৭০ থেকে ৯১ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চিনি নেই বাজারে

কারওয়ান বাজারে ১০ টি দোকান ঘুরে মাত্র একটি দোকানে চিনি বিক্রি করতে দেখা গেছে। সেটিও প্যাকেটজাত লাল চিনি।

গত ৬ অক্টোবর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতিকেজি খোলা চিনি ৯০ টাকা এবং প্যাকেটজাত চিনির দাম ৯৫ টাকায় বিক্রির জন্য দাম নির্ধারণ করে দেয়।

মিলমালিকদের দাবি, বিদ্যুৎ সংকটের কারণে উৎপাদন কমে গেছে। তাই সরবরাহও কম।

মেঘনা গ্রুপের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোঃ তসলিম শাহরিয়ার টিবিএসকে বলেন, "গ্যাস সংকটের কারণে আমাদের চিনি উৎপাদন কমে গেছে। যেখানে প্রতিদিন আমাদের ৪ থেকে ৫ হাজার টন চিনি বাজারে যেতো, সেখানে এখন যাচ্ছে ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টন।

কারওয়ান বাজারে ইয়াসিন জেনারেল স্টোরের সেলসম্যান আলী হোসেন বলেন, "দোকানে চিনি নেই। প্রতিষ্ঠানগুলো গাড়িতে করে সরাসরি চিনি বিক্রি করছে। আমাদের কাছে বিক্রি করলে আমরাও সরকার নির্ধারিত দামেই বিক্রি করতে পারতাম।" 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.