জামানত ছাড়াই কৃষকদেরকে ঋণ দেওয়া যায়: কৃষিমন্ত্রী 

বাংলাদেশ

টিবিএস রিপোর্ট
19 September, 2022, 09:50 am
Last modified: 19 September, 2022, 12:09 pm
সরকার কৃষিখাতে ৪% স্বল্প সুদে কৃষকদেরকে ঋণ দিচ্ছে। কিন্তু এ ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে বিদ্যমান কঠিন শর্ত অনেক সময়ই কৃষক পূরণ করতে পারে না।

প্রকৃত কৃষককে সহজ শর্তে জামানত ছাড়াই ঋণ দেওয়া যায় বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।

রবিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আদর্শ প্রাণিসেবা লিমিটেড আয়োজিত 'প্রাণিসম্পদ খাতে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধিতে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব প্রযুক্তির ভূমিকা: আমাদের অবস্থান ও করণীয়' শীর্ষক সেমিনারে কৃষিমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউনিডো বাংলাদেশের ন্যাশনাল প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ডা. মো. আইনুল হক।

কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, 'সরকার কৃষিখাতে ৪% স্বল্প সুদে কৃষকদেরকে ঋণ দিচ্ছে। কিন্তু এ ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে বিদ্যমান কঠিন শর্ত অনেক সময়ই কৃষক পূরণ করতে পারে না। সেজন্য ঋণ দেয়ার পদ্ধতি আরও সহজ করতে হবে। শর্ত আরও সহজ করে কৃষককে জামানত ছাড়াই ঋণ দেওয়া যায়।'   

প্রাণিসম্পদে অবশ্যই বীমা প্রয়োজন উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, 'বর্তমানে একটি গাভীর দাম ৫-১০ লাখ টাকা। সেজন্য প্রাণিসম্পদে অবশ্যই বীমা হওয়া উচিত। তবে বীমা কোম্পানির উপর দেশের মানুষের বিশ্বাস নেই। তারা গ্রাহককে ব্যাপকভাবে হয়রানি ও প্রতারণা করে। এই হয়রানি ও প্রতারণা বন্ধ করে বীমাকে গ্রাহকবান্ধব করতে হবে।'   

ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, 'প্রাণিসম্পদ খাতের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে এদেশের মানুষকে পুষ্টিকর খাবার দেওয়ার। একদিকে খামারিকে কম দামে দুধ বিক্রি করতে হয়, অন্যদিকে আমরা প্রতি বছর দুধ আমদানির পেছনে দুই হাজার কোটি টাকা খরচ করছি।'  

মূল প্রবন্ধে বলা হয়, ঋণ প্রক্রিয়ার জটিলতা, ব্যাংকের অনীহা ও জামানত সংকটের কারণে প্রাণিসম্পদ খাতের ক্ষুদ্র খামারিরা ঋণ নিতে পারে না। গ্রামে ঋণ গ্রহণকারী ৭৫ শতাংশ কৃষক পরিবার ২০-৩০ শতাংশ সুদে এনজিও থেকে ঋণ নেয়। অথচ কৃষি সংশ্লিষ্ট শিল্পগুলোকে দেওয়া হচ্ছে কৃষি ঋণ। যে কারণে ২০২১-২২ অর্থবছরে কৃষিঋণ বিতরণের মাত্র ১৪ শতাংশ গেছে প্রাণিসম্পদ খাতে।   

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ডা. মো. আইনুল হক বলেন, প্রাণিসম্পদ খাতে অর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে বাধা হিসেবে কয়েকটি ফ্যাক্টর কাজ করে। সংক্রমিত রোগব্যাধি ও অন্যান্য ব্যবস্থাপনা ত্রুটির কারণে প্রাণির মৃত্যুঝুঁকি, বীমার প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা না থাকা, প্রাণির সনাক্তের সুবিধা না থাকার সমস্যাগুলো প্রকট।    

তবে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডাটাবেজ তৈরি, ফেইস ডিটেকশন সুবিধা, বীমা সুবিধার সম্প্রসারণ করে লাইভস্টক ডিপার্টমেন্ট সহযোগিতা করলে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং ও বীমা বিভাগের অধ্যাপক হাসিনা শেখ সহ অন্যান্য বক্তারা জানান, বড় খামারিদের জন্য ঋণ পাওয়ায় সমস্যা নেই। কিন্তু ক্ষুদ্র খামারিদের জন্য বিরাট সমস্যা। এজন্য ছোট খামারিদের একটা ডাটাবেজ ও পলিসি গঠনের সময় এসেছে, যেন তাদেরকে আর্থিক খাতের সঙ্গে যুক্ত করা যায়।    

 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.