৪০-৫০% নারীর ঋণের আবেদন বাতিল হয় প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের অভাবে: গবেষণা

বাংলাদেশ

টিবিএস রিপোর্ট
24 September, 2022, 12:00 pm
Last modified: 24 September, 2022, 12:50 pm
নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ঋণ নিশ্চিত করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার পাশাপাশি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যও একগুচ্ছ সুপারিশ তুলে ধরা হয়।

ট্রেড লাইসেন্স না থাকা বা মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া, গ্যারান্টারের অভাব, নারীদের ঋণ দিতে ব্যাংকের অনীহা, ব্যবসায়িক আর্থিক ও লেনদেনের অভিজ্ঞতার অভাব, অপর্যাপ্ত ব্যবসায়িক জ্ঞান, দুর্বল ব্যবসায়িক পরিকল্পনা ইত্যাদি বাংলাদেশে নারীদের ব্যাংক ঋণ আবেদন প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পেছনে কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম। 'এসেসিং দ্য কারেন্ট ইকোসিস্টেম অফ ফিনান্সিয়াল প্রডাক্টস ফর ইউমেন ইন বাংলাদেশ' শীর্ষক এক গবেষণায় উঠে এসেছে এ তথ্য। 

গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় আবেদন করেও ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ নারী ব্যাংক ঋণ পান না।

বুধবার অ্যাস্পায়ার টু ইনোভেশন বা এটুআই-এর আয়োজনে "ইনোভেশনস ইন ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস: আর ইউ এড্রেসিং দ্য ফিনান্সিয়াল নিডস অ্যান্ড ইনক্লুশন চ্যালেঞ্জেস অফ উইমেন" শীর্ষক ওয়েবিনারে গবেষণাপত্রটি উপস্থাপন করেন লাইটক্যাসল পার্টনার্সের বিজনেস কনসাল্টেন্ট ফাহমিদ কায়সার। অনুষ্ঠানের মিডিয়া পার্টনার ছিল দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।

নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ঋণ নিশ্চিত করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার পাশাপাশি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যও একগুচ্ছ সুপারিশ তুলে ধরেন ফাহমিদ কায়সার ।

তিনি নারী উদ্যোক্তাদের জন্য নির্ধারিত ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নারী-বান্ধব শাখা স্থাপনে উত্সাহিত করতে নিয়ন্ত্রকদের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি আরও সুপারিশ করেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেনো নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সক্ষমতা উন্নয়ন কর্মসূচি সহজ করে তোলে; সেইসঙ্গে, সুবিধাভোগীদের ধরন অনুযায়ী পণ্য বাজারজাতকরণ এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ডিজিটাল অ্যাকাউন্টিং ব্যবস্থা চালু করে।

তিনি ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনুরোধ করেন, যেসব নারীরা সরাসরি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, তাদেরকে যেনো ঋণের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারমূলক হার প্রদান করা হয়। এতে নারীরা সক্রিয়ভাবে তাদের মালিকানায় অংশগ্রহণে উত্সাহিত হবে। 

লিঙ্গ সমতা উন্নয়নে, নারীর ক্ষমতায়নে এবং সম্পদের মালিকানা বৃদ্ধিতে নারীদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি প্রয়োজন রয়েছে বলে মন্তব্য করেন ফাহমিদ।

অনলাইন সেমিনারে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বিভাগের পরিচালক জয়শ্রী বাগচী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক নারী উদ্যেক্তাদের জন্য অনেক উদ্যোগ নিয়েছে। 

২০২৪ সালের মধ্যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সিএসএমই ঋণ এবং অগ্রীম স্থিতির পরিমাণ ১৫ শতাংশে উন্নিত করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। ব্যাংকের প্রতিটি শাখায় নারীদের জন্য আলাদা ডেক্স তৈরি করা হয়েছে। নতুন যারা নারী উদ্যোক্তা আসবে তাদের জন্য ৫০০ কোটি টাকার স্টার্টআপ ফান্ড চালু করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। 

মোবাইল ফিনান্সিং সেবা প্রতিষ্ঠান উপায়-এর পরিচালক ও সিইও রেজাউল হোসেন বলেন, ডিজিটাল ফিনান্সের জন্য সেলফোন, ইন্টারনেট, স্মার্টফোন এবং ফিনান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন- এই চারটি খাতকে একযোগে কাজ করতে হবে। এখানে কোনো একটি খাত পেছনে পড়ে গেলে চলবে না।

সিবিকে টেক ভেঞ্চারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোনিয়া বশির কবির বলেন, "নারী উদ্যেক্তাদের শেখাতে হবে, কেনো ব্যাংক লোন তাদের প্রয়োজন। অনেক ছোট উদ্যোক্তারা ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে ভয় পান। এই ভয় দূর করতে হবে। নারীদের উপযোগী পণ্য অফার করতে হবে।"

এটুআই প্রোগ্রামের জেন্ডার বিশেষজ্ঞ নাহিদ শারমিনের পরিচালনায় ওয়েবিনারে অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন সুইসকন্টাক্ট বাংলাদেশ থেকে বিপাশা এস হোসেন। 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.