সরকারের পতন না ঘটা পর্যন্ত মানুষ ঘরে ফিরবে না: আমীর খসরু 

বাংলাদেশ

20 September, 2022, 10:10 am
Last modified: 20 September, 2022, 10:27 am
তিন নেতাকর্মীকে হত্যা, জ্বালানি তেলসহ দ্রব্যমূল্যের ঊধ্বর্গতি ও সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশে হামলার প্রতিবাদে সমাবেশ করেছে বিএনপি। এসময় প্রায় প্রত্যেক নেতাকর্মীকে বাঁশের লাঠির মাথায় জাতীয় পতাকা লাগিয়ে মিছিলে অংশগ্রহণ করতে দেখা দেয়।

সোমবার রাজধানীতে বাঁশের লাঠি হাতে নিয়ে সমাবেশ করেছে বিএনপি। সমাবেশ শুরুর আগে গুলশান, বনানী থানার বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে যোগদান করেন। এসময় প্রায় প্রত্যেক নেতাকর্মীকে বাঁশের লাঠির মাথায় জাতীয় পতাকা লাগিয়ে মিছিলে অংশগ্রহণ করতে দেখা দেয়।

তিন নেতাকর্মীকে হত্যা, জ্বালানি তেলসহ দ্রব্যমূল্যের ঊধ্বর্গতি ও সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশে হামলার প্রতিবাদে এ সমাবেশ বিএনপির। 

সমাবেশে আগত নেতাকর্মীরা জানান, মহানগর উত্তরের পল্লবীসহ প্রায় প্রত্যেক সমাবেশ কর্মসূচিতে সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা হামলা করেছে। গত কয়েকদিন দলের সিনিয়র নেতা বরকত উল্লাহ বুলু, সেলিনা রহমান, তাবিথ আউয়ালসহ অনেক নেতাকর্মীকে হামলা করে আহত করেছে সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা। তাই এবার নিজেদের আত্মরক্ষার প্রস্তুতি হিসেবে বাঁশের লাঠি নিয়ে সমাবেশে এসেছেন।

তবে বিএনপির নেতাদের দাবি, এটা কোনো দলীয় সিদ্ধান্ত নয়। নেতাকর্মীরা নিজেদের রক্ষায় হয়তো পতাকা হাতে মিছিল নিয়ে এসেছেন।

মহাখালী গাউসুল আজম জামে মসজিদ সংলগ্ন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, 'দেশের প্রত্যেক গ্রামেগঞ্জে, থানা-উপজেলা ও শহরে মানুষ নেমে গেছে। এই ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন না ঘটিয়ে তারা ঘরে ফিরবে না।'

তিনি আরও বলেন, 'বিএনপির নেতাকর্মীরা সাহসের সঙ্গে রাজপথে নেমেছে। এর ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। এটা বিএনপির একার আন্দোলন নয়। এটা দেশকে বাঁচানোর আন্দোলন। বাংলাদেশের মানুষের ধৈর্যের বাধ ভেঙে গেছে। তাই এই সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে রাজপথে থাকতে হবে।'

বিএনপির এ সমাবেশ ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর ছিলো। সমাবেশের আশেপাশে আওয়ামী লীগের মিছিল দেখা না গেলেও গুলশান-১ চত্বর ও মহাখালী এলাকায় তারা অবস্থান নেন এবং মিছিল করেন।

মাথায় ব্যান্ডেজ নিয়ে সমাবেশে তাবিথ আউয়াল

গত শনিবার রাজধানীর বনানীতে এক মোমবাতি প্রজ্জ্বলন কর্মসূচিতে সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের হামলার শিকার হন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। হামলায় তার মাথা ও শরীরে বিভিন্ন জায়গা আঘাতপ্রাপ্ত হয়।

সমাবেশে তাবিথ আউয়াল বলেন, 'দেশের মানুষকে বলব, যতই আমাদের মাথা ফাটাক, হাত ভেঙে দিক আমরা মাঠে আছি। যতক্ষণ পর্যন্ত এই সরকারকে সরিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়তে না পারি ততোক্ষণ আমরা মাঠে রাজপথে আছি। কেউ যুদ্ধের ময়দান থেকে নড়ব না।'

বিএনপি উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আমিনুল হকের পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা আবদুস সালাম, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, কামরুজ্জামান রতন, সরাফত আলী সপু, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, সুলতানা আহমেদ, সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।

আবারও নারায়ণগঞ্জে বিএনপি-যুবদল নেতাদের বাড়িঘরে হামলা, লুটপাটের অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় ভুলতার পর এবার চনপাড়া পুনর্বাসনকেন্দ্র এলাকায় বিএনপি ও যুবদলের পাঁচ নেতার বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার রাত সাড়ে ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত এসব হামলার ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর বক্তব্য, ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এ সময় হামলাকারীরা 'বিএনপির দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান' বলে স্লোগান দেয়। বাড়ির লোকজনকে মারধর ও জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়। হামলাকারীদের অধিকাংশই কিশোর।

এর আগে গত শনিবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ভুলতা এলাকায় জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি মাসুদুর রহমানের বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। একই রাতে যুবদল ও ছাত্রদলের আরও পাঁচ নেতাকর্মীর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান লুট করা হয়েছে বলে অভিযোগ বিএনপির। 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.